ঢাকা কলেজ : ক্যান্টিনে খাওয়া নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

আগের সংবাদ

ভাঙা সড়কে খোঁড়াখুঁড়ির মচ্ছব : সড়ক খনন নীতিমালা উপেক্ষিত > তিন মাসের কাজ বছরজুড়ে > সেবা সংস্থার কাজে সমন্বয় নেই

পরের সংবাদ

‘আন্তর্জাতিক রুমি সম্মেলন’-এর সমাপনীতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী : জালাল উদ্দিন রুমি ছিলেন প্রকৃত স্রষ্টাপ্রেমিক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : যারা স্রষ্টার নৈকট্যে যাওয়ার জন্য ধর্ম চর্চা করেন তারা প্রকৃত ধর্মসেবী। আর এই দৃষ্টিকোণ থেকে জালাল উদ্দিন রুমি একজন প্রকৃত স্রষ্টাপ্রেমী ও সফল সাধক ছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। গতকাল রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ এবং আল্লামা রুমি সোসাইটি বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক রুমি সম্মেলন’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, রুমি ইসলাম ধর্মের চর্চা এবং ধর্মের প্রকৃত সৌন্দর্যের সাধনা করতেন। বিশ্বের সুফি সাধকরা রুমীর সাহিত্য ও দর্শন চর্চার মাধ্যমে ধর্মের প্রকৃত মমার্থ, মনুষ্যত্ববোধ ও মানবতাবোধ ধারণ, লালন ও চর্চা করেন। এসময় দেশের নতুন প্রজন্মকে ইসলাম ধর্ম বোঝার জন্য মাওলানা রুমিকে চর্চার আহ্বানও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ধর্মের উদার মানবিক দিকটি আমাদের জীবন থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়তই অনেক বেশি সংঘাত আর রেশারেশিতে জড়িয়ে পড়ছি। হিংসা বিদ্বেষের উল্টো দর্শন ভালবাসা, সেটার চর্চা করা খুব বেশি জরুরি যা আজ থেকে ৮০০ বছর আগে মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি চর্চা করে গেছেন।
তিনি বলেন, আমরা যদি চিন্তা করি আমাদের জীবনের জয়গান গাওয়ার জন্য কিছু দর্শন দরকার তাহলে মাওলানা রুমি এবং তার অনুসারীরা যে চর্চাটি করেছেন সেটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া খুব জরুরি। বাংলাদেশে ফারসি ভাষা চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে সেটাকে নতুন রূপ দিতে হবে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এই চর্চাটা শুরু করতে হবে।
সবাইকে বিশ্ব দর্শনের অনুসারী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলার রুমিখ্যাত আহমাদুল হক, তিনি এই সংস্কৃতির চর্চাটি করে গেছেন। আমাদের জীবন থেকে সংস্কৃতি হারিয়ে গেছে এবং ধর্মের সংস্কৃতি জীবন থেকে মুছে যাচ্ছে। এসময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি আহমাদুল হকের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রদানের আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, জালাল উদ্দিন রুমির দর্শন ও সাহিত্যকর্ম সবসময় প্রাসঙ্গিক। তাই তাকে আমরা এখনো স্মরণ করি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ ও হানাহানি নিরসনে রুমির মানবতাবাদী দর্শন ও সাহিত্যচর্চা আরো বেশি হওয়া দরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমান পৃথিবীর বড় সংঘাত হল মানুষের ভালবাসাহীনতা। নি¤œ শ্রেণির মানুষদের আমরা কেউ গণ্য করি না। যতদিন না তাদের মানুষ হিসেবে গণ্য করা হবে ততদিন পর্যন্ত মানবসভ্যতা পূর্ণতা লাভ করবে না। আর মাওলানা রুমি সেই ভালবাসার শিক্ষা আমাদের দিয়ে গেছেন। তার থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।
সম্মেলন আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ অধ্যাপক ড. অমিত দে, ঢাবি ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ও সম্মেলন আয়োজন কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন এবং আল্লামা রুমি সোসাইটি বাংলাদেশ-এর উপদেষ্টা সৈয়দ মাহমুদুল হক।
সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- সিরিয়ায় দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফাইরুজ আসতাজ, তুরস্কের সেলজুক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আলী তামিমেল, ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. চৈতালি মুখোপাধ্যায়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অদ্যাপক ড. আলিম আশরাফ খান, হায়দরাবাদ
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জানাইদ আহমেদ, শিলং নেহু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহনুরুর রহমানসহ ৭টি দেশের শিক্ষাবিদ ও গবষেকরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়