ঢাকা কলেজ : ক্যান্টিনে খাওয়া নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

আগের সংবাদ

ভাঙা সড়কে খোঁড়াখুঁড়ির মচ্ছব : সড়ক খনন নীতিমালা উপেক্ষিত > তিন মাসের কাজ বছরজুড়ে > সেবা সংস্থার কাজে সমন্বয় নেই

পরের সংবাদ

ছন্দ হারিয়ে টি-টোয়েন্টি ছাড়লেন মুশফিক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সম্প্র্রতি টি-টোয়েন্টিতে নিজেকে সঠিকভাবে মেলে ধরতে পারছিলেন না মুশফিকুর রহিম। সর্বশেষ ৭ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তার রান মাত্র ৭৩। এশিয়া কাপের আগে জিম্বাবুয়ে সিরিজেও বিশ্রামে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে এশিয়া কাপের দুই ম্যাচে করেন ৫ রান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১ রানে আউট হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও আউট হন মাত্র ৪ রানে। দুই ম্যাচে ৫ রান করেও বাংলাদেশের চতুর্থ ও বিশ্বের ৪৬তম ক্রিকেটার হিসেবে এই ফরমেটে ১৫শ রান করেন তিনি। তবে এদের মধ্যে সকচে বাজে অবস্থা মুশফিকের নিজেরই। ১০২ ম্যাচে করেন এই রান। এই মাইলফলকে খুব একটা খুশি হওয়ার উপায় নেই মুশফিকের। এশিয়া কাপে ব্যর্থতা শেষে টাইগাররা দেশে ফেরার পর গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মুশফিক। সংক্ষিপ্ত ফরমেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেও টাইগারদের হয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) সহ অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও খেলবেন বাংলাদেশ দলের এই সাবেক অধিনায়ক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুশফিক লিখেছেন, সবাইকে সালাম এবং শুভেচ্ছা। দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের যাত্রায় আমি আপনাদের সবাইকে পাশে পেয়েছি। ভালো এবং খারাপ দুই সময়েই আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থন আমার প্রেরণা। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে আমি অবসর নিচ্ছি। তবে বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাবো। আশা করছি এই দুই ফরম্যাটে আমি আরো কিছু নিয়ে আসতে পারবো দেশের জন্য। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগসহ (বিপিএল) অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আমি আমার খেলা চালিয়ে যাবো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। আলহামদুলিল্লাহ। সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।
মুশফিকের অবসর ঘোষণায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তামিম ইকবাল। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের প্রশংসা করে ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তামিম লিখেন, অভিনন্দন মুশফিক! ১৫ বছর ২৭৭ দিনের টি- টোয়েন্টি ক্যারিয়ার কোনো ফ্লুক নয়। বছরের পর বছর তোকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। পরিসংখ্যান সবসময় সবটুকু ফুটিয়ে তুলতে পারে না। কিন্তু তোর নিবেদন, প্যাশন, পরিশ্রম ও ভালোবাসা দেখেছি। তোর প্রচেষ্টা ও ঘাম ঝরানো দেখেছি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তোর যা কিছু অর্জন ও প্রাপ্তি, সব কিছুর জন্য অভিনন্দন আরো একবার…

টেস্ট ও ওয়ানডেতে এখনো অনেক বড় ভূমিকা আছে তোর, দলকে দেয়ার আছে আরো অনেক

কিছু। আমি নিশ্চিত, তুই পারবি বন্ধু!’
মুশফিক অবসরের ঘোষণা দেয়ার পর মাহমুদউল্লাহও সমবেদনা জানিয়ে পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। রিয়াদ জানান, ‘প্রিয় মুশফিক, তোমার ঘোষণা শোনার পর আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। টি-টোয়েন্টিতে তোমার যা অর্জন ও যেমন ক্যারিয়ার গড়েছ তুমি, সেজন্য তোমাকে সাধুবাদ জানাই। তোমার সঙ্গে টি- টোয়েন্টিতে খেলতে পারা ছিল আনন্দদায়ক। তোমার কাজের নীতি যে কোনো ফরম্যাটে সবসময় সবার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক হয়ে থাকবে।’
এছাড়া নিজের ফেসবুক পোস্টে আরো শুভকামনা জানিয়েছেন বোলার রুবেল হোসেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুশফিকের সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করে রুবেল লিখেছেন, থ্যাংক ইউ মিস্টার ডিপেন্ডেবল। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। কিন্তু এটাও সত্য, আপনাকে বাংলাদেশ মিস করবে। আরও শুভেচ্ছা জানান আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান, সৌম্য সরকাররা। মুশফিকের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য তারাও শুভকামনা জানিয়েছেন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৬ সালে মুশফিকের টি- টোয়েন্টি অভিষেক ঘটে। এটি ছিল বাংলাদেশ দলের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাটিংয়ে রান পাচ্ছিলেন না তিনি। এশিয়া কাপে মুশফিকের ব্যাটিং নিয়ে মন্তব্য করেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা ম্যাচ চলাকালে ধারাভাষ্যকক্ষে তিনি বলেছেন, ১০০ এর বেশি ম্যাচ খেলেও স্ট্রাইক রেট ১১৫ কেন? মূলত মুশফিকের ছন্দ নিয়ে প্রশ্ন করেন তিনি। ১৬ বছরের এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১০২ ম্যাচে ১৯.৪৮ গড় ও ১১৫.৩ স্ট্রাইক রেটে ৯৩ ইনিংসে রান করেন ১৫০০। ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংস খেলেছেন। তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে রয়েছে ৬টি ফিফটি, ৪ বার ম্যাচসেরা, উইকেটকিপিংয়ে ৪২টি ক্যাচ আর ৩০টি স্ট্যাম্পিং। ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত এই ফরম্যাটে অধিনাকের দায়িত্ব পালন করেছেন মুশফিক। তার অধীনে ২৩টি ম্যাচের ৮টিতে জিতেছিলো টাইগাররা।
মুশফিকের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সেরা সময় ছিল ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত নিদহাস ট্রফি। ওই ট্রফিতে ১৬ ম্যাচে রান করেছিলেন ৩৯৭, স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩২.৩৩, গড় ছিল ৩০.৫৩। তবে এরপর আর নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি মুশফিক। ২০১৮ এর পর গত তিন বছরে ফিফটি মাত্র দুটি। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে করেন মাত্র ১৪৪ রান। ১১৩.৩৮ স্ট্রাইক রেটে খেলেছেন ৮টি ম্যাচ। মুশফিকের টি-টোয়েন্টিতে ছন্দে না থাকা ও স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনা চলছিল অনেকদিন থেকেই। শেষমেশ গতকাল আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলে দিয়েছেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়