গাজীপুরের পানি বিষাক্ত : শিল্পায়নের মূল্য দিচ্ছে স্থানীয়রা

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : যথাসময়ে নির্বাচন হবে

পরের সংবাদ

গবেষণা প্রকাশ : এসএমই খাতের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে দুর্নীতি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশে একটি প্রাণবন্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) শিল্প রয়েছে, যেটিকে পণ্য ও পরিসেবার ৩৩টি উপখাতে বিভক্ত করা যেতে পারে। ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশের এসএমই খাত মোট এন্টারপ্রাইজের একটি ক্ষুদ্র শতাংশকে প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুর্নীতি এসএমই খাতকে বাধাগ্রস্ত করছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, এসএমই ৫০ দশমিক ৯১ শতাংশ অর্থনীতিতে অবদান রাখে। জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান ছিল ৪৮ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং মোট মূল্য সংযোজনের ৪৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
বাংলাদেশের এসএমই খাতের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস), সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এন্টারপ্রাইজ (সিআইপিই) এর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে স¤প্রতি একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। গবেষণার মূল ফলাফলগুলো সিজিএস এবং সিআইপিই এর ওয়েবসাইটে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে ১০টি জাতীয় ও আঞ্চলিক ব্যাবসায়িক সংগঠনের ১৫২টি প্রকাশনার বিভিন্ন প্রতিবেদন বিশ্লেষণের পাশাপাশি ১৫টি বাণিজ্য সংস্থার নেতাকর্মী, ব্যবসায়িক সহায়তা সংস্থা, শিক্ষাবিদ এবং বিশেষজ্ঞাদের দেয়া সাক্ষাৎকার থেকে তথ্য সংগৃহীত করা হয়েছে। সাক্ষাৎকারে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর নেতারা স্বীকার করেছেন, দুর্নীতি বাংলাদেশে এসএমই খাতের বিকাশে একটি বড় সমস্যা। দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মের অভাব রয়েছে। গবেষণায়, জাতীয় এবং আঞ্চলিক ব্যাবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রকাশিত প্রকাশনাগুলোতে নথিভুক্ত দুর্নীতিবিরোধী কার্যকলাপের অভাবও পাওয়া গেছে। মূল্যায়ন প্রতিবেদনের প্রাপ্ত তথ্যবলী, সিজিএস দ্বারা পূর্বে পরিচালিত দুটি বড় পরিসরে সমীক্ষায় পরিবার এবং এসএমই খাতের ওপর দুর্নীতির প্রভাবের প্রাপ্ত ফলাফলগুলোকে সমর্থন করে।
গবেষণার অংশ হিসেবে, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা বড় আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর মধ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেই সঙ্গে একাডেমিশিয়ান এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা যারা এসএমই এবং দুর্নীতির সমস্যা নিয়ে কাজ করেন। তথ্যদাতারা সর্বসম্মতিক্রমে এসএমই খাতে ব্যাপক দুর্নীতির কথা ব্যক্ত করেন এবং বেসরকারি এবং সরকারি উভয়ের উদ্যোগের ঘাটতির কথা স্বীকার করেন। অনেকে সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে বলেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা দুর্নীতির মূলোৎপাটনে সামান্য ভূমিকা রাখতে পারে, কারণ মূলত শাসনব্যবস্থার মৌলিক ত্রæটির ফলে এই ধরনের সমস্যাগুলো বেড়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি আঞ্চলিক ব্যাবসায়িক সংগঠনের নেতা বলেন, সরকার যদি প্রথমে এগিয়ে না আসে এবং এই সমস্যা মোকাবিলা না করে, তাহলে পরিস্থিতি পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। তিনি আরো বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, আমরা আমাদের দেশে সুশীল সমাজকে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে এবং কাজ করতে দেখি না। অন্য একজন উত্তরদাতার মতে, যিনি আবার একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি- সুশীল সমাজ। নিজেরাই রাজনীতিকরণে জড়িয়ে পড়েছে, এর ফলে এ দলগত সম্পর্কগুলো এ ধরনের উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করে।
এসএমই এবং অন্য বিভিন্ন অঙ্গনের মধ্যে পারস্পারিক যোগসাজশ এই প্রচলিত দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য অপরিহার্য বলে গুরুত্ব দেন তারা। এ গবেষণার জন্য সাক্ষাৎকার দেয়া একজন বিশেষজ্ঞ উল্লেখ করেন, ব্যাংকগুলো প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্যবসায়িক সম্মতিপত্র জাল করার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাত করে। অন্য একজন উত্তরদাতার মতে, পাবলিক কন্ট্রারিং ক্ষেত্রেও এ ধরনের যোগসাজশ ঘটে। পরেরটিকে দুর্নীতি মোকাবিলার একটি পদ্ধতি এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তারা পরামর্শ দেন, চাহিদা এবং সরবরাহ উভয় দিকেই দুর্নীতির উপস্থিতি দুর্নীতির একটি চক্র তৈরি করে। একটি আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সংগঠন নেতা বলেন, যখন আমরা প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য ঘুষ দেই, তখন আমরা পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে ঘুষের সংস্কৃতি তৈরি করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়