পল্টনে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য-হকার সংঘর্ষে আহত ৬

আগের সংবাদ

জোয়ারের পানিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি : কলাপাড়ার ৬০ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশই কাঁচা

পরের সংবাদ

নোয়াখালীতে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণ : নিম্নমানের সব সামগ্রী ফেরত সরবরাহকারীকে অব্যাহতি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। নি¤œমানের মালামাল ব্যবহারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে টনক নড়ে প্রশাসনের।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার চর দরবেশ গ্রামের ওই আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ঘর নির্মাণে ব্যবহৃত নি¤œমানের মালামাল ফেরতসহ সংশ্লিষ্ট কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে অব্যাহতি দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের চর দরবেশ গ্রামে ২ একর ৪৬ শতাংশ সরকারি খাস জমিতে প্রতিটি ঘরের সামনে ১০ ফুট, পাশে ৬ ফুট ও পেছনে ৮ ফুট জায়গা রেখে ৮০টি ঘর নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হয়। প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা হয় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। গত আগস্ট মাসে সরকারি ওই খাস জমিতে মাটি ভরাট শেষে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঘরগুলো নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহের দায়িত্ব দেয়া হয় হাজি নিজাম উদ্দিন নামের এক ঠিকাদারকে। ২০২৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে ঘরগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ঘর নির্মাণে নি¤œমানের মালামাল ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম করা হচ্ছে। এখানে জমিতে মাটি ভরাটের সঙ্গে সঙ্গে কাদা মাটির উপর গত সপ্তাহ থেকে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। ঘরগুলোতে যে ইট ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নি¤œমানের। ঢালাই ছাড়াই কাদা মাটির মধ্যে ঘরের ওয়ালগুলো তোলা হচ্ছে। ঠিকাদার হাজি নিজাম উদ্দিনকে নিন্মমানের ইট-বালু ব্যবহারে নিষেধ করা হলেও তিনি তা মানেননি। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। পরে নি¤œমানের ইট-বালুর ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওটিতে দেখা গেছে, ঘরগুলো নির্মাণে যে সামগ্রীই ব্যবহার করা হচ্ছে, তা একেবারই নি¤œমানের। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত মসলায় সিমেন্টের পরিমাণও অনেক কম। ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে কাদাময় মাটির মধ্যে। সব মিলিয়ে ঘর নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত সব মালামাল নিয়েই প্রশ্ন তোলেন স্থানীয়রা।
এদিকে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণের কাজে মালামাল সরবরাহ করে আসছেন হাজি নিজাম উদ্দিন নামের এই ব্যক্তি। এর আগেও কোম্পানীগঞ্জ, সেনবাগ ও কবিরহাটে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণে নি¤œমানের মালামাল সরবরাহের অভিযোগ ওঠে হাজি নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ওই ৮০টি ঘর নির্মাণের কাজ আমরাই তদারকি করছি। শুধুমাত্র মালামাল সরবরাহ করার জন্য হাজি নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গত কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ায় হাজি নিজাম উদ্দিন কথামতো ভালো মালামাল সরবরাহ না করে নি¤œমানের ইট-বালু সরবরাহ করে কাজ শুরু করেন। বিষয়টি দুঃখজনক। জানার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মালামাল সরবরাহের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে নি¤œমানের ইট-বালু ব্যবহারের বিষয়টি আমাদের নজরে আসায় গত বৃহস্পতিবার সরজমিন পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় নি¤œমানের সব মালামাল ফেরত দিয়ে মালামাল সরবরাহকারীকে এই কাজ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এখন সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মানসম্মতভাবে আমরা নিজেরাই ঘরগুলো তৈরি করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়