একদিনে ২৭৮ করোনা রোগী শনাক্ত

আগের সংবাদ

দেশীয় কয়লা উত্তোলনে গুরুত্ব : বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নীতি ও পরিবেশ, বিশ্বে কয়লার ব্যবহার বেড়েছে

পরের সংবাদ

সার সংকটে বিপাকে কৃষক : দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সারের দাম বাড়ায় ও কৃত্রিম সংকট তৈরি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ক্ষেতে খামারে সঠিক সময়ে ও পরিমাণমত ইউরিয়া সার প্রয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে এমনিতেই আমন চাষ পিছিয়েছে। বর্তমানে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ইউরিয়া সারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। কিন্তু বাজারে সার পাওয়া যাচ্ছে না। জমিতে সার দিতে না পারলে ফসল ভালো না হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এমন পরিস্থিতিতে সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের অভিযোগ ডিলারদের বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সারের সংকট নেই দাবি করা হলেও বাস্তবতা হচ্ছে ইউরিয়া সারের দাবিতে দেশের বিভিন্নস্থানে কৃষকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সারের দাম বাড়ায় চাষাবাদে কৃষকের কষ্ট বাড়বে। উৎপাদন খরচ বাড়বে, খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে, যা কৃষকের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে কৃষকরা হিমশিম খাচ্ছেন। ধারদেনা করে কৃষিকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনিতেই বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে জমি তৈরি এবং সেচের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার ওপর সারের দাম বাড়ানোর ফলে কৃষকদের কপালে দুশ্চিন্তায় ছাপ পড়েছে। ইউরিয়ার মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বাড়বে, ব্যাহত হবে খাদ্য উৎপাদন। সেই সঙ্গে বেড়ে যাবে খাদ্যপণ্যের দাম।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খানের মতে, ইউরিয়া সারের মূল্যবৃদ্ধিতে উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকরা খরচ বাঁচাতে জমিতে সার ব্যবহার কমিয়ে দেবেন। একই সঙ্গে অন্য সারও কমিয়ে দেবেন। ফলে উৎপাদন কমে যাবে। উৎপাদন কমার কারণে খাদ্য ঘাটতিতে পড়তে পারে দেশ।
এদিকে সারের দাবিতে রংপুরের পীরগঞ্জে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। গতকাল শনিবার রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পীরগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ করেন তারা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় কয়েক শ কৃষক উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এতে মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে অবরোধ প্রত্যাহার করেন কৃষকরা।
গত ৭ সেপ্টেম্বর সারের দাবিতে জামালপুর সদর উপজেলার তুলশীরচর ইউনিয়নের গাড়ামারা গ্রামের রাস্তায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন কৃষকরা। এতে অংশ নেয়ায় জামালপুর সদর উপজেলার তুলশীরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমানকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে জামালপুর সদর উপজেলার নান্দিনায় সার না পেয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা। তাদের অভিযোগ ৭ দিন ধরে দোকানে দোকানে ঘুরে সার পাচ্ছেন না তারা। সার না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শত শত কৃষক। পরে জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করেন। কৃষকদের অভিযোগ, গত ৭ দিন ধরে ডিলারদের কাছে সার নিতে এসেও সার পাচ্ছেন না। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা না আসলে সার দেয়া হবে না বলে টালবাহানা করছে। বাইরে থেকে চড়ামূল্যে সার কিনতে হচ্ছে তাদের। নান্দিনা বাজারে বিসিআইসির ডিলার মেসার্স শাহজাহান এন্ড ব্রাদার্স থেকে সার বিক্রি করার কথা। নান্দিনা এলাকার প্রান্তিক কৃষক রবিউল, আনছার আলী ও কবীর উদ্দিনসহ অনেকের অভিযোগ ডিলাররা তাদের বন্ধু বান্ধব ও স্বজনদের মাধ্যমে রাতের আঁধারে সার অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে কুমিল্লার দেবিদ্বারের সুবিল ইউনিয়নের ওয়াহেদপুর বাজারে সার ডিলার শাহ আলমের দোকানের সামনে সারের দাবিতে কৃষকরা মিছিল করেন। সার নিতে আসা বাজারের ব্যাগ ও এলুমিনিয়ামের বল, টুকরিসহ সার বহনের নানা সামগ্রী নিয়ে কয়েকশ কৃষক বিক্ষোভ করেন। এছাড়া চাহিদা অনুযায়ী সারের দাবিতে গত সপ্তাহে বগুড়ার-ধুনট বাইপাস সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়