গাজীপুরের পানি বিষাক্ত : শিল্পায়নের মূল্য দিচ্ছে স্থানীয়রা

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : যথাসময়ে নির্বাচন হবে

পরের সংবাদ

ঈশ্বরদীতে পাঠদান ব্যাহত : ৩২ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোস্তাক আহমেদ কিরণ, ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে : ঈশ্বরদী উপজেলায় ১০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৯ শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়েও রয়েছে জনবল সংকট। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে হিসাব সহকারী ১টি, উচ্চমান সহকারী ১টি ও ১টি অফিস সহায়কসহ ৩টি পদ রয়েছে। পদগুলো দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। শূন্য পদ নিয়ে ধীরগতিতে শতাধিক স্কুলের কার্যক্রম সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৯ হাজার। ৭৪৬টি পদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে ৬৮৭ জন। ১০০ জন প্রধান শিক্ষক ও ৬৪৬ জন সহকারী শিক্ষক পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৫৯টি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে ৩২টি স্কুলের। আর সহকারী শিক্ষক পদে শূন্য রয়েছে ২৭টি স্কুল।
বেশির ভাগ স্কুলেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করছেন। পদগুলো পূরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি বাড়তি চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা। ব্যাহত হচ্ছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে শিক্ষকদের অবসরে যাওয়া ও গত কয়েক বছরে নিয়োগ না হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। চলতি বছরের শেষের দিকে আরো কিছু শিক্ষক অবসরে যাবেন। এতে সংকট আরো বাড়বে বলে জানান একাধিক শিক্ষক।
একজন শিক্ষককে দিয়ে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করানোর নিয়ম। কিন্তু সরজমিন দেখা যায়, দাশুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে ৪৪৮ জন শিক্ষার্থী। ৪৪৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক অনুমোদন রয়েছে ১১ জন। ফলে পঞ্চম শ্রেণিতে ৫৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন একজন শিক্ষক। চরগড়গড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একসঙ্গে ১০৮ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে হচ্ছে। শিক্ষক সংকট বা পদ অনুমোদনের অভাবে এভাবেই ঈশ্বরদীতে একজন শিক্ষককে পাঠদান করাতে হচ্ছে দ্বিগুণ শিক্ষার্থী। ফলে শিক্ষককে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ঈশ্বরদীর কদিমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মৌসুমী খাতুন জানান, ৫৬ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক ৩ জন। তিনি নিজেই প্রশাসনিক কাজসহ পাঠদান করাচ্ছেন।
দাশুড়িয়া ইউনিয়নের জোবেদা খাতুন সাবান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. গোলাম হায়দার বিশ্বাস বলেন, প্রায় ‘৩ বছর ধরে প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য রয়েছে। বিদ্যালয়ে ৫টি শিক্ষকের স্থলে আমরা ৩ জন শিক্ষক শিক্ষাদান করছি। কোনো শিক্ষক ছুটি কিংবা অফিসের কাজে গেলে শিক্ষার্থীকে পাঠদানে বাকিদের হিমশিম পড়তে হয়।’
রূপপুর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিম বলেন, তার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬৯ জন। প্রধান শিক্ষকসহ সাত পদের বিপরীতে দায়িত্ব পালন করছেন ৫ জন শিক্ষক। শিক্ষক সংকটের কারণে দুই শিফটে পাঠদান করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রশাসনিক কাজ সময়মতো করা যায় না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দীন বলেন, ‘উপজেলায় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের অনেক পদ দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে। তবে অচিরেই বদলি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা পূরণ হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদের তালিকা করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়