পল্টনে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য-হকার সংঘর্ষে আহত ৬

আগের সংবাদ

জোয়ারের পানিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি : কলাপাড়ার ৬০ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশই কাঁচা

পরের সংবাদ

টেনিসকে অবসরের ঘোষণা রজার ফেদেরারের

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক: চলতি মাসের শেষ দিকে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে লেভার কাপ। এই টুর্নামেন্ট দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক টেনিসকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন টেনিস তারকা রজার ফেদেরার। গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন ৪১ বছর বয়সি। ভিডিও ও লিখিত বার্তায় ২০টি গ্র্যান্ডস্লামজয়ী এই তারকা বলেছেন, আপনাদের অনেকেই জানেন, চোট ও অস্ত্রোপচারের কারণে তিন বছর ধরে আমি কতটা ভুগেছি। পূর্ণ শক্তিতে প্রতিযোগিতামূলক লড়াইয়ে ফিরতে আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। তবে আমি আমার শরীরের সামর্থ্য ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানি। তিনি যোগ করেন, এখন বার্তাটা আমার কাছে পরিষ্কার। আমার বয়স এখন ৪১ বছর। ২৪ বছরে আমি ১ হাজার ৫০০ এর বেশি ম্যাচ খেলেছি। টেনিস আমার প্রতি এত উদারতা দেখিয়েছে, যা আমি কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। এখন আমাকে প্রতিযোগিতামূলক টেনিসকে বিদায় বলার সময়টাও বুঝতে হবে।
ফেদেরার সবশেষ টেনিস মঞ্চে নেমেছিলেন ২০২১ সালের উইম্বলডনে। এরপর টেনিস খেলতে দেখা যায়নি তাকে। এ সময় তৃতীয়বারের মতো হাঁটুর অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছে তাকে। তবে বিদায়ের আগে আরেকবার টেনিসের প্রতিযোগিতামূলক মঞ্চে দেখা যাবে তাকে। সামনে লেবার কাপই হবে তার শেষ ইভেন্ট। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে লন্ডনে শুরু হতে যাওয়া লেবার কাপ আমার শেষ এটিপি ইভেন্ট। অবশ্যই ভবিষ্যতে আমি আরো টেনিস খেলব। তবে সেটা গ্র্যান্ডস্লাম কিংবা কোনো ট্যুরে নয়।
পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে পাশে থাকার জন্য পরিবারকে ধন্যবাদ জানান তিনি, আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার স্ত্রী মিরকাকে। যে প্রতিটি মুহূর্ত আমার সঙ্গে যাপন করেছে। ফাইনালের আগে সে আমাকে উজ্জীবিত করেছে। সে অগণিত ম্যাচ দেখেছে, এমনকি যখন সে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখনো। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে দলের সঙ্গে থেকে আমার পাগলামি সহ্য করেছে। আমাকে সমর্থনের জন্য আমি চার অপূর্ব সন্তানকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা নতুন একটি জায়গাকে আবিষ্কার করা এবং চলার পথে সুন্দর সব স্মৃতি তৈরিতে সব সময় উন্মুখ ছিল। আমাকে উৎসাহ দিতে নিজের পরিবারকে স্ট্যান্ডে দেখা এমন কিছু, যা সব সময় ভেতরে ধরে রাখব। আমি আমার ভালোবাসার মা-বাবা এবং স্নেহের বোনকেও ধন্যবাদ দিতে চাই এবং তাদের কথা বলতে চাই। তাদের ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব হতো না।
ফেদেরারের বিদায় নিয়ে এটিপি চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া গাউন্দেজি বলেছেন, টেনিসে ফেদেরার যে প্রভাব তৈরি করেছেন, তা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। পেশাদার টেনিসে ২৪ বছর পার করেছেন ফেদেরার, যার মধ্য দিয়ে টেনিসের লাখো ভক্ত তৈরি করেছেন তিনি। তিনি এই খেলার অবিশ্বাস্য একটি যুগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এর জনপ্রিয়তাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। খুব কম অ্যাথলেটই এটি করতে পেরেছেন। রজার আমাদের গর্বিত করেছেন। আরেক টেনিস তারকা রাফায়েল নাদাল কোর্টে ফেদেরার প্রতিদ্ব›দ্বী হলেও দুজনে ভালো বন্ধু। ফেদেরারের উদ্দেশে দেয়া এক বার্তায় নাদাল লিখেছেন, প্রিয় রজার, আমার বন্ধু ও প্রতিদ্ব›দ্বী। এ দিনটা যদি কখনো না আসত…ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য এবং বিশ্বজুড়ে থাকা এই খেলার মানুষের জন্য আজ বেদনার দিন।
যখন আমাদের কথা হয়েছিল, তখনো বলেছিলাম, এখনো বলছি। এতগুলো বছর তোমার সঙ্গে কাটানো, কোর্টে এবং কোর্টের বাইরে অসংখ্য অসাধারণ মুহূর্ত কাটানো আমার জন্য শুধু আনন্দের নয়, সম্মানেরও। টেনিসকে বিদায় বললেও তাদের বন্ধুত্ব থাকবে, মনে করিয়ে দিয়েছেন নাদাল, ভবিষ্যতে আরো অনেক মুহূর্ত একসঙ্গে কাটাব আমরা। এখনো অনেক কিছু করার বাকি, আমরা জানি।
ফেদেরার বিদায় শুধু টেনিস জগৎকে নয়, ছুঁয়ে গেছে ক্রীড়াঙ্গনকেই। ইনস্টাগ্রামের পোস্টে ফেদেরারকে নিয়ে স্তুতিমূলক একবার্তা দিয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। তিনটি বিশেষণ উল্লেখ করে লিখেছেন, একজন জিনিয়াস, টেনিস ইতিহাসে অনন্য, আর যে কোনো ক্রীড়াবিদের জন্য উদাহরণ। বাংলাদেশ দলের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম লিখেছেন, বিদায়, আমার নায়ক। কতটা অসাধারণ ক্রীড়াব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। সত্যিকারের ভদ্রলোক, আমাদের সবার জন্য দারুণ একজন আদর্শ। আপনাকে অনেক মিস করব। অবসর উপভোগ করুন। অন্যদিকে টেনিসের বড় ভক্ত শচীন টেন্ডুলকার ফেদেরারকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এভাবে, রজার ফেদেরার, কী একটা ক্যারিয়ার! আমরা তোমার ব্র্যান্ডের টেনিসের প্রেমে পড়েছিলাম। ধীরে ধীরে তোমার টেনিস অভ্যাস হয়ে গেল। আর অভ্যাস তো অবসরে যায় না, আমাদের অংশ হয়ে যায়।
১৯৯৮ সালে ১৬ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে অভিষেক হয় ফেদেরারের। ২০০৩ সালে উইম্বলডন দিয়ে নিজের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপাও জিতে নেন তিনি। ২০০৪ সালে প্রথমবারের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠেন ফেদেরার। টানা ৩১০ সপ্তাহ শীর্ষে অবস্থান করেন তিনি। ক্যারিয়ারে রেকর্ড আটবার উইম্বলডনের ছেলেদের এককের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন তিনি। ফেদেরার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতেন ছয়বার, ইউএস ওপেন পাঁচবার। ক্যারিয়ারে একবারই জেতেন ফ্রেঞ্চ ওপেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়