প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজলার রুদ্রকরে দশম শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচণাকারীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ ক?রে?ছে সহপাঠি ও এলাকাবাসী। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সকাল ৯টা থেকে সুবচনি বাজারের আঞ্চলিক সড়কে টায়ার জ¦ালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শ্যামল চন্দ্র শর্মা ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও অবরুদ্ধ করে এলাকাবাসী। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র শর্মা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে অবস্থান নেন। এ সময় প্রধান শিক্ষকের অফিসের বাইরে শতশত বিক্ষুব্ধ জনতা প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে সেøাগান দিতে থাকে। এ সময় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে শরীয়তপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদ হোসেন, রুদ্রকার ইউনিযন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক ঢালী, স্থানীয় ইউপি সদস্য টুটুল মিয়াসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জানান, চর লক্ষীনারায়ন গ্রামের জাহাঙ্গীর ওঝার মেয়ে সুবচনী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুরভী আক্তারের সঙ্গে একই শ্রেণির ছাত্র সোনামুখী গ্রামের মৃত মজিদ তালুকদারের ছেলে আল আমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানতে পেরে আল আমিনের পরিবার আল আমিনকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। আল আমিনের বড় ভাই ঢাকার পিলখানায় কর্মরত বিজিবি সদস্য পারভেজ তালুকদার ও মা পারুল আক্তার বৃহস্পতিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ে যান। তারা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে প্রেম করার অপরাধে সুরভী আক্তারের বিচার দাবি করেন। প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন সিকদার ওই ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ডেকে এনে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেন। এ সময় আল আমিনের বড় ভাই বিজিবি সদস্য পারভেজ তালুকদার ও তার মা পারুল আক্তার মিলে সুরভী আক্তারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং জুতা দিয়ে পেটাতে পেটাতে লাইব্রেরিতে নিয়ে যান। এ সময় ওই ছাত্রী কান্নায় ভেঙে পড়ে এবং সঙ্গাহীন হয়ে পড়ে। তাদের চাপের মুখে সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন সিকদার ওই ছাত্রীকে ছাড়পত্র দিয়ে বিদ্যালয়ের আয়া লুৎফা বেগমের মাধ্যমে বই-খাতার ব্যাগসহ তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এ সময় সুরভীর মা ডলি বেগম দৌড়ে এসে বিদ্যালয় থেকে চলে আসার বিষয়টি সুরভীর কাছে জানতে চায়। তখন বিদ্যালয়ের আয়া বলেন না কিছু হয়নি। এ সময় সুরভীদের বাড়িতে উপস্থিত হয় প্রেমিক আল আমিনের বড় ভাই পারভেজ তালুকদার ও তার মা পারুল আক্তার। তারাও সুরভীর মাকে বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও তাদের ঘরবাড়ি পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এ সময় বাড়িতে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়।
এদিকে এতসব মানসিক চাপ সইতে না পেরে সুরভী ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে তৎক্ষণাৎ ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে। এ ঘটনায় সুরভীর বাবা জাহাঙ্গীর ওঝা বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে প্রধান শিক্ষকসহ ৪ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আরো অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে গত শুক্রবার পালং মডেল থানায় একটি মামলা করেন। তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার ও প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবি জানানো হয় মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে।
পালং মডেল থানার ওসি মো. আক্তার হোসেন বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।