বাম গণতান্ত্রিক জোটের হুঁশিয়ারি : দমন-পীড়ন করে গদি রক্ষা করা যাবে না

আগের সংবাদ

চার কারণে ভ্যাট আদায়ে বিপর্যয়

পরের সংবাদ

বিলুপ্তপ্রায় শরিফা ফল চাষ করে লাখপতি বাহাউদ্দীন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মর্তুজা ফারুক রুপক মেহেরেপুর থেকে : বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় ফল শরিফা। যার আঞ্চলিক নাম মেওয়া। এ ফলের বাগান করে সফলতা পেয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের ব্যাংকার বাহাউদ্দীন। তার বাগানে গাছের ডালে ডালে শোভা পাচ্ছে শরিফা ফল। বাতাসে শরিফা ফলের সঙ্গে দোল খাচ্ছে বাগান মালিক বাহাউদ্দীনের স্বপ্ন। সুস্বাদু ও বেহেস্তি ফল হিসেবে পরিচিত শরিফা ফল। এ ফল চাষে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। তার এই সফলতা এলাকার তরুণদের শরিফা বাগান করার অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চেংগাড়া গ্রামের বাসিন্দা দাউদ হোসেনের ছেলে বাহাউদ্দীন। তিনি দীর্ঘদিন যমুনা ব্যাংকে চাকরি করেছেন। তবে বাগান করে সফলতা পাওয়ার পর তিনি চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন। শখের বশে ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা নিয়েই ৫ বছর আগে গ্রামের মাঠে মাত্র ৪ বিঘা জমিতে শরিফা ফলের বাগান করেন। স্থানীয়ভাবে বীজ সংগ্রহ করে তা রোপণ করেন তিনি।
বাহাউদ্দিন জানান, প্রথম বছরে খরচ করেন মাত্র ২০ হাজার টাকা। পরের বছর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তার। সে বছর বাগানে উৎপাদিত শরিফা ফল স্থানীয় বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে পান ৮০ হাজার টাকা। স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে বেশি লাভবান হওয়ায় এ বছর আরো ৪ বিঘা জমিতে শরিফা বাগান করেছেন তিনি। গত বছর তিনি ২০ হাজার টাকা খরচ করে পেয়েছেন ৩ লাখ টাকা। অনুকূল আবহাওয়া আর নিজের অদম্য পরিশ্রম এবং কৃষি অফিসের পরামর্শে এ বছর তার শরিফা বাগানে প্রচুর ফল এসেছে। আর দিন ১৫ পর বাগান থেকে তিনি ফল সংগ্রহ করতে পারবেন। এ বছর তিনি ৬ লাখ টাকার ফল বিক্রি করবেন বলে জানান।
স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী কাজল লতা জানান, শরিফা ফল খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে ও অনলাইনের অর্ডারে ঢাকাতে পাঠানো হয়। অনলাইনেও বেচাকেনা বেশ ভালো হয়। বাগান থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে কিনে ৪৫০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি করি। এতে লাভ হয় বেশি। একই কথা জানালেন ফল কিনতে আসা ব্যবসায়ী লিটন মিয়া।
শরিফা চাষে আগ্রহী কলেজ শিক্ষক রফিকুল আলম বলেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে গল্প শুনে বাগান দেখতে গিয়েছিলাম। শুনেছি স্বল্প খরচ আর অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভবান হওয়া যায়। তিনি এ শরিফা চাষে সফলতার গল্প শুনেই বাগান করার ইচ্ছা পোষণ করেন। ইতোমধ্যে দুই বিঘা জমি প্রস্তুত ও বীজ সংগ্রহ করছেন তিনি। রফিকুল আলমের মতো অনেকেই বাহাউদ্দীন ও কৃষি অফিসে পরামর্শ নিচ্ছেন শরিফা বাগান করার জন্য।
এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন ভোরের কাগজকে জানান, শরিফা একটি বিলুপ্তপ্রায় দেশি ফল। সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফল আবাদে খরচ অনেক কম ও রোগবালাই একেবারই নেই। আবার লাভ অনেক বেশি। মেহেরপুর জেলায় শুধু গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের বাহাউদ্দীন এটির বাগান করেছেন। তরুণরাও শরিফা বাগানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়