কোহলির সেঞ্চুরি : আফগানদের ওপর ঝাল মিটাল ভারত

আগের সংবাদ

ভারতের সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ঢাকায় আমন্ত্রণ : উত্তর-পূর্বের সঙ্গে সংযোগে গুরুত্ব

পরের সংবাদ

সতর্ক আওয়ামী লীগ : নৈরাজ্য ঠেকাতে রাজপথে সক্রিয় সহযোগী সংগঠনও

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বাকি এখনো প্রায় দেড় বছর। ইতোমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে রাজনীতির মাঠ। রাজপথের বিরোধীদল বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন মাঠ গরম করে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে মরিয়া। প্রতিদিনই কোনো না কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে তারা। অন্যদিকে বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলার ঘোষণা ক্ষমতাসীনদের। বিএনপিসহ তাদের মিত্রদের ‘ষড়যন্ত্র’ রাজপথেই মোকাবিলা করতে সক্রিয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন। এজন্য শক্তিশালী করা হচ্ছে সংগঠনের সব ইউনিটকে।
মূলত. জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সরকারবিরোধী নানা কর্মসূচিতে তৎপর বিএনপি। রাজধানী থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের মাঠ উত্তপ্ত করতে নানা কর্মসূচি পালন করছে দলটি। সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনায় সরব নেতারা। তবে তৃণমূল পর্যায়ের প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতেই হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। বিএনপির অভিযোগ, তৃণমূলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ ও পুলিশ বাধা দিচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সাধারণ মানুষের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে সরকার।
অন্যদিকে বিএনপিকে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ না দিয়ে পাল্টা বক্তব্য দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ইতোমধ্যে গত ২১ আগস্ট সন্ত্রাস দমনের প্রত্যয়ে রাজধানীতে বিশাল শোডাউন করেছে ক্ষমতাসীনরা। অন্যদিকে দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক, ছাত্রলীগসহ প্রতিটি সংগঠনকে নৈরাজ্য ঠেকাতে রাজপথে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে রাজনীতির চিরচেনা রূপে ফেরাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, কোভিডে দীর্ঘদিন নিরব থাকার পর আবার সরব হওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমে বোঝা যাচ্ছে সবাই ভেতরে ভেতরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অনঢ় বিএনপি, সতর্ক আওয়ামী লীগ : আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না-

এমনই ঘোষণা বিএনপির। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এবারের আন্দোলনের লক্ষ্য হবে স্বৈরাচারী সরকারের পতন, নিপীড়নমূলক অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উচ্ছেদ; শাসনতন্ত্র পরিবর্তন এবং দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়া। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে সরে যেতে বাধ্য করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তা নাহলে জনগণ তা কোনভাবেই মেনে নেবে না। সরকারের জন্য সেটাই ভালো জনগণের আন্দোলনের আগে যদি তারা দাবি মেনে নেন।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকেও ছাড় দেয়ার মানসিকতা দেখা যাচ্ছে। তবে রাজনীতির নামে উগ্রতা দেখালে কঠোর জবাব দিতে পিছপা হবে না ক্ষমতাসীনরা। রাজপথের বিরোধী শক্তিকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে চায় তারা। দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজনীতির মাঠে অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। রাজপথ বিএনপির দখলে গেলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিকে কিছুতেই মাঠ দখলের সুযোগ দেয়া হবে না। এজন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নানা ইস্যুতে রাজপথে থাকবে।
দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলন মানেই সন্ত্রাস সৃষ্টির উসকানি ও রাজপথ দখলের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি। আর তাদের এই চিরায়ত আচরণ দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে বাধাগ্রস্ত করেছে। আন্দোলনের নামে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বরাবরের মতো জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। দেশের যেসব জায়গায় তারা সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে সেসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
রাজপথে সহযোগী সংগঠন : বিএনপির নৈরাজ্য ঠেকাতে পুলিশের পাশাপাশি নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তাদের মতে, ১৩ বছর আগে ভিক্ষুকের জাতি ছিল বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। আর্থ-সামাজিক-অবকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। আগামীতে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না এলে ২০০১ সালের চেয়েও খারাপ অবস্থা হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। আর এই আশঙ্কা থেকেই বিএনপির নৈরাজ্য ঠেকাতে মাঠে নেমেছে সহযোগী সংগঠন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা মাঠেই থাকব, মাঠে থেকেই বিএনপির সব নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র আর হিংসার জবাব দেব। শেখ হাসিনার উন্নয়নের বাংলাদেশকে বিএনপি জামায়াত যেন ধ্বংস করতে না পারে। যদি বিএনপি-জামায়াত এদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তায় বিঘœ ঘটায়, তাহলে যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী রাজপথে থেকে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক নম্বর সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি এবং রাজপথে থেকে সেভাবেই তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে আমরা ত্বরান্বিত করব, বেগবান করব। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা সোনার বাংলা গড়ব।
নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, যেখানে বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে, অছাত্রদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল যেখানে নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে, সেখানেই আপনারা তাদের গণধোলাই দেবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়