কাগজ প্রতিবেদক : দিনাজপুর-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ও তার চাচা দিনাজপুর জাতীয় পার্টির সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর কয়েকজনের জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমি ফেরত চাওয়ার কারণে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে এবং কেউ কেউ বাড়ি ছাড়া বলেও অভিযোগ করেছেন সাঁওতালরা। তবে সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলছেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন, রাজনৈতিক কারণে এসব হচ্ছে। জমি, জীবন, সম্মান ও বসতবাড়ি রক্ষার দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ও সংহতি সমাবেশে এসব অভিযোগ করেন তারা। ‘সাঁওতালদের জমি ও জীবন রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় স্বপ্নপুরি নামের বিনোদনকেন্দ্রে সাঁওতাল ও মাহালি সম্প্রদায়ের তিনটি কবরস্থান আছে। একটি কবরস্থানের ওপর শিবলী সাদিক বাড়ি নির্মাণ করেছেন। সংসদ সদস্যের চাচা ও জেলা জাতীয় পার্টির নেতা দেলোয়ার হোসেনকে ভূমিদস্যু আখ্যা দিয়ে বলা হয়, তিনি সাঁওতালদের ৭৭ দশমিক ১১ একর জমি দখল করেছেন। এলাকায় কোনো জমি নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে জমির মালিক হয়ে যান দেলোয়ার হোসেন। এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত সাঁওতালদের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার না পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। অভিযোগ জানালে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। সাঁওতালরা তাদের জীবনের নিরাপত্তা ও জমি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলেন উকিল হেমব্রম বলেন, তার ৩৩ শতাংশ জমির মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ টিকিয়ে রাখতে পেরেছেন। বাকি সব বেদখল হয়ে গেছে। গ্রামে ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না। স্বপ্নপুরি বিনোদনকেন্দ্রের ময়লা সাঁওতালদের কিছু কবরস্থানের ওপর ফেলা হয়। তিনি এক মাসের বেশি সময় ধরে বাড়ি যেতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেন। যেসব জমি দখল করা হয়েছে, তার প্রমাণ তাদের কাছে আছে।
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের অধিবাসী আলতাফ আলী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে তার দেড় একর জমি সংসদ সদস্যের স্বজনরা দখল করার পাঁয়তারা শুরু করেন। করোনা মহামারির সময় তারা জমি দখলে নিয়ে নেন এবং ভয়ে তিনি এলাকায় যেতে পারছেন না। জীবনের নিরাপত্তা চান এবং জমি ফেরত চান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে গণেশ হেমব্রম, খুকুমিন হেমব্রম, রবেন মার্ডি, অখিল হেমব্রম, লুইস হাসদাসহ প্রমুখ। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য শিবলী সাদিককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেনি।