এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

পূজা আসছে : সরকারের কঠোরতা দেখতে চাই

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা আসন্ন প্রায়। দুর্গাপূজা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনের ভেতরেও অজানা আশঙ্কা দানা বেঁধে উঠতে থাকে। এবারো না জানি কোথায় কী কৌশলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসে! কয়েক বছরের দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় আমাদের মনের ভেতর এরূপ আতঙ্ক ও আশঙ্কাই বাসা বেঁধেছে। তাই উৎসবের আনন্দের চেয়ে ভেতরে ভেতরে চাপা কষ্টের গুঞ্জরনই বেশি ধ্বনিত হয়। পূজার সময় বাইরে বাইরে উৎসবের সাজ-সাজ একটা ভাব থাকে বটে- কিন্তু ভেতর-মহলে সারাক্ষণই আতঙ্ক ও আশঙ্কার দোলাচলে অস্থির চিত্তে উৎকর্ণ হয়েই সময় কাটাতে হয়। বিসর্জনের লগ্ন শেষ না হওয়া পর্যন্ত উৎসব চললেও এর সমান্তরালে ভীতিকর এক ত্রাহি অবস্থাই বিরাজ করে। দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া মহলবিশেষের উগ্র উন্মাদনা ইদানীং চারদিকে। হিন্দু সম্প্রদায়কে এই আতঙ্ক ও আশঙ্কা থেকে মুক্তি দিতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে পূজা শুরুর আগে থেকেই মাঠে তৎপর হতে হবে। তৎপরতা বাড়াতে হবে গোয়েন্দা নজরদারিরও। আমরা চাই না কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠান কিছুসংখ্যক বিপথগামী উগ্রবাদীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়–ক। বাংলাদেশের শাশ্বত সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐকতানে সমাজে সুস্থির চিন্তার প্রসার ঘটাতে হবে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ এবং সর্বোর্ধ্বে স্থান দিয়ে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব নৃগোষ্ঠীর মানুষকে তাদের স্ব-স্ব ধর্মীয় উৎসবাদি নির্বিঘœ ও আনন্দে উদযাপনের সুযোগ দিতে হবে।
এক সম্প্রদায়ের মানুষ অন্য সম্প্রদায়ের উৎসব-আনন্দের ভাগিদার হবেন। পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে বসবাসের মাধ্যমে সব সম্প্রদায়ের মানুষ বাংলাদেশের শাশ্বত সৌন্দর্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরবেন। মহত্তর মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সবাই যার যার ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করবেন। এতেই বাঙালির চিরকালীন সৌন্দর্যের প্রকাশ, এটাই বাঙালির শাশ্বত সৌন্দর্যের পরিচয়। আমরা বলি ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। আবার এও বলি যে, আমরা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে যোগ নাও দিতে পারি- তাই বলে ‘ছলে বলে কৌশলে’ কোনোক্রমেই কোনো সম্প্রদায়ের কোনো উৎসবেই বাধা দিতে পারি না। প্রতিবন্ধকতা তৈরিই অগণতান্ত্রিক আচরণ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের যে ৪টি মৌল স্তম্ভ ছিল তার মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা বা অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ অনন্য। স্বাধীন দেশের মহান সংবিধানেও গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ- এই ৪টি স্তম্ভ মর্যাদার সঙ্গে স্থান পায়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাঙালির সংবিধানটিকেও ছিন্নভিন্ন করে ফেলা হয়। অসাম্প্রদায়িক চেতনার মর্মমূলে আঘাতের মধ্য দিয়ে শাশ্বত ভ্রাতৃত্ববোধ বিনাশ করা হয়। তারপর থেকেই বাংলাদেশ পুনরায় পশ্চাদপদ মানসিকতায় ফিরে যায়। ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়গুলোকে সামনে এনে স্বৈরাচারী শাসকগণ নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে এক শ্রেণির উগ্রবাদ দ্রুত বিকশিত হয়। কলুষিত সেই রাজনীতির আশ্রয়-প্রশ্রয়েই ধীরে ধীরে আমাদের সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠের ‘শান্তির ধর্ম’রূপে প্রসিদ্ধ ইসলামের নামে সামাজিক উগ্রবাদের প্রাধান্য বিস্তার ঘটতে থাকে। তাই প্রতিনিয়ত এ দেশে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসবে হামলার পর হামলা ঘটতে থাকে। বারবার এরূপ হামলা ও নাশকতার পুনরাবৃত্তি ঘটায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানসিক শক্তি হ্রাস পেতে থাকে। সাম্প্রতিককালে এসব হামলা মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা প্রাঙ্গণ থেকে সংখ্যালঘুর বাড়িঘর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে গেছে। নানা উসিলায় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, খুন, ধর্ষণ প্রভৃতির মতো ভীতিকর কর্মকাণ্ডও প্রায়ই ঘটছে। কিন্তু বিচারিক ব্যবস্থাপনায় আমাদের আশাবাদের তেমন জায়গাই তৈরি হয়নি!
মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দুষ্কৃতকারীদের কৌশলের সঙ্গে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন কিছুতেই পেরে উঠছে না! কী কৌশলে গত বছর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দিঘির পাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন শরিফ রেখে সাম্প্রদায়িক উসকানির সৃষ্টি করা হলো! এমন ঘটনা ঘটবে তা হিন্দু, মুসলিম কেউ স্বাভাবিকভাবে চিন্তাও করতে পারে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এমন ঘটনার কথা ধারণাও করতে পারেনি। পরিকল্পিত সে ঘটনার জের ধরে গত বছর পূজা চলাকালীন কমপক্ষে ১৮টি জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিস্তার ঘটে। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়ে যেমন আঘাত করা হয় তেমনি তাদের বাড়িঘরেও হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দুঃখের বিষয় এরূপ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক আইনি বিচার কিংবা কঠোর কোনো সামাজিক শাস্তি হয়েছে বলেও আমরা এখনো জানি না। সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া কোথায় কীভাবে থেমে যায় তাও আমাদের জানা নেই। কোনো একটি ঘটনার সুষ্ঠু ও যথাযথ বিচার সম্পন্ন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর হলে সমাজে এ জাতীয় অপরাধ-প্রবণতা হ্রাসের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু একপ্রকার বিচারহীনতাই বরং উগ্রবাদীদের উৎসাহী করে তোলে। এবার দুর্গাপূজার শুরুর আগেই গত ২৫ আগস্ট মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় ভাদিয়ায় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে গেল! এ ঘটনা থেকে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শিক্ষা গ্রহণ না করে তবে আসন্ন দুর্গাপূজা যে খুব বেশি নির্বিঘœ হবে এমনটা ভাববার অবকাশও কম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা প্রশাসন যদি মনে করে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা তবে মারাত্মক ভুল হবে। মানিকগঞ্জের মণ্ডপের ভেতর প্রতিমা ভাঙচুরের মাধ্যমে দুষ্কৃতকারীরা এ বছর তাদের মহড়াটিই সম্পন্ন করে নিল যেন! এসব অপরাধীকে গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার আইনে শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে আসন্ন দুর্গাপূজা উদযাপন কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক হতে পারত। কিন্তু প্রশাসন সে দিকে নজর দেবে কি!
সংখ্যায় যারা কম আমরা তাদের ওপরই নানাভাবে আক্রমণ সংগঠিত হতে দেখি- আর এই আক্রমণ বিশেষ করে ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই বেশি সংগঠিত হয়। কেননা ধর্মের প্রতিই সবার শেষ আশ্রয়- তাই সবল সংখ্যাগরিষ্ঠরা সব সময় দুর্বল সংখ্যালঘুর ওপরই চড়াও হয়। কিন্তু বাঙালির শাশ্বত সংস্কৃতির যে মূল সুর তার মধ্যে এরূপ সহিংসতার চর্চা ছিল না। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ভেতর এবং শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত স্থূল চিন্তার এক শ্রেণির শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের মনের ভেতর সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক মনোভাব তৈরিতে নানাভাবে সক্রিয় আছে। ফলে সামগ্রিক শিক্ষা কাঠামোর মধ্যেও পরোক্ষভাবে এমন সাম্প্রদায়িক চেতনাপ্রসূত অসঙ্গতি স্থান পেয়েছে। কীভাবে? স্কুলের একজন মৌলবি শিক্ষক ছাত্রীদের এভাবে যদি বলেন, ‘আমরা পুরুষ মানুষ হয়ে যেখানে ফুলহাতা জামা পরি আর তোমরা মেয়ে মানুষ হয়ে হাফহাতা জামা কী করে পরো?’ কিংবা ‘তোমরা কপালে যেখানে টিপ পরো হাশরের ময়দানে সেখানে আগুনের সিল মারা হবে।’ এ ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা-প্রকাশক উপদেশ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে বিপন্ন করে দেয়। এরূপ ঘটনা আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি স্কুলে কোনো না কোনোভাবে প্রায় নিয়মিতই ঘটে। সে তুলনায় সংস্কৃতিগত শিক্ষার প্রসার একেবারে শূন্য। এজন্যই এককালে স্কুলের ইউনিফরম সম্পর্কে যে বাধ্যবাধকতা ছিল ক্রমশ তা শিথিল হয়ে গেছে। ‘ড্রেস কোড’ বলতে কোনো বিধি নেই! অতিরিক্ত হিসেবে হিজাব যুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ দেশে অপ্রীতিকর ঘটনাও নিকট অতীতে বহু ঘটেছে। উগ্র মানসিকতার কাছে হেরে গেছে ‘ড্রেস কোড’ সম্পর্কিত কঠোর নিয়মও। আবার সামাজিকভাবে নারীদের প্রতি নিপীড়ন, উসকানি বা ইভটিজিং বৃদ্ধি পাওয়ায়ও কোথাও কোথাও হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী শিক্ষার্থীদের বোরকা পরে স্কুল-কলেজে যাতায়াতের ঘটনাও আমাদের বিমর্ষ করে! বাঙালির শাশ্বত ঐতিহ্যিক কোনো ঐক্যের সুর সংস্কৃতিচর্চা ও জীবনযাপনের মধ্যে লক্ষণীয় রূপে ফুটে ওঠে না। বিচিত্র নিয়মে চলছে একেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইন-কানুন বিধি। শিক্ষক ও স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বিধাবিভাজিত দর্শনও এরূপ বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, এখন শত চেষ্টায়ও সব কিছু নিয়মের ছকে বাঁধা যাবে না- দুরূহ হয়ে পড়েছে সব। বিতর্ক এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে সবকিছুকে আমরা ঘোলাটে করে ফেলি- সমালোচনার তুমুল ঝড়ে লণ্ডভণ্ড করে ফেলি! সেই পরিস্থিতি থেকে যে যার মতো সুবিধাটুকুই লুফে নিই!
‘কায়মনে বাঙালি’ হওয়ার যে আকুলতা পরাধীন পাকিস্তান আমলে দেশবাসীর মধ্যে ছিল তা আজ অভ্যন্তরীণ রাজনীতির নানা ঘাত-প্রতিঘাতে বিলুপ্ত প্রায়। তাই স্বাধীন রাষ্ট্রে আমরা দেখি বাঙালিত্বের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্যীয় সংস্কৃতিতে আপ্লুত হওয়ার উদগ্র বাসনা! আদর্শভিত্তিক রাজনীতির চেয়ে ক্ষমতার রাজনীতিকে আরাধ্য ভাবার ফলে ১৯৭৫ সালের পরবর্তী সময়ে তথাকথিত বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে স্বৈরশাসকরা ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পথ তৈরি করে দেয়। এই পথ বেয়েই স্বাধীনতাবিরোধীরা আমাদের সমাজে ধর্মের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠের আস্ফালন বৃদ্ধি করে চলে! ইসলাম ছাড়া অন্যান্য ধর্মের বিষয়ে তাদের নেতিবাচক মানসিকতা নানাভাবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বাহিত করে সমাজে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে- দুর্গোৎসবের সময় এরই পরিণাম আমরা আতঙ্কের মধ্যে উপলব্ধি করে থাকি। সামগ্রিকভাবে সমাজ এমন এক অনিকেত গন্তব্যের পথে নিমজ্জমান যে, মূল্যবোধ বলি, নিয়ম-কানুন বলি সবই নানা কারণে এলোমেলো ও বিপন্ন হয়ে গেছে! বাঙালির শাশ্বত সংস্কৃতির মধ্যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্ফূরণ দেখতে চাই- দেখতে চাই মহলবিশেষের উসকানি ও ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান। সরকারের কঠোর অবস্থানই পারে আতঙ্ক ও আশঙ্কা কাটিয়ে আসন্ন দুর্গোৎসব নির্বিঘœ ও আনন্দময় করতে।

আহমেদ আমিনুল ইসলাম : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়