স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল : হামলায় ‘অতি উৎসাহী’ কোন কর্মী জড়িত থাকলেই ব্যবস্থা

আগের সংবাদ

ফেনীর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে

পরের সংবাদ

বিচারকের মামলা : জামিন পেলেন পুলিশের দুই এসআই

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের, মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার অভিযোগে এক বিচারকের দায়ের করা মামলায় আত্মসমর্পণের পর জামিন পেয়েছেন পুলিশের দুই এসআই। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। আদালত শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭’র বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) ফেরদৌস আরা পুলিশের দুই এসআই আনোয়ার হোসেন ও সুবীর পালের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। একই দিনে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালত দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুল হাসান বলেন, আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন এসআই আনোয়ার হোসেন ও সুবীর পাল। আদালত শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দুইটি সোনার বার পাচারের অভিযোগে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার বাটারফ্লাই পার্ক থেকে মো. নাজমুল হাসান জুয়েল নামে এক শিশুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরের দিন ওই শিশুর বিরুদ্ধে এসআই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে সোনার বার পাচারের মামলা করেন। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান পতেঙ্গা থানার এসআই সুবীর পাল। তদন্ত শেষে শিশু নাজমুলকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ৩ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর শিশুটি নির্দোষ বলে রায় দেন আদালত। মামলাকে সত্য প্রমাণিত করতে এজাহারকারী তার দায়েরকৃত মামলার সমর্থনে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন। ডি.ডব্লিউ-২ কর্তৃক দেয়া সোনার বারের কাগজপত্র উপস্থাপন করা সত্ত্বেও তা আমলে না নিয়ে মামলা দায়ের করেন ওই পুলিশ সদস্য। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রাজস্ব অফিস হতে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ না করে মামলার বাদি পুলিশ কর্মকর্তাকে বাঁচানোর জন্য মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। প্রকৃত সত্য জানার পরও মিথ্যা প্রতিবেদনের স্বপক্ষে শপথ গ্রহণপূর্বক আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন তিনি। এ মামলায় শিশুটি সম্পূর্ণ নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও ২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল তারিখ থেকে ১ মাস ৬ দিন জেলহাজতে আটক থাকার পর একই বছর ২৮ মে জামিন পায়।
মামলা দায়ের প্রসঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭’র পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম বলেছিলেন, আদালতের দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে মিথ্যা মামলা, মিথ্যা চার্জশিট ও সাক্ষী দেয়ার বিষয়টি উঠে আসে। ফলে অভিযুক্ত পতেঙ্গা থানার দুই এসআই আনোয়ার হোসেন ও সুবীর পালের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মহানগর হাকিম আদালতে মামলার করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭’র বিচারক। মামলায় ফৌজধারি দণ্ডবিধির ৪৭৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। আদালত অঙ্গনে এটা একটি বিরল ঘটনা। মিথ্যা মামলা, সাক্ষী ও চার্জশিট দেয়ার মাধ্যমে বিচার অঙ্গনের ভাবর্মূতি ক্ষুণ্ন হয়েছে মনে করেই বিচারক আদালতের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়