খন্দকার মোশাররফ : বিএনপিকে নির্যাতন করে দমিয়ে রাখা যাবে না

আগের সংবাদ

দুই সংকটে তৈরি পোশাক খাত : সংকট কাটলে ৮ বছরে পোশাক খাতে রপ্তানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারের আশা

পরের সংবাদ

সার সংকটে কৃষক : সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কৃষক যেন সময়মতো প্রয়োজন অনুযায়ী সার সংগ্রহ করতে পারেন সেজন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও বাজারে ইউরিয়া সারের সংকট দেখা দিয়েছে। সার ও ডিজেলের বাড়তি ব্যয়ের কারণে উৎপাদন খরচ তোলাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষকদের জন্য। সারের দাম বৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন তারা। সরকারের পক্ষ থেকে সারের সংকট নেই দাবি করা হলেও বাস্তবতা হচ্ছে ইউরিয়া সারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকদের এমন হয়রানির শিকার হওয়া মোটেও কাম্য নয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমনিতেই কৃষকরা হিমশিম খাচ্ছেন। ধারদেনা করে কৃষিকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধিতে জমি তৈরি এবং সেচের খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। তার ওপর ইউরিয়া সারের মূল্যবৃদ্ধি চিন্তার কারণ। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ার সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে। আরো বেড়ে যাবে খাদ্যপণ্যের দাম, যাতে নষ্ট হবে দেশের অর্থনীতির ভারসাম্য। কষ্ট পাবে সাধারণ জনগণ, খেটে খাওয়া মানুষ। আমরা অতীতেও দেখেছি একটি মহলের কারসাজিতেই কৃত্রিম সার সংকট তৈরি হয়। এবারো এর ব্যতিক্রম নয়। কৃষকরা সার ঠিকমতো না পেলে চাষাবাদ কীভাবে করবেন? জেলায় জেলায় গুদামে সার পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে ঠিকাদারদের অনিয়ম, সার মজুত রেখে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অসাধু ডিলাররা অতিরিক্ত মূল্য আদায় করে আসছে। সরকারের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এদের কারণে চাষিরা সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন সময় অভিযোগ এলেও মূল অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনতে পারা খুবই দুঃখজনক। এতে বারবার এই দুষ্টচক্রের ফাঁদে আটকা পড়ছে দেশের কৃষি খাত। ক্ষেত-খামারে সঠিক সময়ে ও পরিমাণমতো ইউরিয়া সার দিতে না পারলে ভালো ফসল ওঠানো যাবে না। অনাবৃষ্টির কারণে এমনিতেই আমন চাষ পিছিয়েছে। বর্তমানে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ইউরিয়া সারের প্রয়োজন। কিন্তু বাজারে ঘুরে ঘুরে কৃষকরা সার না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, সন্দেহ নেই। অসাধু সার ব্যবসায়ী ও ডিলারদের অপতৎপরতা ঠেকাতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। দেশের মানুষের মুখে যারা খাবার তুলে দেন, অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন সেই প্রান্তিক চাষিদের ভোগান্তি কোনোভাবেই মানা যায় না। অবিলম্বে এ সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের কাছে ন্যায্যমূল্যে প্রয়োজনীয় সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে উৎপাদন কমার কারণে চরম খাদ্য ঘাটতিতে পড়বে দেশ। এখনই কৃষকদের দুর্ভোগ কমাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হলে অনেক কৃষক আগামীতে ধান আবাদে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। কাজেই সার সংকটের সমাধানে মজুত বাড়ানোর পাশাপাশি এর ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা কাটানোর জন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়