খন্দকার মোশাররফ : বিএনপিকে নির্যাতন করে দমিয়ে রাখা যাবে না

আগের সংবাদ

দুই সংকটে তৈরি পোশাক খাত : সংকট কাটলে ৮ বছরে পোশাক খাতে রপ্তানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারের আশা

পরের সংবাদ

অধ্যাপক বদরুল ইমাম, ভূতত্ত্ববিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ : জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কয়লা উত্তোলন করতে হবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ভূতত্ত্ববিদ ও জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেছেন, কয়লার অনুসন্ধান, ব্যবহার ও উত্তোলন নিয়ে বিরোধিতা রয়েছে। তবে আমি বলবো, কয়লা নিয়ে সরকারের গুরুত্বসহকারে ভেবে দেখার সময় হয়েছে। আগামীতে জ¦ালানি সংকট মোকাবিলা করতে হলে অবশ্যই দেশীয় কয়লা উত্তোলন ও ব্যবহার করতে হবে। পরিবেশ ও মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মতো ভূগর্ভস্থ খনন পদ্বতিতে কয়লা উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে। গতকাল রবিবার ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, মাটির নিচে কয়লা সম্পদ রেখে লাভ নেই, এটা ব্যবহারেই বেশি লাভ। দেশীয় খনির কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর জন্য বড় ধরনের অবদান রাখতে পারে। বড়পুকুরিয়া থেকে কয়লা উঠছে। এখন ফুলবাড়ী ও দীঘিপাড়ার খনি থেকে কয়লা উঠানোর সুযোগ রয়েছে। এটা ব্যবহার করতে পারলে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি উৎপাদন খরচ অনেক কমে যাবে। ভালো খবর হচ্ছে, সরকারও কয়লার ওপর জোর দিয়েছে। আমাদের দেশে কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট ছিল না; কিন্তু এখন বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে। এজন্য আমাদের প্রায় ৪ গুণ চড়া দামে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করতে হচ্ছে। ৭০ ডলারের কয়লা এখন সাড়ে ৩০০ ডলারে পৌঁছেছে। বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা ৪/৫ বছরের মধ্যে শেষ হবে। তখন সেখানের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালিয়ে রাখা কঠিন হবে। এই অবস্থায় যেহেতু আমাদের ভালোমানের কয়লার খনি আছে, তাই সেখান থেকে উত্তোলনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, জার্মানি আবার কয়লায় ফিরে গেছে। ভারত ও চীন কয়লা উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। বিগত কয়েক বছরে সারাবিশ্বে কয়লার ব্যবহার ৫ শতাংশ বেড়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। ৫ বছর আগে কয়লা উত্তোলনের ব্যবস্থা নেয়া হলে, এখন যে ৫টি কয়লাভিত্তিক নতুন প্রকল্প আসছে সেগুলোতে দেশীয় কয়লা ব্যবহার করা যেত। এখান থেকে পায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। তাই এখন জোরালো উদ্যোগ নেয়া হলে ৪/৫ বছর পর সুফল পাওয়া যাবে- এই সময়টা আমরা পিছিয়ে গেলাম।
ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে না হোক ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে বড়পুকুরিয়ার খনির মতো কয়লা উঠাতে হবে। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উঠালে বছরে ৪ থেকে ৬ মিলিয়ন টন কয়লা উঠানো সম্ভব। তবে এতে মানুষ, জীবন, প্রকৃতি-পরিবেশ, কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটবে- এটা মেনে নেয়া যায় না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই পদ্ধতির ঘোর বিরোধী। এক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কয়লা উঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। রংপুর-দিনাজপুরের খনিগুলোতে ৩০০ থেকে ৪০০ মিটার গভীরে কয়লা রয়েছে। সেগুলো আগে উঠাতে হবে। বড়পুকুরিয়ার খনি থেকে বছরে ১ মিলিয়ন টন উঠানো হয়েছে। নতুন সবগুলো মিলিয়ে এটা যদি আমরা দ্বিগুণ করতে পারি তাহলে আমদানি থেকে শুরু করে বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত নিতে অনেক সাশ্রয় হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়