মর্টার শেল নিক্ষেপ,: রোহিঙ্গা নিহত, আহত ছয়জন

আগের সংবাদ

মাঠে মারমুখী আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন : প্রীতম দাশের মুক্তি দাবিতে ৪৯ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সা¤প্রদায়িক উত্তেজনা জিইয়ে রাখতে সরকার পরিকল্পিতভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা রাষ্ট্র ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার প্রীতম দাশের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে তারা এই দাবি জানান। যারা বিবৃতি দিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন- অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, এডভোকেট তবারক হোসাইন, এডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী মো. নুর খান লিটন প্রমুখ। গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ কর্মীর ‘রাষ্ট্র ও ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা প্রীতম দাশকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে গত ২৭ আগস্ট রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন শ্রীমঙ্গলে সমাবেশ করলে সেখানে স্থানীয় ছাত্রলীগের একাংশ হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে ২৯ ও ৩০ আগস্ট শ্রীমঙ্গলে দুটি সংবাদ সম্মেলন করে ‘রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন’ হামলাকারীদের বিচার দাবি করে। প্রীতম দাশ সে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েছিলেন। ওই সংবাদ সম্মেলনের পরপর স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রীতম দাশের পুরনো ফেসবুক স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ভাইরাল করে তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনে। প্রীতম দাশের ফেসবুকে শেয়ার করা বিখ্যাত উর্দু সাহিত্যিক সাদাত হোসেন মান্টোর একটি উদ্ধৃতিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ছাত্রলীগ একটি সা¤প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। উল্লেখ্য, প্রীতমের আগে ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমানসহ অনেকেই এই উদ্ধৃতিটি প্রচার করেছেন। পরবর্তীতে স্থানীয় মসজিদসমূহের ইমাম এবং স্থানীয় সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সেই সা¤প্রদায়িক উত্তেজনা প্রতিরোধ করা গেলেও প্রীতম দাশকে নিরাপত্তা দেয়ার বদলে উল্টো তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিন্নমত ও আন্দোলন দমানোর জন্য সা¤প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং সেটা ভণ্ডুল হয়ে গেলে ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের মতো নিপীড়নমূলক আইনের মাধ্যমে হয়রানি করার এমন নগ্ন নজিরে আমরা উদ্বিগ্ন। প্রকাশ্য ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে গ্রেপ্তারকৃত প্রীতম দাশকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদনও জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, একদিকে রাষ্ট্র ভিন্নমত দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো চরম সমালোচিত এবং কুখ্যাত আইনকে ব্যবহার করছে, অন্যদিকে দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সমাজের ভেতর সা¤প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরিতে ক্ষমতাসীনরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। ক্ষমতাসীনদের এমন কর্মকাণ্ড সমাজে এক ভয়াবহ ফাটল ও অস্থিরতা তৈরি করছে বলে আমরা মনে করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে প্রীতম দাশসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহার এবং প্রীতম দাশকে রিমান্ডের মাধ্যমে অযথা হয়রানি-নির্যাতন না করা এবং অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নিপীড়নমূলক আইনগুলো বাতিল করে বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানান বিবৃতিদাতারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়