কাগজ প্রতিবেদক : ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হওয়া ঢাকা নগর পরিবহন থেকে নগরীর ২৪ লাখের বেশি ব্যক্তি যাত্রী সেবা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। আর ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মানসম্মত সেবার কারণেই নগর পরিবহনের প্রথম রুট জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার ডিএসসিসির নগর ভবনে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৪তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন দুই মেয়র। এর আগে ২৩তম সভায় ১ সেপ্টেম্বর থেকে আরো দুটি রুটে নতুন বাস চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময়মতো তা সম্ভব না হওয়ায় আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে দুটি রুটে বাস চালুর কথা জানানো হয়।
মেয়র তাপস বলেন, ১৩ অক্টোবর নতুন বাস দিয়ে ২২ ও ২৬ নম্বর রুট চালু হবে। নতুন এই যাত্রাপথ নতুন বাস দিয়েই চালু হবে। আর ২১ নম্বর রুটে নতুন নতুন বাস সংযুক্ত করব। এছাড়া বাসের শৃঙ্খলা ফেরাতে ২৫ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর চিরুনি অভিযান চলবে। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দীর্ঘদিনের জটিলতা নিরসন করে ঢাকা নগর পরিবহনের প্রথম ২১ নম্বর যাত্রাপথ আমরা শুরু করি। খুশির সংবাদ হলো, আগস্ট মাস পর্যন্ত এই যাত্রাপথে ২৪ লাখের বেশি মানুষ যাত্রীসেবা পেয়েছে। এতে ঢাকা নগর পরিবহনের সঙ্গে বিআরটিসি এবং বাসের বিভিন্ন মালিক প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা আয় করতে পেরেছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। যদিও এখনো অনেক প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা এবং সমস্যা আছে। ধাপে ধাপে সেগুলো সমাধান করছি।
ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে গণপরিবহন সেবায় দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যা আছে। এই শহরে নগর পরিবহন চালু করাটা সত্যিই অনেক চ্যালেঞ্জিং। আমরা দুই মেয়র আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি নগর পরিবহনটির সফল বাস্তবায়নের জন্য। পাইলট প্রকল্প হিসেবে একটি রুটে বাস চালু করে এরইমধ্যে আমরা চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করেছি। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন রুটে আমরা কার্যক্রম শুরু করছি। মানসম্মত সেবার কারণে নগর পরিবহন প্রথম রুটে জনগণের ব্যাপক সাড়া মিলেছে।
তিনি আরো বলেন, ২২, ২৩ ও ২৬ এই ৩টি রুটে দুইশ নতুন বাস দিয়ে চলবে নগর পরিবহন। বাসগুলোর নির্মাণ কাজ চলমান। সম্পূর্ণ নতুন বাস নির্মাণের জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে একটু সময় লাগছে। আমরা আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর নতুন বাসের গুণগত মান ও বাস নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে যাব। আধুনিক মানসম্পন্ন ও আরামদায়ক বাস দিয়েই নগর পরিবহন চলবে। এই লক্ষ্যে কাজ চলছে।
বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি জানিয়েছে, ২২ নম্বর রুটটি হলো ঘাটারচর থেকে বছিলা, মোহাম্মদপুর টাউন হল, আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, কাকরাইল, ফকিরাপুল, মতিঝিল, টিকাটুলি, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কোনাপাড়া হয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত। ২৩ নম্বর রুট হচ্ছে ঘাটারচর থেকে বছিলা, মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ, শ্যামলী, কলেজগেট, আসাদগেট, কলাবাগান, সায়েন্সল্যাব, শাহবাগ,

মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা, কমলাপুর, ধলপুর, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড পর্যন্ত। আর ২৬ নম্বর রুট হলো ঘাটারচর থেকে বছিলা, মোহাম্মদপুর টাউন হল, আসাদগেট, কলাবাগান, সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট, আজিমপুর, পলাশী মোড়, চানখাঁরপুল, পোস্তগোলা হয়ে কদমতলী পর্যন্ত।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধিসহ কমিটির সদস্যরা।