একদিনে ২৭৮ করোনা রোগী শনাক্ত

আগের সংবাদ

দেশীয় কয়লা উত্তোলনে গুরুত্ব : বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নীতি ও পরিবেশ, বিশ্বে কয়লার ব্যবহার বেড়েছে

পরের সংবাদ

বন্ধ সিলেট-ছাতক রেলপথ : অরক্ষিত কোটি কোটি টাকার সম্পদ, গেটম্যানের দুর্নীতি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শংকর দত্ত, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে : ছাতক-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল না করায় পুরো পথটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। করোনার দোহাই দিয়ে ২০২০ সালের ২৩ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে ৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রেলপথে ট্রেন চলাচল। চলতি বছরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে বন্ধ এ রেলপথটির আরো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানির প্রবল স্রোতে অনেক স্থানে রেলপথ সরে গেছে। রেল লাইনের নিচ থেকে রাস্তার পাশে স্তূপ হয়ে আছে কোটি কোটি টাকার পাথর। বন্যার পানি কমে গেলেও এখনো সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও অরক্ষিত এ রেললাইনটির পাশে সরকারি জায়গায় দোকান নির্মাণ করে ভাড়া, বালুর স্তূপ ও গাছ ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, আফজলাবাদ রেলস্টেশন থেকে ছাতকবাজার পর্যন্ত রেল লাইনের অবস্থা নাজুক। গোবিন্দগঞ্জ রেল গেইটের পাশে রেলের সরকারি জায়গা দখল করে অনেকগুলো দোকান নির্মিত হয়েছে। তিনটি দোকান ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে সাড়ে ৯ হাজার টাকা পকেট ভরছেন আশরাফুল ইসলাম নামে এখানের গেইটম্যান। গত ২ সেপ্টেম্বর রেল গেইট সংলগ্ন ৩৯৮/৩ থেকে ৪ সীমানায় রেলের সরকারি জায়গায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের পাঁচটি অর্জুন গাছ কাটা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, গোবিন্দগঞ্জ রেলওয়ের গেইটম্যান আশরাফুল ইসলামের যোগসাজশে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর লিজকৃত জায়গার সম্মুখে সরকারি পাঁচটি গাছ কাটা হয়েছে। ইতোমধ্যে কাটা তিনটি গাছ রাতের আঁধারে সরিয়ে নিলেও অর্ধেক কাটা অবস্থায় ঝুলে আছে আরো বড় দুটি অর্জুন গাছ। আলামত ঢাকতে কাটা গাছের গোড়ায় বালু ফেলা হচ্ছে। এসব গাছের পাশ দিয়ে বিদ্যমান রয়েছে পিডিবির বিদ্যুৎ লাইন। ঝড় বা বাতাসে গাছগুলো যে কোনো সময় পড়ে গিয়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এতে ঝুঁকিতে আছেন স্থানীয় আম্বিয়া মার্কেট ও সেলিম বেডিং এর একাধিক ব্যবসায়ী।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, কলোনিতে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের আওতায় আনার জন্য তালিকা তৈরি করছে কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ রেল গেইটম্যান আশরাফুল ইসলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে রেলের খালি জায়গায় দুটি দোকান তৈরি করে ভাড়া দেয়া হয়েছে। কিন্তু অপর চায়ের দোকান থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা নেয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। রেলের জায়গা থেকে পাঁচটি গাছ কাটার বিষয়ে তার সম্পৃক্ততা নেই বলে অস্বীকার করেন ওই গেইটম্যান। ভাড়াকৃত তিনটি দোকানের ব্যবসায়ীরা জানান, রেলের গেইটম্যান আশরাফুল প্রতি মাসে ভাড়ার টাকা নেন। দুই দোকান থেকে প্রতি মাসে সাত হাজার ও একটি দোকান থেকে মাসে আড়াই হাজার টাকা নেন। এছাড়া দুই দোকান থেকে অগ্রিম ২৫ হাজার টাকা নিয়েছেন ওই গেইটম্যান আশরাফুল।
রেলের জায়গা লিজ নিয়েছেন উল্লেখ করে এখানের মা মনি স্টোরের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জানান, শ্রমিক দিয়ে গাছগুলো কাটিয়েছেন তিনি। কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে গাছগুলো কাটা হলো কেন এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তিনি। রেল বিভাগের সিলেটের পূর্বাঞ্চলের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, টেন্ডার ছাড়া সরকারি জায়গার গাছ কাটার কোনো বৈধতা নেই। গেইটম্যান দিয়ে দোকান তৈরি করে ভাড়া নিচ্ছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তা অস্বীকার করেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি তদন্তের জন্য লোক পাঠাব। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে আমায় রিপোর্ট করার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়