মাদক দিয়ে ফাঁসানো পুলিশসহ তিনজন কারাগারে

আগের সংবাদ

বাণিজ্যিক জাগরণের সম্ভাবনা > উত্তর-পূর্বের দুয়ার খুলছে : কানেক্টিভিটিতে গুরুত্ব বাংলাদেশ ও ভারতের

পরের সংবাদ

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয় ইংল্যান্ডের

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে ইংল্যান্ড। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচ ইনিংস ও ১২ রানে জিতে প্রোটিয়ারা। দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়ায় ইংলিশরা, ম্যাচ জিতে নেয় ইনিংস ও ৮৫ রানে। এ ম্যাচ খেলতে নামার আগে বিরাজ করে ১-১ করে সমতা। ফলে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি পরিণত হয় অঘোষিত ফাইনালে। এ ম্যাচ ৯ উইকেটে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে শাসন করা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুশোক পালন করছে ব্রিটিশরা। এরই মধ্যে ১০ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও। থমকে গেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলাসহ সব ধরনের ক্রীড়া ইভেন্ট। তবে প্রয়াত রানির সম্মানে একদিন স্থগিত থাকার পর বাইশ গজে খেলতে নামে স্টোকস-রুটরা। এর আগে ওভালে তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিন যায় বৃষ্টির পেটে। ফলে পাঁচদিনের টেস্ট নেমে আসে তিন দিনে। এই টেস্টে ফল পাওয়ার আশাও ছিল সামান্য। তবে দারুণ নৈপুণ্যে তিন দিনের খেলাতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় আদায় করে নেয় ইংল্যান্ড।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওলি রবিনসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডের বোলিংয়ের কোনো জবাবই যেন ছিল না প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের। ইংলিশ পেসারদের তোপে মাত্র ১১৮ রানে গুটিয়ে যায় ডিন এলগারের দল। রবিনসন নেন ৫ উইকেট, ৪ উইকেট নেন ব্রড। প্রোটিয়াদের হয়ে মার্কো ইয়ানসেন করেন সর্বোচ্চ ৩০ রান। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডেরও। অলি পোপের ৬৭ রান ছাড়া আর কেউই ফিফটির দেখা পাননি। তারা প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ১৫৮ রানে। প্রোটিয়াদের হয়ে মার্কো ইয়ানসেন নেন ৫ উইকেট এবং ৪ উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা। এরপরে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৯ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাতে স্বাগতিকদের সামনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ১৩০ রান।
এই রান তাড়া করতে নেমে বিনা উইকেটে ৯৭ রান তুলে দিন শেষ করে ইংল্যান্ড। আলেক্স লিস ৩২ ও জ্যাক ক্রাউলি ৫৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। গতকাল স্থানীয় সময় তৃতীয় দিন সকালে ১০৮ রানের মাথায় আউট হন লিস। ৪ চারে ৩৯ রান করেন তিনি। এরপর ক্রাউলি ও অলি পোপ মিলে ২২.৩ ওভারে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ক্রাউলি ১২ চারে ৬৯ রানে ও পোপ ১ চারে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন। তৃতীয় দিন খেলা শুরুর পর উইকেট পড়ে ১৭টি। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দুই ওপেনারই জয়ের ভিত গড়ে দেন ইংলিশদের। ৯৭ রানে চতুর্থদিন শেষ করার পর নিশ্চিত হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার হার। গতকাল পঞ্চম দিনে কেবল জয়ের আনুষ্ঠানিকতাটুকুই সেরেছে ইংলিশরা। শেষ দিনে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩৩ রান। ৫.৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংলিশরা। ইংল্যান্ডের এ জয়ে বড় অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন অলিভার রবিনসন। প্রথম ইনিংসে প্রতিপক্ষকে ১১৮ রানে গুটিয়ে দেয়ার পথে এই পেসার নেন ৪৯ রানে ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়াদের ১৬৯ রানে থামানোর পথে তার শিকার ৪০ রানে দুটি। আর ব্যাট হাতে ১৪৯ রান ও বল হাতে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হন অধিনায়ক বেন স্টোকস।
এর মধ্য দিয়ে ইংল্যান্ড তাদের নতুন কোচ ব্রেন্ডান ম্যাককালাম ও নতুন অধিনায়ক স্টোকসের নেতৃত্বে খেলা সর্বশেষ সাত টেস্টের ছয়টিই জিতল। তার আগে জো রুটের নেতৃত্বে ১৭ টেস্টের মাত্র ১টিতে জিতেছিল ইংলিশরা। অন্যদিকে এই সিরিজ হারার মধ্য দিয়ে নতুন অধিনায়ক ডিন এলগারের সময়ে প্রথমবার সিরিজ হাতছাড়া করলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংল্যান্ডে শত বছরের ছোট্ট ম্যাচের তকমা পেয়ে গেছে এই টেস্ট।
এ ম্যাচটি শেষ হয়েছে ৯০৯ বলে। ইংল্যান্ডে গত ১১০ বছরে যা সংক্ষিপ্ততম টেস্ট। এর চেয়ে কম বলে শেষ হওয়া টেস্ট হয়েছিল ১৯১২ সালে, এই মাঠেই ৮১৫ বলের টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকেই ১০ উইকেটে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের মাটিতে বলের দিক থেকে সংক্ষিপ্ততম টেস্ট ৭৮৮ বলের। ১৮৮৮ সালে ম্যানচেস্টারে অস্ট্রেলিয়াকে ওই ম্যাচে ইনিংস ও ১২ রানে হারিয়েছিল স্বাগতিকরা। আর সব দেশ মিলিয়ে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত কমপ্লিট টেস্ট ৬৫৬ বলের। সেখানেও পরাজিত দলের নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৩২ সালে মেলবোর্নে তাদের বিপক্ষে ইনিংস ও ৭২ রানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়