মিতু হত্যাকাণ্ড : আদালতে চার্জশিট দাখিল, শুনানি ১০ অক্টোবর

আগের সংবাদ

নতুন ৮ নদীর পানিবণ্টনে নজর : আলোচনায় সম্মত বাংলাদেশ ও ভারত, আগামী মার্চ এপ্রিলে ঢাকা সফরের সম্ভাবনা ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রীর

পরের সংবাদ

শি-পুতিন বৈঠক : রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চীন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, চীনের ‘এক চীন’ নীতিকে সমর্থন করে রাশিয়া। তিনি আরো বলেছেন, তাইওয়ান প্রণালিতে যুক্তরাষ্ট্রের উসকানির বিরোধিতা করে তার দেশ। উজবেকিস্তানের সমরখন্দে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাইডলাইন বৈঠকে পুতিন এ কথা বলেন। এ সময় ইউক্রেন ইস্যুতে চীনের ‘ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান’কে রাশিয়া গুরুত্বসহকারে দেখছে বলে শিকে বলেন পুতিন। আল জাজিরা।
রুদ্ধদ্বার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে এক সংক্ষিপ্ত মন্তব্যে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, চীন ও রাশিয়া একসঙ্গে মহাশক্তি হিসেবে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে কাজ করতে পারে। পুতিনকে ‘প্রিয় ও পুরনো বন্ধু’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেছেন, মহাশক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চীন। সামাজিক অস্থিরতায় ঢেকে যাওয়া বিশ্বে স্থিতিশীলতা ও ইতিবাচক প্রচেষ্টার জন্য পথপ্রদর্শক ভূমিকা পালন করতেও আগ্রহী।
পশ্চিমা বিশ্বের বাইরে একটি ‘বিকল্প বিশ্ব ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে উজবেকিস্তানের সমরখন্দ শহরে গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) এর দুদিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলন। এবারের সম্মেলনের সবার নজর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে।
একদিকে, শি তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে ইতিহাস সৃষ্টি করতে চান। অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে পুতিনের সম্পর্ক এখন একেবারে তলানিতে। এছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে শাস্তি দিতে পশ্চিমাদের উপায় খোঁজার এই সময়ে শি জিনপিং এবং ভøাদিমির পুতিন তাদের এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতাও প্রকাশ করলেন।
মহামারি শুরুর পর এই প্রথম শি জিনপিং বিদেশ সফর করছেন। গত বুধবার কাজাখস্তান সফরের মধ্যে দিয়ে শি তার ৩ দিনের সফর শুরু করেন। এদিন তিনি দেশটির রাজধানী নুর-সুলতানের নজরবায়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে ‘সোনালি ঈগল পদক’ দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানান কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসেম জোমার্ট টোকায়েভ। উল্লেখ্য, চীন ও কাজাখস্তান তাদের কূটনীতিক সম্পর্কের ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।
পুতিন নিজেও খুব একটা বিদেশ সফর করছেন না। রুশ সেনারা ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর পর তিনি জুলাই মাসে তার দ্বিতীয় বিদেশ সফরে যান তুরস্ক ও ইরানে। পুতিন এবং শির আসন্ন বৈঠকটি এ বছর দুই নেতার মধ্যে দ্বিতীয় কোনো বৈঠক। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের সময় দুজনের মধ্যে দেখা হয়। তখন দুই নেতা এক যৌথ ইশতেহারে বলেছিলেন, তাদের দুই দেশের বন্ধুত্বের ‘কোনো সীমা’ নেই।
শি ২০১৩ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ৩৮ বার পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসার পর শি এখনো তার সঙ্গে দেখা করেননি। সা¤প্রতিক দিনগুলোতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে, বিশেষ করে স্বশাসিত তাইওয়ান ইস্যুতে। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ডের অংশ বলেই দাবি করে।

মুখোমুখি হচ্ছেন মোদী-শি!
লাদাখে ২০২০ সালের সেই প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষের পর আজ শুক্রবার প্রথম মুখোমুখি হতে চলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এসসিও সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গেও মোদী দেখা করবেন। সম্মেলনে যোগ দিতে গতকালই তিনি উজবেকিস্তানের উদ্দেশে রওনা হন।
এক বিবৃতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে আমি সমসাময়িক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়, এসসিওর স¤প্রসারণ, সংস্থার বহুমুখীকরণ ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরো নিবিড় করা নিয়ে মতো বিনিময়ের অপেক্ষায় আছি।’ সম্মেলনে বাণিজ্য, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও পর্যটনের বিষয়েও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থার পর প্রত্যন্ত পশ্চিম হিমালয়ে চীন-ভারত সীমান্তের একটি বিতর্কিত এলাকা থেকে এ সপ্তাহেই দুদেশের সেনারা নিজ নিজ চৌকিতে ফিরে গেছে। ওই অচলাবস্থার পর থেকে এতদিন মোদী ও শি একে অন্যের সঙ্গে কথা বলেননি। সীমান্ত থেকে সেনাদের পিছু হটার পরই এবার উজবেকিস্তানে মুখোমুখি হচ্ছেন ভারত ও চীনের এই দুই সরকার প্রধান।
এসসিও সম্মেলনে ভারতের অবস্থান বাকি সবার থেকে আলাদা। কারণ দেশটি একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা জোট ‘কোয়াড’-এর সদস্য। কোয়াডের সদস্য হলেও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার প্রতি নিন্দা জানাতে রাজি হয়নি ভারত। একইসঙ্গে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মস্কো থেকে জ্বালানি তেল কেনা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে দেশটি।

পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ পাচ্ছে ইরান
ন্যাটোর মতো পশ্চিমা সামরিক জোটের প্রভাব সীমিত করার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এসসিওর জন্ম হয়েছে বলেই মনে করা হয়। মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বাণিজ্য প্রসারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সার্বিক সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ২০০১ সালে চীন, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান মিলে প্রতিষ্ঠা করে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)। এরপর ২০১৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান এসসিওতে যোগ দেয়। এবার ইরানকে পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ দেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ জানা গেছে- ইরান এসসিওতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হওয়ার জন্য প্রতিশ্রæতি স্মারক স্বাক্ষর করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান এ কথা জানান। এরমধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলার পথ খুঁজছে ইরান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়