মাদক দিয়ে ফাঁসানো পুলিশসহ তিনজন কারাগারে

আগের সংবাদ

বাণিজ্যিক জাগরণের সম্ভাবনা > উত্তর-পূর্বের দুয়ার খুলছে : কানেক্টিভিটিতে গুরুত্ব বাংলাদেশ ও ভারতের

পরের সংবাদ

এক সময়ের খরস্রোতা কাজলী নদী এখন মরা খাল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়ার ভেতরে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে কালের সাক্ষী কাজলী নদীটি। নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে আদি জনবসতি। আগে এখানকার মানুষ নদীটিকে আশীর্বাদ মনে করতেন। বর্তমানে এটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বিষের ভাণ্ডারে পরিণত হচ্ছে। নদীর তীরে গড়ে উঠেছে আনোয়ার সিমেন্ট শিট ও ম্যানস ফি পেপার মিলস নামে দুটি ভারী শিল্পকারখানা। এই শিল্পকারখানার তরল ও অপচনশীল বর্জ্য পড়ছে কাজলী নদীতে।
বর্তমানে কারখানার ময়লা পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। এক সময় নদীটি ছিল গভীর ও খর¯্রােতা। দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তর নৌ-যোগাযোগ পথ ছিল এ নদীটি। পণ্য পরিবহনে নদীটির গুরুত্ব ছিল খুবই বেশি। তাছাড়া পণ্যসামগ্রী পরিবহনে একমাত্র নৌপথ এই কাজলী নদী। আনোয়ার সিমেন্ট শিট ও ম্যানস ফি পেপার মিলসের বর্জ্য নদী ও আশপাশে জমে ভরাট হয়ে থাকায় বর্তমানে নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
নদীতে জোয়ার-ভাটা কখন হয় সেই অপেক্ষায় থাকেন কল-কারখানার মালিকরা। জোয়ার এলেই মিলের বর্জ্য ফেলা হয়। আনোয়ার সিমেন্ট শিট মিলসের ময়লা নির্গত হলে নদীর পানি সাদা এবং ম্যানস ফি পেপার মিলসের ময়লা নির্গত হলে নদীর পানি কালো কুচকুচে রঙ ধারণ করে। ৫/৬ বছর আগে নদীর পানি ব্যবহার করা গেলেও এখন তা করা যায় না। এ ব্যাপারে মিলস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েকবার চেষ্টা করলেও সাক্ষাৎ করা যায়নি। শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সরকারের নীতিমালা অমান্য করে এসব শিল্প বর্জ্য অপরিশোধিতভাবে সরাসরি ফেলার কারণে ইতোমধ্যেই পানি মারাত্মক দূষিত হয়ে পড়েছে।
পূর্ব নয়াকান্দি গ্রামের গোপাল বর্মন, মতিলাল, হরিপদ ও হারুন খাঁ বলেন, আমাদের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে প্রত্যক্ষ আশীর্বাদ হিসেবে জড়িয়ে রয়েছে নদী। আজ জীবন ও জীবিকার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পানি দূষণের ফলে নদীতে মৎস্য প্রজনন বিপন্ন হয়ে গেছে। কৃষিকাজে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী জমিগুলোর উর্বরতা হ্রাস পেয়ে ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
এদিকে এলাকার মানুষের জীবন ও জীবিকার তাগিদে কাজলী নদীর দূষণ, দখলমুক্তকরণ ও নদী খনন জরুরি। একই গ্রামের বাসিন্দা রুহিদাস বর্মন বলেন, এলাকাবাসী বাউশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে মাধ্যম করে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করে। এছাড়া সদয় অবগতির জন্য গজারিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার সিমেন্ট শিট লিমিটেড, ম্যানজ ফি পেপার মিলস লিমিটিডে ও নিউহোপ এগ্রোটেক লিমিটেডকে অনুলিপি দিই। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বর্জ্য নদীতে না ফেলতে জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে জানার জন্য শিল্প-কারখানায় দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কথা বলতে নারাজ এবং ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ের দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যান তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়