গাজীপুরে সালনা রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট উদ্বোধন

আগের সংবাদ

ব্যবসায়ীদের দাবি : দাম বাড়িয়েও পোষাচ্ছে না

পরের সংবাদ

কুলি থেকে কোটিপতি বিপ্লব লস্কর : পার্সেল প্রতারণার হোতা ও আফ্রিকানসহ গ্রেপ্তার ১১

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পার্সেল প্রতারণায় জড়িত বিপ্লব লস্কর ও তার দেশি-বিদেশি সহযোগীদের গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা। কুলি থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া বিপ্লব লস্করের রাজধানীতেই রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট। রাজধানীর মিরপুর ও ভাটারা এবং নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বিপ্লব লস্কর (৩৪), সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০), ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল (৩০), নাজমুল হক রনি (৩০), মোসা. নুসরাত জাহান (২৪), আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার নাগরিক চিডি (৪০), ইমানুয়েল (২৬), জন (৩১), আঙ্গোলার নাগরিক উইলসন ডে কনসিকাউ (৩৫) ও ক্যামেরুনের নাগরিক গুলগ্নি পাপিনি (৩২)। গত সোমবার ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের ওয়েব বেজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। ডিবি জানায়, পার্সেল প্রতারণা চক্রের হোতা বাংলাদেশি বিপ্লব লস্কর, তার সহযোগী সুমন হোসেন ওরফে ইমরান। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে গাড়ি ছাড়াও নিজের সঙ্গে সব সময় নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করতেন লস্কর। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাকে শনাক্ত করা যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, প্রতারক চক্রের এ সদস্যরা প্রথমে নানা পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ও ই-মেইল জোগাড় করে।
পরে ইউএস আর্মি ও নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে দেশে কিংবা দেশের বাইরে বসে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে দামি উপহার স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হিরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা ডলার-ইউরো ইত্যাদি পার্সেলে পাঠানোর কথা বলে সেগুলোর ছবি পাঠায়। এরপর বিভিন্ন অপারেটরের নম্বর ব্যবহার করে নিজেকে কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ‘পার্সেল এসেছে’ বলে জানায়। তারা বলে- পার্সেলটি ছাড়াতে কাস্টমস হাউস ফি বাবদ মোটা অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে। সাধারণ মানুষ পার্সেলের লোভে দাবি করা টাকা পাঠিয়ে দেয়। টাকা পেয়ে তারা কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে আবারো ফোন করে জানায়, পার্সেলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ডলার রয়েছে। তা ছাড়াতে আরো বেশি টাকা প্রয়োজন। এই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে মানি লন্ডারিং আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে বলেও ভয়ভীতি দেখায়। মামলার ভয়ে প্রতারকদের দেয়া বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দাবিকৃত টাকা পাঠালেও আবার ফোন করে পুলিশ ও সাংবাদিক জেনে যাওয়ায় তাদের ম্যানেজের কথা বলে আরো বড় অংকের টাকা দাবি করে। বিভিন্ন পর্যায়ে টাকা আদায় শেষে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দেয়।
তিনি আরো বলেন, প্রতারণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংক আ্যকাউন্টগুলো জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে খোলা হয়। এসব ব্যাংকেরই চেক ও এটিএম কার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার টাকা তুলে নিত তারা। বিদেশি প্রতারকরা গ্রেপ্তার নুসরাতসহ আরো অনেকের সহায়তায় এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল।
ডিবি প্রধান বলেন, এই টাকা তোলা ও ভাগাভাগির কাজটি করত বিপ্লব লস্কর। সে বিদেশি নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি তদারকি করত। লস্করের সহযোগী হিসেবে কাজ করত সুমন হোসেন ওরফে ইমরান, মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন এবং ইমরান হাসান ইকবাল। গ্রেপ্তার লস্করের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর, খিলক্ষেত ও কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় সে একাধিকবার গ্রেপ্তারও হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়