মা-বাবার অভিযোগ : মেয়ে ও জামাই বাড়ি দখল করতে মরিয়া

আগের সংবাদ

প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর

পরের সংবাদ

ঢাবির জিয়া হল : আসন সংকটে পড়াশোনা নিয়ে বিপাকে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে আবাসন সংকট, ছাত্রলীগের গেস্টরুম ও বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিতে পড়াশোনা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে অনেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছেন বলে ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন।
বছর পেরুলেও ভাগ্য বদল হয়নি তাদের। অন্য হলগুলোতে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা লিগ্যাল অ্যালোটমেন্ট পেলেও এই হলের শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষে যে রুমে উঠেছিল সেই রুমে থাকছেন। এখন অনেকেই তৃতীয় বর্ষে উঠেছেন।
প্রথম বর্ষে একরুমে যতজন থাকতেন দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করে তৃতীয় বর্ষে এসে একই রুমে আরো যোগ হয়েছে তিন থেকে চারজন। এছাড়া নিয়মিত প্রোগ্রাম, গেস্টরুম করতে হয় তাদের। প্রোগ্রামে অংশ নেয়া বাধ্যতামূলক করতে আগের দিন রাতে রুম থেকে তালিকা সংগ্রহ করা হয়। অনুপস্থিত থাকলে তার জন্য থাকে বিভিন্ন শাস্তি।
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে। নতুন শিক্ষার্থীরা হলে আসতে শুরু করেছে। এতে তৈরি হয়েছে আসন সংকটের নতুন মাত্রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হলে শিক্ষার্থীদের আসন বণ্টনে প্রশাসনের হাত নেই। আসনগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে হল ছাত্রলীগ। সম্প্রতি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সভাপতি আজহারুল ইসলাম মামুনের কোরামের শিক্ষার্থীরা সিট বরাদ্দ পেলেও সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম শান্তর কোরামের শিক্ষার্থী সিট পাওয়ার বদলে এক রুমে থাকছেন ৩০ জন করে।
এদিকে একই শিক্ষাবর্ষের সাধারণ সম্পাদক কোরামের বর্তমানে তিনটি রুমের মধ্যে দুটি রুমে ৫৯ জন ও আরেকটি রুমে ১৬ জন গাদাগাদি করে থাকছেন। সম্প্রতি পলিটিক্যাল সিলেকশন হওয়ায় যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা থাকছেন ১৬ জনের রুমে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী ভোরের কাগজকে জানান, তাদের নিয়মিত প্রোগ্রামে যেতে হয় এখনো। ক্লাস বা পরীক্ষা থাকলেও অনুরোধ করে অনেক সময় ছুটি নিতে হয়। এই বিষয়গুলো আমরা আর নিতে পারছি না। কোনো দিন চার পাঁচ ঘণ্টার প্রোগ্রামে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। সেটা পরীক্ষা কিংবা পড়াশোনায় বড় রকম প্রভাব ফেলছে।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এখন মনে হচ্ছে কখন বইটা নিয়ে একটু বসব। কিন্তু, সেই সুযোগটা হয় না। একদিকে রুমে থাকার সমস্যা। অন্যদিকে রিডিং রুমে জায়গা পাওয়া যায় না। রাতে গেস্টরুম করতে হয়। প্রোগ্রাম থাকলে আগের রাতে রুমে এসে হিসেব নিয়ে যায় সিনিয়ররা। পরেরদিন প্রোগ্রামে না থাকলে জবাবদিহি করা লাগে। গালি এবং চড় থাপ্পড় এখনো হজম করতে হয় প্রায়শই।
তবে প্রোগ্রামগুলোতে কোনো শিক্ষার্থীকে জোর করে নেয়ার বিষয়টাকে অস্বীকার করে হাসিবুল হোসেন শান্ত বলেন, যাদের পরীক্ষা বা ক্লাস থাকে তাদের ছুটি দেয়া হয়। চড়-থাপ্পড়ের বিষয়টিকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে তিনি বলেন, গেস্টরুমে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনা। গেস্টরুমে পলিটিক্যাল ছেলেরা আড্ডা দেয়, এতটুকুই।
গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনা ঘটলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা হলগুলোতে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করি, পাঠচক্র করি, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে পাশে থাকি। এভাবেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের মিথষ্ক্রিয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের আসন বরাদ্দের বিষয়ে হল প্রশাসন বলছে হলটি ছোটো হওয়ায় সবাইকে আসন দিতে পারছেন না। তবে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, প্রভোস্ট কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে একবার আসন বিন্যাস করার কথা থাকলেও আমরা বছরে দুবার করি। আমাদের আবাসনের সংকট আছে।
গেস্টরুমে মারধরের বিষয়ে হল প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ আসে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, মারধরের কোনো অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া বিষয়গুলো না জানলে ব্যবস্থা নেয়াটা বেশ চ্যালেঞ্জিং।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়