গাজীপুরে সালনা রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট উদ্বোধন

আগের সংবাদ

ব্যবসায়ীদের দাবি : দাম বাড়িয়েও পোষাচ্ছে না

পরের সংবাদ

লেনদেন কমায় ‘বিভ্রান্তিতে’ বিনিয়োগকারীরা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দুই দিনের দর সংশোধন শেষে পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হঠাৎ যে বিভ্রান্তি, সেটি স্পষ্ট লেনদেনে। টানা সাত কর্মদিবস পৌনে দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে লেনদেন সোমবারই নেমে গিয়েছিল দেড় হাজার কোটির নিচে। সেটি আরো কমেছে মঙ্গলবার। ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে ১২ দিন সূচক বেড়ে বিনিয়োগকারীরা যখন গত ১০ মাসের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশায়, এমন পরিস্থিতিতে গত রবিবার লেনদেনের অর্ধেক সময় পর্যন্ত সূচক ৭৮ পয়েন্ট বেড়েও পরে বেলা শেষে ১৮ পয়েন্ট পতন সাধারণ সংশোধন ছিল কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই দরপতন শেষে দেশের বাইরে অবস্থান করা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম একটি বার্তা পাঠান যে, পুঁজিবাজারের ফ্লোর প্রাইস এখনই তোলে নেয়া হচ্ছে না। তিনি জানান, এই ফ্লোর প্রাইস নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে, যে গুজবে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহেও দরপতন হয়েছিল।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত রবিবারের ধারাবাহিকতায় সোমবার পতন হয় আরো বেশি। এক পর্যায়ে ৬৮ পয়েন্ট পড়ে গিয়েও পরে ৫৮ পতন হয়। সেদিন লেনদেন নেমে আসে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকাতে, যা আগের দিন দুই হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি ছিল। এদিনও বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ পুঁজিবাজারে বার্তা পাঠান যে, ফ্লোর প্রাইস অনির্দিষ্টকালের জন্য দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। অবশ্য ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী মনে করেন, এটি সাধারণ প্রফিট টেকিং। গত ৩১ জুলাই থেকে পুঁজিবাজার ক্রমাগত বাড়ছিল। এক টাকা ৫০০ পয়েন্ট বাড়ার পর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেবেন-এটাই স্বাভাবিক। এর মধ্যে বিএসইসিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া একটি চিঠি ভাইরাল হয়। সম্প্রতি ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট গণনাপদ্ধতি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে করার কারণে ব্যাংকের বিনিয়োগের সুযোগ অনেক বেড়েছে। পুঁজিবাজারের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে বন্ডে নিয়োগে উৎসাহ দিয়ে চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, পুঁজিবাজারের নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকবে। পর্যালোচনায় আরো দেখা গেছে, গুজব নাকি প্রফিট টেকিং-এ নিয়ে যখন সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত বিনিয়োগকারীরা, সে সময় গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স শুরুতে বেড়ে গিয়েও দুপুর ১২টা ৪১ মিনিটে আগের দিনের প্রায় সমান অবস্থানে চলে আসে আর তা দ্রুত নিচের দিকে নামছিল। টানা তৃতীয় দিন দরপতন হয় কি না, এই শঙ্কার মধ্যে এখান থেকেই শুরু হয় ঘুরে দাঁড়ানো। পরের এক ঘণ্টায় সেখান থেকে ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে বিনিয়োগকারীদের মনের চাপ কিছুটা দূর করে পুঁজিবাজার। শেষ মুহূর্তের সমন্বয় শেষে আগের দিনের তুলনায় সূচক বাড়ে ৩৯ পয়েন্ট, যা গত দুই দিনে কমেছিল ৭৬ পয়েন্ট। এর আগের ২৩ কর্মদিবসে বেড়েছিল ৫২৮ পয়েন্ট। ৩১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া উত্থানের মধ্যে দুই দিনের সংশোধন কিছুই না। তবে পুঁজিবাজারে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নানা ঘটনাপ্রবাহের কারণেও এই ‘বিশ্রামও’ যে বিনিয়োগকারীদের মনে চাপ তৈরি করেছে, সেটি স্পষ্ট লেনদেনেই। আগের দিন লেনদেন কমেছিল আটশ কোটি টাকারও বেশি। সেখান থেকে মঙ্গলবার কমে আরো প্রায় ৭০ কোটি টাকার বেশি। দিন শেষে হাতবদল হয় ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিন ছিল এক হাজার ৪০০ কোটি ৬৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। আগের দিন বাড়ে কেবল ৩৮টি কোম্পানির দর, বিপরীতে কমে ২৬৩টির।
তার আগের দিনের দরে হাতবদল হয় ৬৮টি কোম্পানির শেয়ার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই দিন খুব বড় পতন ছিল এমন নয়। বরং যা পড়েছে তা খুবই স্বাভাবিক ছিল। কয়েকদিন উত্থানের পরে প্রফিট টেকিং হয়েছিল। টার্নওভার একদিক থেকে ভালো বলা যায়। কারণ খুব বেশি সেল প্রেসার ছিল না। এদিন সবচেয়ে বেশি ১৩ দশমিক ৮১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। শেয়ারটির দর ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ দর বেড়েছে। ওরিয়ন ফার্মার দর ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৫ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট। লাফার্জ হোলসিম সূচকে যোগ করেছে ৪ দশমিক ৭১ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ২ দশমিক ০৯ শতাংশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়