এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

গোল্ডেন গøাভস জিতবেন যারা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আগামী ২০ নভেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে পর্দা উঠছে বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসরের। আয়োজক দেশ কাতার ইতোমধ্যে সময়সূচি নির্র্ধারণ, মাঠে গড়ানোর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে। বাছাইপর্বের মাধ্যমে চূড়ান্ত হয়েছে অংশ নেয়া ৩২টি দলও। এখন অপেক্ষা শুধু মাঠে গড়ানোর। ফুটবলে অন্যান্য খেলোয়াড়ের মতো গোলরক্ষকের ভূমিকাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিপক্ষের আক্রমণ দারুণ দক্ষতায় রুখে দিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দেন তিনি। কখনো তার অতি মানবীয় পারফরম্যান্স দলকে দেয় জিতিয়ে, আবার কখনো তার ভুল ভরাডুবি ঘটায় একটি দলের। তিন কাঠির গোলপোস্টে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে তেড়ে আসা বলটিকে জালে জড়াতে না দিয়েও হওয়া যায় সেরা। বিশ্বকাপের প্রতি আসরে গোল্ডেন গøাভস পুরস্করাটি প্রদান করা হয় টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষককে।
আসন্ন কাতার বিশ্বকাপে গোল্ডেন গøাভস জয়ের দৌড়ে এগিয়ে আছেন বেশ কয়েকজন গোলরক্ষক।
অ্যালিসন বেকার : ব্রাজিলের গোলপোস্ট সামলানোর দায়িত্বে আছেন অ্যালিসন বেকার। বর্তমানে তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের জনপ্রিয় ক্লাব লিভারপুলে খেলে থাকেন। দেশের হয়ে এ পর্যন্ত ১টি ফিফা বিশ্বকাপে (২০১৮) অংশ নেন এই গোলকিপার। এছাড়া ২০১৬, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকায় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। ২০১৯ সালে কোপা আমেরিকা জয়ী দলের অন্যতম সদস্য তিনি।
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ : বর্তমান সময়ে দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম সেরা গোলরক্ষক আর্জেন্টিনার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আসন্ন কাতার বিশ্বকাপে দেশটির গোলপোস্ট সামলাবেন তিনি। ২০২১ সালে দেশটির পঞ্চদশ কোপা আমেরিকা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি। এই প্রতিযোগিতায় তিনি জিতেন সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার। এছাড়া উইরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ফিনালিসিমায় ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে রুখে দেওয়ার ম্যাচে দারুণ সেভ করেন তিনি। লা আলবেসিলেস্তেদের হয়ে খেলতে নেমে এখনো পর্যন্ত কোন হারের স্বাদ পাননি এই তারকা গোলরক্ষক। তার খেলা ১৯টি ম্যাচের মধ্যে ১৫টি জয় এবং চারটি ম্যাচে ড্র করেছে লিওনেল মেসির দল। এমন দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের মাধ্যমে আর্জেন্টিনা গোলবারের নিচে আস্থার প্রতীক মার্টিনেজ। এবার অ্যাস্টন ভিলার হয়ে মাঠ মাতানো এই তারকার লক্ষ্য বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষক হওয়া।
ম্যানুয়েল নয়ার : সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়ার। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। ‘সুইপার কিপার’ হিসেবে পরিচিত ছয় ফুট চার ইঞ্চি লম্বা এই গোলরক্ষক পেছনে থাকলে ডিফেন্ডাররা বাড়তি সুবিধা পান।
থিবাউট কোর্তোয়া : ২০১৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতেছিলেন বেলজিয়ামের গোলরক্ষক কোর্তোয়া। ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার এই গোলরক্ষককে সময়ের সেরা বললেও কেউ হয়ত খুব বেশি দ্বিমত করবে না। গত মৌসুমে লা লিগার পাশাপাশি ফাইনালে ম্যাচসেরা হয়ে রিয়াল মাদ্রিদকে চতুর্দশ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা এনে দিয়েছিলেন এ বেলজিয়ান। দেশকে প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ দিতে কাতারেও সেরকমই কিছুর পুনরাবৃত্তি করতে হবে ৩০ বছর বয়সী এ গোলরক্ষককে।
এদুয়ার্দো মেন্ডি : গত দুই বছরে প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন সেনেগালের গোলরক্ষক এদুয়ার্দো মেন্ডি। ২০২০ সালে চেলসিতে যোগদানের পর গত বছর ২৬ বছর পর প্রথম আফ্রিকান গোলরক্ষক জিতে নিয়েছেন উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ সম্ভাব্য সব আন্তর্জাতিক শিরোপা। পেয়েছেন উয়েফা এবং ফিফার বর্ষসেরা গোলরক্ষকের পুরস্কারও। এছাড়া দেশকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আফ্রিকান নেশন্স কাপ জেতাতেও ৩০ বছর বয়সী গোলপ্রহরী রেখেছিলেন অগ্রণী ভূমিকা। এই টুর্নামেন্টে তিনি পান সেরা গোলরক্ষকের স্বীকৃতি।
বিশ্বকাপের প্রতি আসরের সেরা গোলরক্ষককে দেওয়া হয় গোল্ডেন গøাভস। ১৯৯৪ সালে প্রয়াত সোভিয়েত কিংবদন্তি গোলকিপার লেভ ইয়াসিনের স্মরণে এই পুরস্কার প্রদানের প্রচলন করা হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয় গোল্ডেন গøাভস। ফিফা টেকনিক্যাল কমিটি পুরো আসরের গোলকিপারদের পারফরমেন্স বিবেচনা করে এই পুরস্কার দিয়ে থাকে। যদিও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার গোল্ডেন বলের জন্যেও গোলকিপাররা মনোনীত হয়ে থাকেন। ২০০২ সালে জার্মান গোলরক্ষক অলিভার কান গোল্ডেন বল জিতেছিল।
১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের গোলরক্ষক মাইকেল প্রæডহোম অবিস্মরণীয় পারফরম্যান্স প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো গোল্ডেন গøাভস তথা তৎকালীন ইয়াসিন এওয়ার্ড জয় করেন।
১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে স্বাগতিক ফ্রান্সের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের পথে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন গোলরক্ষক ফ্যাবিয়েন বারথেজ। যা তাকে লেভ ইয়াসিন এওয়ার্ড জিততে সাহায্য করে। ২০০২ সালের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় এশিয়ার দেশ জাপান ও কোরিয়ায়। একবিংশ শতকের প্রথম এই বিশ্বকাপে একজন গোলকিপারের টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
সেবার জার্মান গোলরক্ষক অলিভার কান তার অতিমানবীয় পারফরমেন্সের মাধ্যমে ফাইনালের আগ পর্যন্ত নিজেদের রক্ষণভাগকে দুর্ভেদ্য দেয়াল করে রেখেছিল। ফলে একই সঙ্গে গোল্ডেন বল ও লেভ ইয়াসিন এওয়ার্ড দুইই জয় করে তিনি। ২০০৬ সালে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের আসরে সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতেন ইতালির জিয়ানলুইজি বুফন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০১০ সালের বিশ্বকাপে ইকার ক্যাসিয়াস সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হন। এই বিশ্বকাপেই প্রথমবারের মতো গোলকিপারকে লেভ ইয়াসিন এওয়ার্ডের পরিবর্তে গোল্ডেন গøাভস পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে গোল্ডেন গøাভস জিতেন জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়ার। সবশেষ রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ২১তম আসরে সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতেন থিবাউট কোর্তোয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়