কাগজ প্রতিবেদক : বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় শিল্পকলার মঞ্চে উষ্ণতা ছড়াল চিত্রনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘মহুয়া’ ও ‘সাধনায় মুক্তি’।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী নৃত্যনাট্য উৎসবে এ তিন নৃত্যনাট্য পরিবেশন করা হয়। একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় মনোজ্ঞ এ আয়োজন করা হয়। মূলত তিন নৃত্যনাট্য পরিবেশনার মধ্য দিয়েই উদ্বোধন হলো দুই দিনের নৃত্যনাট্য উৎসবটি। উদ্বোধনী সন্ধ্যার শুরুতে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক সোহাইলা আফসানা ইকো।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা প্রথম পূর্ণাঙ্গ নৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’। মহাভারতের আদিপর্বে বর্ণিত অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদার প্রণয়োপাখ্যান অবলম্বনে গড়ে উঠেছে এই নৃত্যনাট্যের নাট্যবস্তু। এ নাট্য অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদার এক অপরূপ প্রেমের কাহিনী ফুটিয়ে তোলা হয়। নৃত্যটির নির্দেশনায় ছিলেন মুরাদ জামান খান এবং পরিবেশনায় ছিলেন নৃত্যাঙ্গন নৃত্যকলা একাডেমি। এতে অংশ নেন ৩০ জন নৃত্যশিল্পী।
বিশ্বখ্যাত লোকগাথা ময়মনসিংহ-গীতিকার অমর উপাখ্যান গীতি নৃত্যনাট্য ‘মহুয়া’ পালা চন্দ্রকুমার দে গৃহীত ও ড. দীনেশচন্দ্র সেন সম্পাদিত অপর প্রেম উপাখ্যান পালা কবি দ্বিজ কানাই রচিত একটি কালজয়ী ট্র্যাজেডিধর্মী গীতি উপখ্যান। ঘণ্টাব্যাপী এই নৃত্যনাট্যটি সম্পাদনা করেন শহীদুল আলম লস্কর। নৃত্য পরিচালনা ও করিওগ্রাফিতে ছিলেন নাজমুল হক লেলিন এবং পরিবেশনা করেন একাডেমি অব ফাইন আর্টস, ময়মনসিংহ। নৃত্যটির প্রধান মহুয়া চরিত্রে অভিনয় করেন তাসনুভা নিঝুম। ছোট মহুয়া চরিত্রে ছিলেন মিসকাতুল নূর মৃধা এবং বয়াতী চরিত্রে অভিনয় করেন আবু রায়হান।
‘সাধনায় মুক্তি’ নৃত্যনাট্যটিতে দেখানো হয় প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রের ঐতিহাসিক বেশ কিছু বাস্তবিক দৃশ্যপট যেখানে শ্রী রাম কৃষ্ণ, মা সারদা, স্বামী বিবেকানন্দের, কালী এবং অসুর বদের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি। এটি সর্বমোট ১১ পর্বে মঞ্চায়িত হয়। নৃত্যনাট্যটিতে কালী চরিত্রে অভিনয় করেন অপর্ণা হাই তন্দ্রা, রামকৃষ্ণ-মাহমুদুল রাব্বি, রানী রাশমনি-সেলিনা হক, সারদা (ছোট)-রূপসঞ্চারী চর্যা, সারদা (বড়)- রূপশ্রী চক্রবর্তী, শিব-সুমন মাহমুদ সম্রাট, অসুর-সোহেল হোসাইন, হালদার-মেহেদী হাসান, স্বামী বিবেকানন্দ- শেখ রাসেল এবং বাইজি চরিত্রে অভিনয় করেন সায়মা হাবিবা অপূর্ব।
আজ মঙ্গলবার সমাপনী দিনে পরিবেশিত হবে মানস করের পরিচালনায় ‘দেওয়ান ভাবনা’, ল্যাডলি মোহন মৈত্র’র ‘বিদায় অভিশাপ’; কামরুল হাসান ফেরদৌসের ‘রোমিও জুলিয়েট’ এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনা।