এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : নকশা জটিলতায় ফের বন্ধ মসজিদ নির্মাণের কাজ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নুর হাছান নাঈম, জাবি প্রতিনিধি : শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে চলতি বছরের এপ্রিলে শুরু হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হল ও আ ফ ম কামালউদ্দিন হল সংলগ্ন জরাজীর্ণ মসজিদ ভেঙে নতুন মসজিদের নির্মাণকাজ। সে সময় প্রায় দুই মাস কাজ বন্ধ থেকে পুনরায় জুন মাসে পুরাতন মসজিদটি ভাঙা হয়। তবে দুটি হলের শিক্ষার্থী অনুপাতে নতুন মসজিদের ধারণক্ষমতাসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা খুব সীমিত দাবি করে আগের নকশা পরিবর্তন করে ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোসহ কয়েক দফা দাবি জানায় সংশ্লিষ্ট হলের শিক্ষার্থীরা। এতে করে পুনরায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে নতুন মসজিদের নির্মাণ কাজ। এ বিষয়ে শহীদ সালাম-বরকত হল থেকে বলা হয়, কনসালট্যান্ট ফার্ম অ্যাকুমেনকে একাধিকবার বলার পর গত আগস্ট মাসের শুরুর দিকে ব্যাকডেটের মাধ্যমে বিস্তারিত নকশা প্রদান করেন তারা। এতে দেখা যায় নকশাতে মসজিদের নিচতলায় ২৪৮ জন এবং দোতলায় ২৮৬ জনসহ মোট ৫৩৪ জনের নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। তাছাড়া সেখানে মাত্র একটি টয়লেট ও অজুখানার ব্যবস্থা রাখা হয়। তবে বাজেটে স্যানিটারি ও পয়ঃনিষ্কাষণ বাবদ ১৩ লাখ ৯১ হাজার এবং বৈদ্যুতিক কাজ বাবদ ১৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে নকশা বিষয়ে সালাম-বরকত হলের সেই সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রভোস্ট অধ্যাপক আলী আজম তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি যে কাগজে সাইন করেছিলাম সেখানে ধারণক্ষমতা ৭৫০ জন লেখা ছিল। আমি যেটা জানতাম সেটাই আমি সবাইকে বলেছি। কিন্তু সালাম-বরকত হল অফিসে মসজিদ নির্মাণসংক্রান্ত নথি যাচাই করে দেখা যায় সেখানে গত বছরের ১০ এপ্রিল ৫৩৪ জন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন আলী আজম তালুকদারের স্বাক্ষরিত মসজিদের নকশা (ফ্লোর প্ল্যান) পাওয়া যায়। এ বিষয়ে পরবর্তীতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা তো হতেই পারে না। আমি পাঁচ-ছয়শ জনের কোনো নকশায় সাইন করিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১১টি আবাসিক হলে প্রায় ১২ কোটি টাকার সংস্কার কাজের বরাদ্দ দেয়া হয়। সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য দুই হলের সংস্কার বাবদ প্রাপ্ত অর্থ থেকে এক কোটি এবং কামালউদ্দিন হল থেকে ২০ লাখসহ মোট ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নথিতে নতুন মসজিদ নির্মাণের উল্লেখ নেই বা মসজিদের কাজের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ নেই।
বিদ্যমান সমস্যার সমাধান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সালাম-বরকত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু বলেন, মসজিদ নির্মাণ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দুই তলা মসজিদে পর্যাপ্ত ধারণক্ষমতা না থাকায় আমরা বড় করে একতলা নির্মাণের চিন্তাভাবনা করছি। যেখানে পরবর্তীতে দুই তলা বা বেশি করার মতো ফাউন্ডেশন করা হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে নতুন করে নকশা প্রণয়ন করে সেটার অনুমোদন নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।
আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ইনিশিয়ালি আমাদের ধারণক্ষমতা বেশি জানানো হয়েছিল কিন্তু পরে জানলাম ধারণক্ষমতা অনেক কম। আমাদের হয়তো ভুল জানানো হয়েছিল। যেহেতু মসজিদের দায়িত্ব এখন সালাম-বরকত হলে রয়েছে সেহেতু প্রভোস্টের সঙ্গে ছাত্রদের দাবি মাথায় রেখে বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে কীভাবে এটার বেস্ট ইউজ করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করব।
মসজিদ নির্মাণে নিয়োজিত মেসার্স ফরমিলা আক্তার কনস্ট্রাকশনের এমডি দাইয়ান বিন শাহজাহান ভোরের কাগজকে বলেন, কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। কর্তৃপক্ষ থেকে তারা আমাদের অ্যাপ্রæফড ড্রয়িং ডিজাইন দিলেই কাজ শুরু করব।
শহীদ সালাম-বরকত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আস সাদিক বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়েছে। তাই মসজিদ নির্মাণের ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাশাপাশি অন্যান্য সুবিধাও থাকতে হবে। রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধে এবং এর যথেচ্ছ ব্যবহারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা প্রয়োজন। তাই নকশার আলোকে অতিসত্বর কাজ শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।
তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গত শুক্রবার মসজিদে জুমার নামাজে দুই হলের কয়েকশ শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ইভিনিং কোর্সের শিক্ষার্থীরা নামাজ পড়তে আসে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের উপস্থিতিও অনেক। কিন্তু বর্তমানে ছাউনি দেয়া অস্থায়ী টিনশেড মসজিদের বাইরে পাটিতে নামাজের জায়গা না পেয়ে অনেকে ফিরে যান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়