মিতু হত্যাকাণ্ড : আদালতে চার্জশিট দাখিল, শুনানি ১০ অক্টোবর

আগের সংবাদ

নতুন ৮ নদীর পানিবণ্টনে নজর : আলোচনায় সম্মত বাংলাদেশ ও ভারত, আগামী মার্চ এপ্রিলে ঢাকা সফরের সম্ভাবনা ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রীর

পরের সংবাদ

প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি : প্রজ্ঞাপনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা বদলির প্রজ্ঞাপনে একাংশের শিক্ষকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন পর বদলি প্রক্রিয়া চালু হলেও নীতিমালার ফাঁকফোকরে অনেকেই আবেদন করতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম অনলাইন করার জন্য প্রায় তিন বছর বন্ধ ছিল বদলি। দীর্ঘ কার্যক্রম সম্পাদন করার পর গতকাল বৃহস্পতিবার অনলাইনে বদলি কার্যক্রম চালু করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে শিক্ষকদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি আসলেও বদলি নীতিমালায় যে স্কুলে চারজন বা তার কম শিক্ষক রয়েছেন সে সব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বদলি হতে পারবেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করা অনেক শিক্ষক বিপাকে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক জহর তরফদার বলেন, তিন বছরের অধিক সময় ধরে কর্মরত শিক্ষকদের তাদের পছন্দমতো স্থানে বদলি হওয়ার অধিকার রয়েছে। অনলাইনে বদলি হওয়ার প্রজ্ঞাপন এমনভাবে করা হয়েছে, এতে যেসব বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক রয়েছেন তারা আবেদন করতে পারবেন না।
তিনি জানান, এক্ষেত্রে প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে বদলি হওয়ার বিধান সংযুক্ত করলেই এই সংকট দূর হয়ে যাবে। তিনি সব শিক্ষককে সমতা দানে এটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল হরিণছড়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আপিয়া আক্তার লাকী জানান, তিনি ১০ বছর ধরে ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। তার বিদ্যালয়ে শুরু থেকেই চারজন শিক্ষক রয়েছেন। এবার বদলি চালু হলে তার আসার কথা ছিল পছন্দের স্কুলে। কিন্তু বদলি নীতিমালায় পাঁচজন শিক্ষক থাকায় তিনি আবেদন করতে পারবেন না। শ্রীমঙ্গল নিরালা পুঞ্জির শিক্ষিকা রূপালী আক্তার ও কনিকা দত্ত বলেন, আমরা অনেকদিন ধরে বদলির অপেক্ষা করছি। এখন এমন প্রজ্ঞাপন দেখে হতবাক।
মৌলভীবাজার জেলার আরো অন্তত ৩০-৪০ জন শিক্ষকের একই বক্তব্য। শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কোমলমতি শিশুদের মানবিক বিকাশে কাজ করছি। আজ আমরাই অবহেলিত। আমাদের নায্য অধিকার থেকে আমরা কেন বঞ্চিত হবো। শ্রীমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রনবেশ চৌধুরী অন্তু বলেন, এ প্রজ্ঞাপনে কিছু শিক্ষকের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে বদলি চালু রাখলেই এ সমস্যার সমাধান অনেকাংশে কমে যাবে।
সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সিলেট বিভাগীয় নেতা অজিৎ পাল বলেন, পাঁচজন শিক্ষক নেই যে স্কুলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে এটা বিমাতাসুলভ আচরণ। তিনি বলেন, ১৫-২০ বছর ধরে অনেকে অপেক্ষা করছেন তাদের বাড়ির পাশের বিদ্যালয়ে আসবেন। সেই স্কুলগুলোতে শূন্যপদও হয়েছে। এখন না আসতে পারলে আর বাড়ির পাশের স্কুলে অনেকেরই আসা হবে না।
তিনি বলেন, অনলাইন বদলি নীতিমালায় প্রতিস্থাপন এবং নিয়োগ সাপেক্ষে বদলি হওয়ার সুযোগ রাখলেই হাজার হাজার শিক্ষকের বদলি সুবিধা নিশ্চিত হতো।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মো. আব্দুস শহীদ বলেন, সমতার ভিত্তিতে বদলি হলে কারো মনে কষ্ট থাকবে না। যে সমস্যা দেখা দিয়েছে তাতে প্রতিস্থাপনের সুযোগ দিলেই সমাধান হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি নিয়ে এ সংক্রান্ত যে কমিটি রয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়