খন্দকার মোশাররফ : বিএনপিকে নির্যাতন করে দমিয়ে রাখা যাবে না

আগের সংবাদ

দুই সংকটে তৈরি পোশাক খাত : সংকট কাটলে ৮ বছরে পোশাক খাতে রপ্তানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারের আশা

পরের সংবাদ

১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ : ‘ক্যাসিনো দেলু’র বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়ার জাকের প্লাজা, সিটি প্লাজা ও নগর প্লাজার সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন ওরফে ‘ক্যাসিনো দেলু’র ১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে ওই তিন মার্কেটে ১৬টি দোকান, পাচার করা অর্থে মালয়েশিয়ায় বাড়ি ও প্রিতম-জামান টাওয়ারে ১৫ তলায় মেয়ের নামে সাড়ে ৮ হাজার বর্গফুটের একটি বাণিজ্যিক স্পেস।
অনুসন্ধানে এসব অবৈধ সম্পদের হদিস পাওয়ায় দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী বাদী হয়ে গতকাল রবিবার সমন্বিত জেলা কার্যালয়-ঢাকা-১ এ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি দেলোয়ার হোসেন গত ২৭ অক্টোবরে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তার নিজ নামে মোট ৬ কোটি ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭০ টাকার স্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন। কিন্তু সম্পদ যাচাইয়ে তার নিজ নামে ও বেনামে মোট ৯ কোটি ৬৫ লাখ ১ হাজার ২২৫ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ যাচাইয়ের সময় ৩ কোটি ৪ লাখ ৭১ হাজার ৩৬৪ টাকার স্থাবর সম্পদ গোপনের তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে নিজ নামে ১ কোটি ১৯ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেছেন দেলোয়ার হোসেন। অনুসন্ধানে তার নামে-বেনামে মোট ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়। এছাড়া আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, তার আয়কর নথিতে গৃহ সম্পত্তির আয়, লিমিটেড কোম্পানির বেতন, অন্যান্য উৎসের আয়ের পাশাপাশি লিমিটেড কোম্পানির ব্যবসার আয়ও ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেছেন। যদিও লিমিটেড কোম্পানির ব্যবসার আয় বা দায়-দেনা ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করতে পারেন না।
ব্যক্তি শুধু লিমিটেড কোম্পানির সম্মানী নিতে পারেন, যা ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করা যায়। অনুসন্ধানে দেলোয়ার হোসেনের নথি পর্যালোচনায় মাত্র ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ টাকার গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ এবং পারিবারিক আয় হিসাবে ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯৬৭ টাকা যোগ করলে তার নামে মোট স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় ১১ কোটি ৫৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮১ টাকা। যেখান থেকে গ্রহণযোগ্য ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ টাকা আয় বাদ দিলে মোট ১১ কোটি ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। এ কারণে দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ও ২৬(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে দেলোয়ার হোসেন দেলুর হাত ধরে দেশে অনলাইন ক্যাসিনোর যাত্রা শুরু হয়। বিদেশ থেকে অনলাইন ক্যাসিনোর সরঞ্জাম আমদানি করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন রাজধানীর পল্টন এলাকার প্রিতম-জামান টাওয়ারের ১৩ ও ১৪ তলায়।
ক্যাসিনো পরিচালনার জন্য লোকও আনা হয় নেপাল থেকে। ২০১৯ সালের শুদ্ধি অভিযানের সময় তিনি মূলত আলোচনায় আসেন। তার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দোকান দখল করার অভিযোগ রয়েছে। তিনটি মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলুর বিরুদ্ধে ২০২১ সালে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভুক্তভোগী ১৫৮ ব্যবসায়ী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়