মা-বাবার অভিযোগ : মেয়ে ও জামাই বাড়ি দখল করতে মরিয়া

আগের সংবাদ

প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর

পরের সংবাদ

ছাত্রলীগ নেতাকে পেটালেন সাংসদ অনুসারীরা : ফেসবুকে নিন্দার ঝড়

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নোয়াখালী প্রতিনিধি : বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে প্রকাশ্যে হুমায়ুন কবির (৩৬) নামে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে নোয়াখালী-৩ আসনের সাংসদ মামুনুর রশিদ কিরনের অনুসারীরা পিটিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
গতকাল সোমবার সকালে হামলার ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হুমায়ুন কবির। এরআগে রবিবার বিকালে চৌমুহনীর ডিবি সড়কে হামলার শিকার হন তিনি।
ভুক্তভোগী কবির হোসেন বর্তমানে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি, চৌমুহনী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য ছিলেন।
একাধিক সূত্র জানায়, স¤প্রতি বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করায় পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক মনির হোসেন, তার সমর্থক সোহান, তেল রাসেল, রায়হান, বাহার ও অপুদের সমালোচনা করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হুমায়ুন কবির। এর জের ধরে রবিবার বিকালে কবির ডিবি রোড দিয়ে যাওয়ার পথে সোহানের দোকানের সামনে তার পথরোধ করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে সড়কে ফেলে মনির হোসেন ও তার সমর্থক সোহান, তেল রাসেলের নেতৃত্বে ৮-১০ জন বেদম মারধর করে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে কবিরকে উদ্ধার করে প্রথমে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রেদোয়ানুল কবির, আবদুর রহমান ও রাসেলসহ একাধিক ব্যক্তি লিখেছেন, হুমায়ুন কবির দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারি ছিলেন। আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ। কিন্তু দেখা গেছে স¤প্রতি বিএনপি থেকে কিছু লোকজন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলের নিবেদিত প্রাণদের জায়গা দখলের চেষ্টা করছে। যারা হুমায়ুন কবিরকে মারধর করেছে তাদের মধ্যে সোহান, ফাহাদ শিকদার সদ্য বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়। আজ এসব আগাছা দ্বারা দলের নিবেদিতকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
দলের একটি অংশের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের ছত্রছায়ায় থাকায় তারা নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হুমায়ুন কবির বলেন, স¤প্রতি বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক মনির হোসেন, তার সমর্থক সোহান, তেল রাসেল, রায়হান, বাহার ও অপুদের সমালোচনা করেন তিনি। ওই সমালোচনার জের ধরে তারা আমার ওপর হামলা চালিয়ে আমাকে গুরতর আহত করে। হুমায়ুন কবির আরো বলেন, হামলাকারীরা সবাই সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের অনুসারী। তিনি হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন।
চৌমুহনী পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক মনির হোসেন হামলার সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগে বলেন, এক সময় দলের কার্যক্রমে হুমায়ুন কবির সক্রিয় থাকলেও বর্তমানে তার ওই অবস্থা নেই। কিছুদিন ধরে তিনি আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন অশালীন পোস্ট করেন। তাই তার বিরুদ্ধে আমি চট্টগ্রামের আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়ায় তিনি আমার ওপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৩১ আগস্ট ১৪৪ ধারা চলাকালিন সময় স্থানীয় সাংসদ মামুনুর রশিদ কিরনের ভাই স্বপনসহ আমি চৌমুহনী পাবলিক হলে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন হুমায়ুন কবির তার লোকজন নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। ওই হামলার ঘটনায়ও আমি বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
হুমায়ুন কবিরের ওপর হামলাকারীরা সাংসদ মামুনুর রশিদ কিরনের অনুসারী কিনা, এ বিষয়ে জানতে তার (মামুনুর রশিদ কিরন) মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি জানান, হুমায়ন কবিরকে পিটিয়ে জখমের ঘটনায় তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে ৩১ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় তিনিও হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়