মিতু হত্যাকাণ্ড : আদালতে চার্জশিট দাখিল, শুনানি ১০ অক্টোবর

আগের সংবাদ

নতুন ৮ নদীর পানিবণ্টনে নজর : আলোচনায় সম্মত বাংলাদেশ ও ভারত, আগামী মার্চ এপ্রিলে ঢাকা সফরের সম্ভাবনা ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রীর

পরের সংবাদ

সংরক্ষণের দাবি স্থানীয়দের : দেশের সবচেয়ে ছোট মসজিদের বেহাল দশা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. শাহরিয়ার কবির আকন্দ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) থেকে : পলাশবাড়ী উপজেলার পলাশবাড়ী পৌরসভার দক্ষিণ বন্দর নুনিয়াগাড়ী গ্রামে সাতশ’ বছরের পুরাতন অলৌকিক এক গুম্বুজ বিশিষ্ট দেশের সবচেয়ে ছোট মসজিদ। বতর্মানে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। বেহাল দশায় কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মসজিদটি। ৬ ফুট দৈর্ঘ?্য ও প্রস্থের মসজিদটিতে ইমামসহ নামাজ পড়া যাবে পাঁচজন। স্থানীয়দের ধারণা এটি সাতশ’ বছর আগে এক রাতে হয়েছে।
পৌরসভার ছাইরুন নেছা পলি ক্লিনিকের সামনে এ মসজিদটির প্রাচীন স্থাপত্য, নকশা ও আরবি হরফ মুদ্রিত, চুন, সুরকি ও ইটের তৈরি পাঁচশ’ বছরের পুরোনো দেশের সবচেয়ে ছোট এক গুম্বুজ মসজিদ। ভেতর রয়েছে একটি মাত্র কক্ষ। একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন ইমামসহ পাঁচজন। বতর্মানে মসজিদের অবকাঠামো সামনে বিশাল আয়তনের তৈরি হয়েছে। যে কারণে এই ছোট জায়গাটায় আর নামাজ পড়া হয় না। ফলে এক গুম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদ ঘরটি আর সংস্কারের প্রয়োজন পড়েনি। মসজিদটির সাদা রঙ উঠে শ্যাওলা জমে কালচে হয়েছে। চার কোনায় থাকা চারটি পিলারের নান্দনিক কারুকার্য বতর্মানে বিলীন।
মসজিদটি ২০১৩ সালের ২ জুন সংরক্ষিত প্রতœতত্ত্ব সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। ফলে মসজিদটি রংপুর বিভাগের মধ্যে স্থাপত্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
বতর্মানে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। বেহাল দশায় কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ৬ ফুটের এ মসজিদটির নাম নিয়েও রয়েছে নানান কথা। স্থানীয় কেরামত উল্লাহ মণ্ডলের ছেলে কাদিরবক্স মণ্ডলের নামে মসজিদটি প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত হলেও এর নাম নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। এলাকাবাসী ও তার বংশধররা বলছেন, তিনি এটি নির্মাণ করেননি। এটি অলৌকিকভাবে এক রাতে তৈরি হয়েছে।
এ ব?্যাপারে ওই মসজিদ কমিটির সদস?্য ও জমি দানকারী মণ্ডল পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ সদস্য মজিদ মণ্ডল জানান, আমার দাদার মুখে শুনেছি মসজিদটিতে ইমামসহ পাঁচজন নামাজ আদায় করতেন। বাকিরা বাইরে চট বিছিয়ে নামাজ আদায় করতেন।
স্থানীয় আরেক প্রবীণ বাসিন্দা ভোলা মুন্সী (৮০) বলেন, ‘আমরা দাদাদের মুখ থেকে শুনেছি মসজিদটি এক রাতে হয়েছে। এই অঞ্চলে তখন কোনো মসজিদ ছিল না। এলাকাটিতে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মানুষের সংখ্যা বেশি ছিল। সকালে ওঠে দেখেন এখানে একটি মসজিদ ঘর। তখন থেকেই এলাকার মুসলমানরা এখানে নামাজ আদায় করে আসছিল। এলাকার অনেকেই বলেন, মসজিদটি এক রাতেই হয়েছে।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মণ্ডল পরিবারের সদস্য আব্দুল মতিন জানান, এটি সম্ভবত নবাব সুজা-উদ-দৌলার আমলের। বিভিন্ন সময় স্থানীয় ও সরকারিভাবে মসজিদটির ইতিহাস উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালানো হয়েছে। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক আব্দুর সবুর মসজিদটি পরিদর্শন করেন। এ নিয়ে ১০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তারা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের মাস্তা এলাকার প্রাচীন লাল মসজিদ ও দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুর এলাকার সৌর মসজিদ দেখে ধারণা করেন, এটি নবাব সুজা-উদ-দৌলার আমলে নির্মিত। নবাবের আমলে নির্মিত মসজিদ দুটির স্থাপত্য শৈলীর কিছুটা ছাপ পাওয়া যায় পলাশবাড়ীর প্রাচীন এ মসজিদের।
মসজিদ কমিটির সভাপতি প্রবীণ ব্যক্তি রেজানুর রহমান ডিপটি বলেন, মসজিদটি সংরক্ষণের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের প্রতœতত্ত্ব বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়। ২০১৩ সালের ২ জুন মসজিদটি সংরক্ষিত প্রতœতাত্ত্বিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ফলে এটি রংপুর বিভাগের মধ্যে প্রাচীন স্থাপত্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পযর্ন্ত সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়