মা-বাবার অভিযোগ : মেয়ে ও জামাই বাড়ি দখল করতে মরিয়া

আগের সংবাদ

প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর

পরের সংবাদ

হাসপাতালে ডোপ টেস্টের কিট সংকট : কুষ্টিয়ায় ঝুলে আছে তিন হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নুর আলম দুলাল, কুষ্টিয়া থেকে : পেশাদার গাড়িচালকদের জন্য নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যুু ও নবায়ন করতে ডোপ টেস্ট (মাদক পরীক্ষা) বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে এ নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও কুষ্টিয়ায় ডোপ টেস্ট চালু হয় গত ১৫ জুন থেকে। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস পর চালু হলেও মাত্র দেড় মাসের মাথায় হঠাৎ করেই ডোপ টেস্ট বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে প্রায় তিন হাজার পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ঝুলে রয়েছে। লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন করতে না পারায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে চালকদের।
তবে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, টেস্ট কিট ফুরিয়ে যাওয়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের তথ্যমতে, কুষ্টিয়া বিআরটিএ থেকে গত ২২ আগস্ট পর্যন্ত মোট তিন হাজার ২২০ জন চালকের নতুন লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের জন্য ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দপ্তরে নামের তালিকা পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৯৬৫ জনের ডোপ টেস্টের ফল পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১৫ জনের পজিটিভ আসায় লাইসেন্স দেয়া স্থগিত করা হয়েছে। এখনো ফলাফলের অপেক্ষায় আছেন দুই হাজার ২৫৫ জন।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অপেক্ষমাণ তালিকা প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। কবে নাগাদ কিট হাতে এসে পৌঁছাবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় আবারো ডোপ টেস্ট জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে রাস্তায় রাস্তায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে কুষ্টিয়া অঞ্চলের চালকদের। মামলার ভয়ে চালকদের অনেকেই আন্তঃজেলায় ভাড়ায় যেতে চাচ্ছেন না। আমরা এখন চালক সংকটে পড়েছি।’
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার স্বস্তিপুর এলাকার ট্রাকচালক রাসেল বিশ্বাস বলেন, ‘আমার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ডোপ টেস্টের জন্য বিআরটিএর কাগজ নিয়ে ১৫ দিন ধরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ঘুরছি। কাগজ জমা নিচ্ছে না। প্যাথলজি বিভাগ থেকে আমাকে চলতি মাসের ১৫ তারিখের পর খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে টাঙ্গাইলে মামলা খেয়ে জরিমানা দিয়েছি। আরেকবার ট্রাফিক সার্জেন্টকে টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছি। কাজ না করলে খাব কী।’
এ বিষয়ে বিআরটিএ কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতিকুল আলম বলেন, গত জুলাই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় থেকে চিঠি দিয়ে টেস্ট কিট ফুরিয়ে যাওয়ার তথ্য জানানো হয়। অথচ প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ৫০-৬০ জন লাইসেন্সপ্রত্যাশী চালককে ডোপ টেস্টের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ডোপ টেস্ট জটিলতায় লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম আটকে যাচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আব্দুল মোমেন বলেন, কিট ফুরিয়ে যাওয়ায় ডোপ টেস্ট বন্ধ রয়েছে। বাজেট প্রাপ্তি সাপেক্ষ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিট কেনা হবে। তবে কবে বাজেট হবে এবং কিট কেনা সম্ভব হবে এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানাতে পারেননি তিনি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কুষ্টিয়ায় অন্যান্য জেলার তুলনায় নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্সের চাহিদা ও নবায়নের চাহিদা অনেক বেশি। যে কারণে মাত্র কদিনের মধ্যেই কিট ফুরিয়ে গিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে দ্রত সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়