হাসপাতালে ভর্তি আরো ৩৮১ রোগী : ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন হওয়ার আহ্বান মন্ত্রীর

আগের সংবাদ

মহা আড়ম্বরে সমাহিত মহারানি

পরের সংবাদ

মুহিবুল্লাহ খুনের আসামি ‘আরসা নেতার মৃত্যু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার এক আসামি কারাবন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। মৌলভী জকোরিয়া নামে ওই আসামি রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রিপাবলিকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মৌলভী জকোরিয়া (৫৩) কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ (পশ্চিম) এ থাকতেন। মুহিবুল্লাকে হত্যার পর গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কক্সবাজার কারাগারে ছিলেন। অসুস্থার কারণে সপ্তাহখানেক আগে তাকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। গত শুক্রবার গভীর রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জকোরিয়ার মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মোহাম্মদ ইমরান বলেন, জকোরিয়া ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সপ্তাহখানেক আগে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। অসুস্থ হওয়ায় তাকে আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। গত শুক্রবার রাতে সেখানে মারা যান তিনি। এরপর আমরা আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লাশ হস্তান্তর করেছি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার ১-ইস্ট লম্বাশিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে (৪৮) গুলি চালিয়ে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। হত্যাকাণ্ডের পর মুহিবুল্লার ভাই হাবিবুল্লাহ অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। আরসার সদস্যরা তাকে হত্যা করেছে অভিযোগ করে মামলায় বলা হয়, খুনিদের ১৫ থেকে ২০ জনের দলের প্রত্যেকের মুখ মাস্ক এবং গামছায় ঢাকা ছিল।
নিহত মহিবুল্লাহ ছিলেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস নামের রোহিঙ্গাদের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার স্কুলশিক্ষক মুহিবুল্লাহ পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মুহিবুল্লাহ উখিয়ার ১-ইস্ট লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৭ ব্লকে থাকতেন। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় আসেন তিনি। জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থায়ও রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের পর ২০২২ সালের ১ এপ্রিল মুহিবুল্লাহর স্ত্রী নাসিমা খাতুন, ৯ ছেলেমেয়ে এবং এক মেয়ের জামাইসহ ১১ জন কানাডায় চলে যান। তাদের ‘রিফিউজি’ মর্যাদা দিয়ে কানাডায় আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ১৩ জুন মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় ২৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মৌলভী জকোরিয়া ছিলেন এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ১৪ নম্বর আসামি। আসামিদের মধ্যে ১৫ জন কারাগারে ছিলেন এবং বাকি ১৪ জন পলাতক। গ্রেপ্তার ১৫ জনের মধ্যে চারজন তদন্ত চলাকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন, যার মধ্যে মৌলভী জকোরিয়া একজন। গত ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়