২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু : হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৩

আগের সংবাদ

সমান সুযোগের রূপরেখা নেই : ইসির রোডম্যাপ

পরের সংবাদ

রাজনীতিবিদ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন আর নেই

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক সময়ের আলোচিত চরিত্র বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন আর নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। মৃত্যুকালে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী ২০০৯ সালে মারা যান। শাহ মোয়াজ্জেমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
শাহ মোয়াজ্জেমের জন্ম ১৯৩৯ সালের ১০ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের দোগাছি গ্রামে। পাকিস্তান আমলে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি তার। ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাসের পর আইএ পাস করেন ঢাকা কলেজ থেকে। পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তখন ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন শাহ মোয়াজ্জেম। ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ১৯৫৮ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন, পরে সভাপতিও নির্বাচিত হন। তখন অনেকবারই জেল খাটতে হয়েছিল তাকে।
ছাত্রজীবন শেষে শাহ মোয়াজ্জেম আওয়ামী লীগেই মনোনিবেশ করেন। স্বাধীনতার পর প্রথম সংসদে তাকে চিফ হুইপ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের যে ক’জন শপথ নিয়েছিলেন তাদের একজন শাহ মোয়াজ্জেম। পরে সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের সঙ্গে ভেড়েন শাহ মোয়াজ্জেম, তার সরকারে উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি, জাতীয় পার্টির মহাসচিবও করা হয়েছিল তাকে।
১৯৯২ সালে শাহ মোয়াজ্জেমকে জাতীয় পার্টি থেকে এরশাদ বহিঙ্কার করলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি বিএনপিতে থাকলেও রাজনীতিতে তার আগের মতো গুরুত্ব আর দেখা যায়নি।
প্রখ্যাত ছাত্রনেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব ও সামনের সারিতে ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয়

পার্টিতে সক্রিয় ছিলেন। নৌকা, ধানের শীষ, লাঙ্গল, সব প্রতীকে শুধু ভোটই করেননি তিনি, প্রায় সব দলের সরকারে মন্ত্রীও ছিলেন।
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন শেষ দিকে এসে বিএনপির নেতৃত্ব ও দলটির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে মুখর ছিলেন। তিনি দলটির স্থায়ী কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় একাধিকবার সমালোচনাও করেছেন দলের। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরশাদ সরকারের সময়ে তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
রাজনীতির পাশাপাশি লেখালেখিও করতেন শাহ মোয়াজ্জেম। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- ‘নিত্য কারাগারে’, ‘বলেছি বলছি বলব’, ‘ছাব্বিশ সেল’, ‘জেল হত্যা মামলা’।
শায়রুল কবির খান জানান, জানাজার বিষয়ে দল এবং পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হলে জানানো হবে। ছেলে আমেরিকায় আছেন, তাকে মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়েছে। সর্বশেষ গত সোমবার হাসপাতালে অসুস্থ কাদের সিদ্দিকীকে দেখতে গিয়েছিলেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়