এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

সভাপতি-শিক্ষকরা একই পরিবারের! ডিমলায় শিক্ষার্থীশূন্য বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সরোয়ার জাহান সোহাগ, ডিমলা (নীলফামারী) : নীলফামারীর ডিমলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নে মডার্ন নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না থাকলেও গত জুলাই মাসে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কয়েক বছর ধরে বন্ধ থাকা একটি ভূতুড়ে প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ায় শিক্ষকরা আনন্দিত হলেও বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয় মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাঝে মধ্যে এর অফিস খোলা হলেও আসে না কোনো শিক্ষার্থী। তারপরও কীভাবে এমপিওভুক্ত হয় এই স্কুলটি, প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠানটি কাগজে-কলমে স্থাপন দেখানো হয়েছে। এমপিওভুক্ত আবেদনের সময় ২০২০ সালে সেখানে তৈরি করা হয় পুরনো টিনের ঘর। ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। নতুন ওই বিদ্যালয়ে তার বোন আতিকা বেগম ও ভগ্নিপতি আব্দুল মতিনকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষকের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান।
সরজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণি কক্ষে ৪-৫ জন শিক্ষার্থী বসে লুডু খেলছে। তাদের দুই একজনের কাছে স্কুলব্যাগ থাকলেও নেই খাতা-কলম। শিক্ষার্থী শূন্য বাকি দুটি শ্রেণিকক্ষ পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ। একটিতে মোটরসাইকেল ও অন্যটিতে কাঠখড় রাখা হয়েছে। অফিস কক্ষে বসে আছেন চারজন সহকারী শিক্ষক। বিদ্যালয়ের জায়গায় ঠিকাদারি কাজের জন্য সিসি ব্লকের স্তূপ।
অভিযোগ রয়েছে, গত জুলাই মাসে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকে গ্রামের ৫ থেকে ৭ জন শিক্ষার্থীদের বিনা পয়সায় প্রাইভেট পড়ানোর নামে শ্রেণি কার্যক্রম সচল দেখানো হচ্ছে। যদিও শিক্ষকরা দাবি করেছেন, এসব শিক্ষার্থী তাদের বিদ্যালয়ের। তখন শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে শিক্ষকরা তা দেখাতে পারেননি। বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি বলেন, এই বিদ্যালয়ে অন্য প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ধার করে এনে ভর্তি দেখানো হয়েছে। তাদের দিয়েই ভর্তি ও পরীক্ষার্থী হিসেবে দেখানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান ঠিকাদারি কাজে ব্যস্ত থাকেন বলে বিদ্যালয়ে সময় দিতে পারেন না।
এমপিওভুক্ত হওয়ার শর্ত হলো প্রত্যেক শ্রেণিতে কমপক্ষে ৩০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। আর পাবলিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ২৫ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া বিদ্যালয়ে একটি খেলার মাঠ থাকতে হবে। নিজস্ব জমি থাকতে হবে। কাগজে-কলমে জমি থাকলেও বাস্তবে এই বিদ্যালয়ের দখলে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি নেই।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে না এলে শিক্ষকরা কী করবে তবে বিদ্যালয়ে না এলেও পরীক্ষায় ঠিকই অংশগ্রহণ করেন তারা। তবে বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছি।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মোখলেছুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আমার জানা নেই। আজকে ৫ জন উপস্থিত হয়েছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, শুরুতে নয়ছয় করে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করায়নি এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে এমপিওভুক্ত যেহেতু হয়েছে, আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। শিক্ষকদের বলেছি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ১৪ হাজার টাকা আছে। সেই টাকা দিয়ে টিন কিনে বারান্দা তৈরি করতে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, যারা এমপিও দিতে পারেন, অনিয়ম হলে তারা বাতিলও করতে পারেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়