ঢাকা কলেজ : ক্যান্টিনে খাওয়া নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

আগের সংবাদ

ভাঙা সড়কে খোঁড়াখুঁড়ির মচ্ছব : সড়ক খনন নীতিমালা উপেক্ষিত > তিন মাসের কাজ বছরজুড়ে > সেবা সংস্থার কাজে সমন্বয় নেই

পরের সংবাদ

গান সৃষ্টির গল্প…

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কিংবদন্তি গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার বিশ হাজারেরও বেশি গান লিখেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগ গানই অর্জন করেছে শ্রোতাপ্রিয়তা। কালজয়ী কয়েকটি গান সৃষ্টির গল্প থাকছে পাঠকদের জন্য

‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’
সংগ্রামের সময়ে নিজ তাগিদেই গান লেখা শুরু করেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। অনুভব করেছিলেন আন্দোলনে নামার তাগিদ। তাই কলমকে অস্ত্র বানিয়ে জড়িয়ে পড়েন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের আগে বেশ কিছু চলচ্চিত্রের প্রযোজনার সুবাদে চলচ্চিত্রের সঙ্গেও যুক্ত হয়ে পড়েন মাজহার। চলচ্চিত্রের জন্যই তিনি লেখেন ‘জয় বাংলা, বাংলার জয় / কোটি প্রাণ একসাথে জেগেছে অন্ধ রাতে…’, গানটির সুর করেছিলেন আনোয়ার পারভেজ। এ গানের জন্যই ‘জয় বাংলা’ ছবির কাজ শুরু হয়েছিল। যা মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রেরণাদায়ী একটি গানে পরিণত হয়। স্বাধীন বাংলা বেতারের অধিবেশন শুরু ও শেষ হতো এ গানের মাধ্যমে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়টাই যেন ছিল তার গান লেখার প্রেরণা।

‘হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু’সহ
অন্যান্য গান
এরপর ‘হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’, ‘যদি আমাকে জানতে সাধ হয়’সহ বেশকিছু গান লেখেন মাজহার। সত্য সাহার সুরে ‘যদি আমাকে জানতে সাধ হয়’ এবং খন্দকার নুরুল আলমের সুরে ‘একতারা তুই দেশের কথা’ গানগুলো সে সময় অসম্ভব জনপ্রিয় ছিল। গদ্যাকারেও লিখেছিলেন বেশকিছু গান, গানে গানে ফুটিয়ে তুলেছিলেন সেই সময়ের চিত্র। এর মধ্যে ‘বউ যায়গো পালকি চড়ে… দুরুম দুরুম গ্রেনেড ফুটছে, কাঁপছে তার বুক, মুক্তির নেশায় তবুও সে উন্মুখ’ অন্যতম। এছাড়া ‘বাছারে বাছা তুই আরেকটা দিন বাড়িতে থেকে যা, উড়কি ধানের মুড়ি এখনো হয়নি শেষ, এমনই করে রাখত ধরে আমার মা’-এর মতো গানও রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যা দেখেছেন, তাই যেন গানের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন এই মহান শিল্পী। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের গানেও মাজহারের দেশাত্মবোধের চেতনার প্রভাব পড়েছিল। যেমন ‘ওরা ১১ জন’ ছবির জন্য লিখেছিলেন ‘আমায় একটি ক্ষুদিরাম দাও বলে কাঁদিস নে মা…’ এর মতো গান।

‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনারগাঁয়ে’
অস্থির সময়ে যখন সবকিছুতেই পরিবর্তনের হাওয়া, গ্রাম ছেড়ে মানুষ শহরে চলে আসছিল। যান্ত্রিকতা জেঁকে বসছিল সবকিছুতে তখন জীবনের তাগিদে মাজহারও শহরে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু তার মন গ্রামের জন্য কাঁদত। ওই সময়ের আবেগ ফুটে উঠেছে তার লেখা ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনারগাঁয়ে’, ‘আমায় যদি প্রশ্ন করো’ গানে।

‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’
এক বিকালে সত্য সাহা একটি চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখতে বললে সে রাতেই মাজহার লিখে ফেলেন ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল…’ পরদিন সত্য সাহার কাছে নিয়ে গেলে তিনি দেখে বলেন, ‘তোরে দিয়া হইব।’

‘আছেন আমার মুক্তার, আছেন আমার বারিস্টার’
গাজী মাজহারুল আনোয়ার কখনো একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে থাকতে চাননি, রীতিমতো গান নিয়ে চালিয়েছেন গবেষণা। সময়ের সঙ্গে তার গানের বিবর্তন ঘটে। যেখানে এসেছিল আধ্যাত্মিক প্রভাব। তারই প্রতিফলন ‘আছেন আমার মুক্তার, আছেন আমার বারিস্টার’ কিংবা রথীন্দ্রনাথ রায়ের গাওয়া ‘সবাই বলে বয়স বাড়ে, আমি বলি কমে’ এর মতো দর্শকপ্রিয় গানগুলো।
‘আউল বাউল লালনের দেশে মাইকেল জ্যাকসন আইলোরে’
বাউলগানের প্রভাবে তিনি লিখেছিলেন, ‘আউল বাউল লালনের দেশে মাইকেল জ্যাকসন আইলোরে…’। বৈষ্ণব, কীর্তন, সর্বোপরি রাধা-কৃষ্ণের প্রভাবে লেখেন, ‘সাধকে মনমোহন হরি গোপীজন, মন চায় বাসরী’।
– বিনোদন ডেস্ক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়