মিতু হত্যাকাণ্ড : আদালতে চার্জশিট দাখিল, শুনানি ১০ অক্টোবর

আগের সংবাদ

নতুন ৮ নদীর পানিবণ্টনে নজর : আলোচনায় সম্মত বাংলাদেশ ও ভারত, আগামী মার্চ এপ্রিলে ঢাকা সফরের সম্ভাবনা ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রীর

পরের সংবাদ

ইউরোপের বাজারে বেড়েছে পোশাক রপ্তানি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মরিয়ম সেজুঁতি : ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক খাত দাপুটে অবস্থানে রয়েছে। পোশাকের এ বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছে। বাজারটিতে পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধির দিক থেকেও বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এই বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ। একই সময়ে অপ্রচলিত বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণে রেকর্ড মূল্যস্ফীতির কবলে বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রধান রপ্তানি গন্তব্যের দেশগুলো। এর মধ্যেই এ অগ্রগতি হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য দেশভিত্তিক রপ্তানির পরিসংখ্যান সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। রপ্তানি বাড়লেও ক্রয়াদেশ কমতে থাকায় আশঙ্কা প্রকাশ করছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সার্বিক বিষয়ে সংগঠনটির পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ভোরের কাগজকে বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসে রপ্তানি বেড়েছে, এটা ভালো খবর। কিন্তু বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি খুচরা ব্যবসাকে প্রভাবিত করছে। এ কারণে আগামী মাস থেকে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। কারণ বেশ কয়েকটি গেøাবাল ব্র্যান্ড বিক্রয় এবং অবিক্রীত স্টক হ্রাসে ভুগছে, তাই তারা এখন অর্ডার এবং উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে। তাই শিল্পটি সামনে আরেকটি অশান্তির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
ইপিবির তথ্য মতে, জুলাই-আগস্ট এ দুই মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২৩ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে ৩ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ইউরোপের বাজারে মধ্যে জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। স্পেনের বাজারে ২৪ দশমিক ৫২ শতাংশ। সর্বোচ্চ বেড়েছে ফ্রান্সের বাজারে, ৩৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এছাড়াও ইইউর অন্যান্য দেশেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
ইউরোপের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত দুই মাসে ১ দশমিক ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা যুক্তরাজ্যে পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। কানাডায় আরএমজি পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। একই সময়ে অপ্রচলিত বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। অর্থাৎ ১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারের পৌঁছেছে। অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে জাপানে রপ্তানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ৮১ শতাংশ আর ভারতে রপ্তানি বেড়েছে ৯৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে এ সময়ে রাশিয়া ও চীনে রপ্তানি কমেছে যথাক্রমে ৫৮ দশমিক ২৯ এবং ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ।
এর আগে আগস্ট মাসের শুরুতে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল এন্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) তথ্য প্রকাশ করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৮৮ কোটি ৭৯ লাখ ৮ হাজার ডলার। যা শতাংশের হিসাবে ৬০ দশমিক ৩০ শতাংশ। ডেটা অনুসারে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৫০১ কোটি ৯০ লাখ ৭ হাজার ডলারের। ২০২১ সালের একই সময়ে পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৩১৩ কোটি ১০ লাখ ৯ হাজার ডলারের। সে হিসাবে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালের একই সময়ে পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৮৮ কোটি ৭৯ লাখ ৮ হাজার ডলারের।
ইপিবি তথ্যমতে, প্রথমবারের মতো একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় ২০২১-২২ অর্থবছরে। এর মধ্যে ৯ বিলিয়ন ডলারই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আগামীতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে, কারণ চলতি মাস থেকে প্রায় প্রতিটি ক্রেতাই অর্ডার স্থগিত করছেন।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমার কারখানা অর্ডারে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু, বিশ্ব অর্থনীতি গতি হারানোর ফলে আগস্টের প্রায় ৪০ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরের ৩০ শতাংশ অর্ডার স্থগিত হয়ে গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়