মা-বাবার অভিযোগ : মেয়ে ও জামাই বাড়ি দখল করতে মরিয়া

আগের সংবাদ

প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর

পরের সংবাদ

জনমনে ক্ষোভ : ভারি বৃষ্টিপাতে ফের জলজটে সিলেট

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : ভারি বৃষ্টির আভাস আগেই ছিল, তবে এতটা বৃষ্টি একেবারেই অকল্পনীয়। গতকাল সেমবার সকালে সিলেটে মাত্র ৩ ঘণ্টায় প্রায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এতে মুহূর্তেই নগরী জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ভারি বৃষ্টিতে ডুবে যায় প্রধান প্রধান সড়ক। তবে বৃষ্টি থামার এক ঘণ্টার মধ্যেই পানি নেমে গিয়ে সবকিছু আবার স্বাভাবিক হয়।
চলতি বর্ষা মৌসুমে বেশ কয়েকবার জলাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়েছে নগরীর বেশির ভাগ এলাকার বাসিন্দাদের। বানের জলের ভোগান্তিতে ক্ষোভ বেড়েছে জনমনে। একটু বেশি বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় নগরী। বছরের পর বছর শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে করা উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছে।
সিলেটে গতকাল রবিবার মধ্যরাত থেকেই মাঝারি বর্ষণ শুরু হয়, যা চলে সকাল পর্যন্ত। কিন্তু সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত চলে অতিভারী বর্ষণ। সিলেট আবহাওয়া অফিস জানায়, এই ৩ ঘণ্টায় ১০৮.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় নগরীতে। নগরীর জিন্দাবাজার, বারুতখানা, হাওয়াপাড়া, রাজারগলি, উপশহর, যতরপুর, ছড়ারপাড়, ভাতালিয়া, জল্লারপাড়, তালতলা, চৌহাট্টা, সুবিদবাজার, ঘাসিটুলা, শামীমাবাদ, শিবগঞ্জ, নয়াবাজার, খাসদবির, মেডিকেল রোড, মজুমদারিসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক তলিয়ে যায় এই সময়ে। অনেক এলাকায় সড়ক উপচে পানি ঢোকে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। পানির সঙ্গে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা বাসা-বাড়িতে ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েন অনেকে।
এদিকে, জলাবদ্ধতার পানি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাস পেরিয়ে ঢুকে পড়ে ক্লাসরুমে। এ কারণে এদিন সব ক্লাস ও পরীক্ষা বাতিল করা হয় বলে জানান কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মঈনুল হক।
আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ৩ ঘণ্টায় ১০৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কম সময়ের মধ্যে এটা অনেক বেশি পরিমাণ বৃষ্টি। তবে এই সময়ে এমন বৃষ্টিপাত অনেকটাই অস্বাভাবিক। যার ফলে নগরীতে দ্রুত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে।
তবে জলাবদ্ধতার পেছনে শুধু ভারি বৃষ্টি নয়, সিটি করপোরেশনেরও দায় আছে বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। নগরীর কালিঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. আলম বলেন, জলাবদ্ধতার কষ্টের কথা বলে লাভ নাই। আমরা থাকি বাসার নিচতলায়। বৃষ্টি হলেই আতঙ্কে থাকি, এই বুঝি বাসায় ঢুকে পড়ল পানি। আজও ঘরে পানি ঢুকেছে। সকাল থেকে জিনিসপত্র নিয়ে টানাটানি করছি। তিনি বলেন, মেয়র মহোদয় এত কোটি কোটি টাকা খরচ করে নতুন ড্রেন নির্মাণ করলেন, তাও আমাদের পানিতে ভাসতে হয়। তাহলে এই অহেতুক উন্নয়নে লাভ কী হলো?
তবে আগের মতোই দায়সারা বক্তব্য সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক)। এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এত বৃষ্টিপাত সাধারণত সিলেটে হয় না। তাই নগরীর কিছু এলাকায় পানি জমেছে। তবে এক ঘণ্টার মধ্যে পানি নেমেও গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে আমাদের যে প্রকল্পগুলো আছে, সেগুলো চলমান। কিছু জায়গায় এখনো কাজ বাকি আছে।
এতকিছুর পরও কেন জলাবদ্ধতা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথমত ত্রæটি আমাদের সকলেরই আছে। নাগরিকের দায়িত্ব হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে ফেলা। কিন্তু তা নির্ধারিত জায়গায় না ফেলে ড্রেনের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। দ্বিতীয়ত, আমাদের লোকজন সময়মতো ড্রেনগুলো পরিষ্কার করে না। এ কারণে রাস্তায় পানি জমে। তিনি সবাইকে সচেতনভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়