কাগজ প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গণমাধ্যমে ভুল ও অসত্য তথ্য-উপাত্ত সরবরাহের দায়ে দণ্ডিত, তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রণীত কোনো বক্তব্য বা প্রতিবেদনই সঠিক হয় না।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে ‘মুজিববর্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, গ্রন্থকার সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম সবুজ ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে বাংলাদেশের গুম-খুন নিয়ে আলোচনার বিষয়ে ড. হাছান বলেন, কোনো বিশেষ সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন পাঠানোর পর যদি কোনো রিপোর্ট তৈরি হয়, তবে সেটি হচ্ছে ‘ফর ডিমান্ড’। আমরা দেখেছি, ‘অধিকার’ এবং আরো ক’টি প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সেখানে বিভিন্ন জন ‘কনসার্ন’ ব্যক্ত করেছেন। ‘বাস্তবতাটা হলো বাংলাদেশে যারা গুম হয়েছিল বলে ক’দিন আগে একটা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, তার মধ্যে ১০ জন ফেরত এসেছে, আর ২০ জন হত্যাসহ বিভিন্ন দাগি আসামি। তারা নিশ্চয় অনেকে পালিয়ে আছেন। আবার কিছু কিছু গুম হয়েছে তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, তালিকার মধ্যে তাদের নামও আছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, অধিকার নামের একটি সংগঠন হেফাজতের আন্দোলনের সময় শতশত হেফাজতকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল বলে অন্য দেশের ছবি দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আল জাজিরাসহ নানা গণমাধ্যমে সরবরাহ করেছিল। পরে তারা শত শত থেকে নেমে এসে বলেছিল ৬১ জন। কিন্তু কারো নাম বা পরিচয় দিতে পারেনি। এসব বানোয়াট তথ্যের কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, গ্রেপ্তারও হয়েছিল। সেই সংগঠনের দেয়া গুম-খুনের তথ্য-উপাত্তও ত্রæটিপূর্ণ। জাতিসংঘ কোন সূত্র থেকে তথ্য নিচ্ছে সেটিই হচ্ছে বড় বিষয়।
বিএনপির সমাবেশে বাধা প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কেউ বাধা দিক সেটি আমরা সমর্থন করি না। কিন্তু বিএনপি সারাদেশে নিজেরা নিজেরা মারামারি করে। রবিবার চট্টগ্রামে তারা নিজেরা চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে নিজেদের সমাবেশে গণ্ডগোল করেছে। কয়েক দিন আগে মিরপুরে আমাদের একটা মিছিলের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে। বনানীর ঘটনা তদন্তাধীন, তদন্তে বেরিয়ে এলে কী ঘটেছিল। কিন্তু বিএনপি যদি মানুষের ওপর হামলা চালায়, পুলিশের ওপর হামলা করে, সেক্ষেত্রে পুলিশ বা জনগণ কেউই বসে থাকতে পারে না।
মুজিববর্ষে সংসদে বিশেষ অধিবেশনের বক্তৃতাগুলো গ্রন্থাকারে প্রকাশে রফিকুল ইসলাম সবুজকে প্রেরণা দেয়ার জন্য প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স¤প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, গ্রন্থটি একটি ডকুমেন্ট হিসেবে ভবিষ্যতে রেফারেন্সের কাজ করবে। অনেক অজানা তথ্য অনেকেই জানবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখার জন্য জাতীয় সংসদে বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি এবং প্রায় ৮০ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখেছেন। সেই বক্তব্যগুলোকে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করার যে পদক্ষেপটি সাংবাদিক রফিকুল নিয়েছেন, আগামীতে চলার পথে তা বড় সংগ্রহ হয়ে থাকবে।