মা-বাবার অভিযোগ : মেয়ে ও জামাই বাড়ি দখল করতে মরিয়া

আগের সংবাদ

প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর

পরের সংবাদ

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ : জাতীয় বাজেটে বৈষম্যের শিকার সংখ্যালঘুরা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাজেটে ধারাবাহিকভাবেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছে দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরসহ বিগত কয়েক বছরের বাজেট পর্যালোচনা করে এই অভিযোগ করে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। গতকাল সোমবার বাজেট বৈষম্য শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। এতে আরো বক্তব্য রাখেন ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, সভাপতিমণ্ডলী সদস্য কাজল দেবনাথ, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাসুদেব ধর ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন মণীন্দ্র কুমারনাথ।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা ভেবেছিলাম ২০০৮ সালের পর সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য কমবে। আগে যা বরাদ্দ হতো, এখনো তাই আছে। বরং আরো কমছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট পরিচালন ব্যয়ের পরিমাণ ৩১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সচিবালয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিচালন ব্যয় ১৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বাদ দেয়ার পর ৩০৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকার মধ্যে দেশের ধর্মীয় সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর জন্য ২৯৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আর ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সাড়ে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ধর্মীয় সংখ্যাগুরুদের জন্য মোট বরাদ্দের হার ৯৭ দশমিক ৮৭ এবং সংখ্যালঘুদের জন্য ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের অর্থবছরে ধর্মীয় সংখ্যাগুরুদের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৯৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে ছিল ২ দশমিক ২৫ শতাংশ।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পে বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, বর্তমানে এই মন্ত্রণালয়ের অধীন চলমান প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ৯ হাজার ৯৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা। তার মধ্যে সংখ্যাগুরুদের জন্য বরাদ্দ ৯ হাজার ৬১৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা বা ৯৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং সংখ্যালঘুদের জন্য বরাদ্দ ৩১২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক

১৫ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও কল্যাণে জাতীয় রাজস্ব বাজেট থেকে বার্ষিক বরাদ্দ দিয়ে হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টগুলোকে ‘ফাউন্ডেশন’-এ রূপান্তরিত করাসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ। অন্য দাবিগুলো হলো : সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা; রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের সঠিক শুমারির উদ্যোগ নেয়া; সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি সম্পাদন ও ধর্মীয় সংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মডেল মন্দির-প্যাগোডা-গির্জা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনে বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া।
নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বিরোধী দলগুলো যদি প্রকৃত অর্থেই গণতন্ত্র চায় তাহলে তাদের ৭২-এর সংবিধান মানতে হবে। ধর্ম নিরেপক্ষতা মানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু এখন ধর্মীয় বৈষম্য চরম পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশে বিশ্বাসী হলে মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী হলে জাতীয় চার নীতি মানতে হবে। বিভিন্ন সূচকে আমরা পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। গণতন্ত্রের বদলে ধর্মীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা হলে পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের মতো মসজিদে মসজিদে বোমা হামলা করবে জঙ্গিরা। এ দেশেও মসজিদে, ঈদের জামাতে হামলা হয়েছে। এজন্য তামাশা করে লাভ নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়