খন্দকার মোশাররফ : বিএনপিকে নির্যাতন করে দমিয়ে রাখা যাবে না

আগের সংবাদ

দুই সংকটে তৈরি পোশাক খাত : সংকট কাটলে ৮ বছরে পোশাক খাতে রপ্তানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারের আশা

পরের সংবাদ

দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে কাজ : মমেক হবে ‘গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড’

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রুহুল আমীন খান, ময়মনসিংহ থেকে : অধিকসংখ্যক রোগীকে বেডে রেখে অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে, রোগীদের বিদেশমুখীতা ঠেকাতে, মেডিকেল ও নার্সিং শিক্ষার মান উন্নয়নে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে (মমেক) ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, মমেকের বর্তমান জমিতেই ঐতিহ্যবাহী ভবন ও স্থান অক্ষুণ্ন রেখে আনুমানিক ২১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। নতুনভাবে তৈরি এ হাসপাতালের অবকাঠামোগুলো ২০২৪ সালের মধ্যে উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ আহসান জানান, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প হিসেবে উন্নয়ন কাজ চলছে। এতে প্রায় ২১৬ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭ তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে কাজ শুরু হয়ে এখন ফাউন্ডেশনের কাজ চলমান আছে। এই ভবনে ক্যানসার, কিডনি ও কার্ডিওলজি চিকিৎসা দেয়া হবে। এতে ক্যানসার রোগীদের জন্য ১৮০ শয্যা, কার্ডিওলজির জন্য ১১৫ শয্যা এবং কিডনি রোগীদের জন্য থাকবে ১৬৫ শয্যা। এছাড়া প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হয়েছে ১০ তলা ভিত বিশিষ্ট পাঁচতলা ভবনের। এতে ২৪০ শয্যা নিয়ে চালু হবে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের কার্যক্রম।অপরদিকে রোগীদের সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঁচতলা ভবনে হবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে এই ভবন নির্মাণ কাজ।
রাশেদ আহসান বলেন, ‘কাজ শুরু করেছি, আশা করছি আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এর মধ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভবন আগামী জুনের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে। তবে বার্ন ইউনিটের কাজ শেষ করতে আরো দেড় বছর লেগে যেতে পারে। যদিও কাজের সময় রয়েছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।
জানা যায়, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রায় আড়াই কোটি মানুষের সরকারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল এই হাসপাতালটি ১৯৬২ সালে ৮৩ একর জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে তিনশত শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করা এই হাসপাতালটিতে বর্তমানে শয্যা সংখ্যা এক হাজার। বর্তমানে হাসপাতালের ৩৭টি ওয়ার্ডের ৩৭টি বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশসেরা স্বীকৃতি অর্জন করেছে এই হাসপাতালটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৪০০ থেকে ২৫০০ রোগী চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন ৩০০০ হতে ৪০০০ রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করছে। এদের প্রত্যেককে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে সরকারি ওষুধ। তবে এতোকিছুর পরো জনবল সংকট কাটছে না হাসপাতালের। ফলে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত জনবলের কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হাসপাতালের উপপরিচালক ডাক্তার ওয়েজউদ্দীন ফরাজী জানান, ভবনগুলো নির্মাণ হলে নতুন ডিপার্টমেন্ট চালু করা হবে। এমবিবিএস, এফসিপিএস এর যেসব কার্যক্রম চলতো সেসব চলবে। এর বাইরে এখানে পিএইচডি গবেষণার ব্যবস্থাও থাকবে। স্বল্প ব্যয়ে পাওয়া যাবে উন্নত সেবা।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া জানান, মমেক হাসপাতাল একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা, তাই ঐতিহাসিক অংশটুকু অক্ষুণ্ন রেখে নতুন ভবনের কাজ চলছে। হাসপাতালের আইটি সিস্টেম সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করা হবে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে একটি ‘গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড’ হাসপাতালে উন্নীত করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়