একদিনে ২৭৮ করোনা রোগী শনাক্ত

আগের সংবাদ

দেশীয় কয়লা উত্তোলনে গুরুত্ব : বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নীতি ও পরিবেশ, বিশ্বে কয়লার ব্যবহার বেড়েছে

পরের সংবাদ

নারী সাফ ফুটবল : পাকিস্তানের জালে সাবিনাদের গোল উৎসব

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গতকাল কাঠমন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। আগের ম্যাচে মালদ্বীপকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টানা দুই ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। গতকাল পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দেয়ার ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অপর ৩টি গোল করেন মনিকা চাকমা, সিরাত জাহান স্বপ্না ও ঋতুপর্ণা চাকমা। পাকিস্তানের বিপক্ষে গোল উৎসবের ম্যাচে সাবিনা হ্যাটট্রিক করার মধ্য দিয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। এর আগে ২০১৬ সাফে শিলিগুড়িতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬-০ গোলের জয়ে ৫ গোলই করেন বাংলাদেশের এই ‘গোলমেশিন’। সাফে এ পর্যন্ত ১৯ গোল করেছেন সাবিনা খাতুন। পরপর দুই ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গতকালই প্রথম মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। প্রথম সাক্ষাতেই সাবিনা-স্বপ্নারা বুঝিয়ে দিয়েছেন দুই দেশের নারী ফুটবলের শক্তি পার্থক্য। আট বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরা পাকিস্তানের বিপক্ষে অবশ্য জয়টা অনুমিতই ছিল। তবে ব্যবধান কত হবে, সেটাই ছিল দেখার বিষয়, যদিও পাকিস্তান দলে ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের নারী লিগে খেলা মারিয়া খান, সৈয়দা মাফারা ও জুলফিয়া নাজির। ম্যাচে দু’একবার অবশ্য বাংলাদেশের রক্ষণে ঢুকে আতঙ্ক ছড়িয়েছিলেন মারিয়া, জুলফিয়া। কিন্তু গোল হয়নি। পাকিস্তান দলের বেশ কয়েকজন ফুটবলার বয়সে এগিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে। কিন্তু সাবিনা, সানজিদাদের অভিজ্ঞতা আর গতিময় ফুটবলের কাছে পেরে ওঠেনি পাকিস্তান। মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি সাবিনা খাতুন। গতকাল সেই আক্ষেপ দূর করেছেন তিনি। ১৩ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারতের। ভারত প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়েছে ৩-০ গোলে। গতকাল বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান হেরেছে দ্বিগুণ ব্যবধানে। ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের কোচ আদেল মির্জা রিজকি বলেন, আমি মনে করি, সম্ভবত এ মুহূর্তে এই টুর্নামেন্টের সেরা দল বাংলাদেশ এবং এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, যদিও ভারত ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। বাংলাদেশের বিপক্ষে আমাদের সতর্ক থাকা, স্মার্ট হওয়া, বল দ্রুত মুভ করা এবং যে সুযোগগুলো এসেছিল, তা কাজে লাগানোর প্রয়োজন ছিল। মেয়েদের মধ্যে ভারতের মতো বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়েও একই নিবেদন ছিল। আপনারাও দেখেছেন তারা অনেক দৌড়েছে, উপরে উঠেছে, নিচে নেমেছে। আমাদের অরেকটু সময় দিন, আমরা শক্তভাবে ফিরব। বাংলাদেশ আসলেই খুবই ভালো বল প্লেয়িং টিম, তাদের বিপক্ষে খেলা খুব সহজ ছিল না। দলকে যতটা শেপে আনা যায়, আমরা সে চেষ্টা করেছি, এখনো পাকিস্তান তরুণ একটি দল, আমাদের অনেক কাজ করার আছে, সেগুলো নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে, ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে। (টানা দুই ম্যাচ হেরে) আমরা পিছিয়ে আছি, কিন্তু ইতিবাচক অনেক কিছু নেয়ার আছে আমাদের। এখন আমরা আমাদের পরের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি।
প্রথমার্ধেই চার গোলে খেয়ে কোণঠাসা হয়ে যায় পাকিস্তান। দ্বিতীয়ার্ধে তাই যতটা সম্ভব কম গোল খাওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলেও জানান পাকিস্তান কোচ।
এটা আমাদের জন্য মাস্ট উইন গেম ছিল, কিন্তু (প্রথমার্ধে চার গোল খাওয়ার পর) আমরা আর বেশি গোল হজম করতে চাইনি। যে গোলগুলো আমরা খেয়েছি, তার অধিকাংশই নিজেদের ভুলে খেয়েছি। অবশ্যই বাংলাদেশ খুবই ভালো ফিনিশিং করেছে, কিন্তু আমাদের আরো জমাট, আঁটসাঁট থাকা, অল্প হলেও যে সুযোগগুলো এসেছিল তা কাজে লাগানোর প্রয়োজন ছিল, কিন্তু আমরা সেটা করতে পারিনি।
ভারত কেবল মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাধারীই নয়, এ প্রতিযোগিতার সবগুলোর আসরের চ্যাম্পিয়নও তারা। তাদের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরেই আসর শুরু করা পাকিস্তান বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরেছে ৬-০ গোলে। গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের ৩ মিনিটেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এ সময় পাকিস্তানের ডিফেন্ডার বক্সের মধ্য থেকে বল ক্লিয়ার করেন। সেটি চলে যায় বক্সের বাইরে থাকা মনিকা চাকমার কাছে। মনিকা বল পেয়েই ডান পায়ের শটে জালে পাঠান।
২৮ মিনিটের মাথায় ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। এ সময় সাবিনার বাড়িয়ে দেয়া বল পেয়ে কাছ থেকে গোল করেন সিরাত জাহান স্বপ্না। ৩১ মিনিটে ব্যবধান হয় ৩-০। এ সময় মনিকার পাস থেকে বল পেয়ে যান সাবিনা। তার সামনে ছিলেন কেবল পাকিস্তানের গোলরক্ষক শাহিদ বুখারী। তাকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান সাবিনা। ৩৫ মিনিটে ক্যাপ্টেন তার জোড়া গোল পূর্ণ করলে বাংলাদেশ ৪-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায়।
বিরতির পর ৫৮ মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন সাবিনা। এ সময় মারিয়া মান্ডার ক্রসে হেড দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। তাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৫-০ গোলে। আর ৭৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে গোল করে পাকিস্তানের পরাজয়ের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেন ঋতুপর্ণা চাকমা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়