স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল : হামলায় ‘অতি উৎসাহী’ কোন কর্মী জড়িত থাকলেই ব্যবস্থা

আগের সংবাদ

ফেনীর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে

পরের সংবাদ

ছয় মাস ধরে লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ : কুমারখালীতে সড়ক কেটে ঠিকাদার উধাও!

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হাবীব চৌহান, কুমারখালী (কুষ্টিয়া) থেকে : কুমারখালীতে নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য পুরনো সেতুর দুপাশের সড়ক কেটে রেখে উধাও হয়েছে ঠিকাদার। পথচারী ও যানবাহন চলাচলের জন্য খালের ভেতর দিয়ে বিকল্প জরাজীর্ণ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে নেই কোনো দুর্ঘটনা প্রতিরোধক সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড। স্থানীয়দের অভিযোগ, এভাবে প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হলেও দেখা মেলেনি ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের।
সড়ক কেটে রাখায় পথচারী ও যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আর জরাজীর্ণ বিকল্প সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা এবং আহত হচ্ছেন পথচারীরা। সেই সঙ্গে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন ও মালামাল।
সরজমিন দেখা যায়, উপজেলার পান্টি-বাঁশগ্রাম বাজার সড়কের চাঁদপুর ইউনিয়নের মোহননগর পূর্বপাড়ায় তিনরাস্তা মোড় এলাকায় সড়ক কেটে রাখায় জনদুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পথচারীদের অভিযোগ, প্রায় ৬ মাস আগে নতুন সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে সেতুটির দুপাশের সড়ক কেটে রেখে উধাও হয়ে গেছে ঠিকাদার। চলাচলের জন্য খালের ভেতর দিয়ে জরাজীর্ণ বিকল্প সড়ক তৈরি করা হলেও সেই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ দুর্ঘটনাসহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। আর এই জনদুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। তবে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী বলছেন, কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কাজ বাতিলের জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার আমাদের না জানিয়ে রাতের আঁধারে সড়ক কেটে রেখে পালিয়েছে। সেখানকার জনদুর্ভোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।
সরজমিন দেখা যায়, সেতুর দক্ষিণ পাশের খালের ভেতর পাকা সড়ক থেকে অনেক নিচু ও জরাজীর্ণ বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। যানবাহন থেকে যাত্রীরা নেমে হেঁটে পারাপার হচ্ছে। আর যানবাহনগুলো স্থানীয়রা ও যাত্রীরা ঠেলে তুলে দিচ্ছেন। আর ভারী মালবাহী যানবাহনগুলো প্রায় দুই কিলোমিটার দুরের চাঁদপুর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর এলাকার সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পান্টি, চাঁদপুর ও বাগুলাট ইউনিয়নের প্রায় এক লাখ মানুষ এ রাস্তায় চলাচল করে। এছাড়া পাশের ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা ও মাগুরা জেলার মানুষ কুষ্টিয়া শহরে যাওয়া-আসা করে এ সড়ক দিয়ে। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ পান জেলার মিরপুরের ঠিকাদার রিপন আলী। নির্মাণকাজের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। দৃশ্যমান কাজ না থাকায় বাতিলের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষক তরুণ বিশ্বাস বলেন, ভালো সেতুর রাস্তা কেটে চলে গেছেন ঠিকাদার। ছয় মাসেও ঠিকাদারের দেখা মেলেনি। এজন্য জনগণের কষ্টের শেষ নেই। সেতুটির পাশের মুদি ব্যবসায়ী সজল বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিনই এখানে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। সে কারণে দোকান ফেলে বারবার ছুটে যেতে হয় গাড়ি ঠেলতে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। বাগুলাট ইউনিয়নের আদাবাড়িয়া গ্রামের ব্যবসায়ী রিপন আলী বলেন, মাল বোঝায় গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় না। আর রাতের আঁধারে মানুষ গাড়ি নিয়ে গর্তে পড়ে যায়। মাসের পর মাস ধরে চলছে এই দুর্ভোগ। কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। এ বিষয়ে ঠিকাদার রিপন আলীকে ফোন দেয়া হয়। কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান তুষার বলেন, সেতুর নামে খোঁজ নেই, রাস্তা কেটে রেখে ঠিকাদার উধাও হয়ে গেছে। জনগণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দরকার।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম বলেন, কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কাজ বাতিলের জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার আমাদের না জানিয়ে রাতের আঁধারে সড়ক কেটে পালিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে কাটা সড়ক সংস্কার করে পথচারী ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়