এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

ক্রেতা না থাকায় মিলাররা দাম কমাচ্ছেন : নওগাঁর মোকামে কমতে শুরু করেছে চালের দাম

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আবু বকর সিদ্দিকী, নওগাঁ থেকে : বাজারে আউশ ধান ওঠায় এবং ওএমএস-খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু থাকায় নওগাঁর মোকামে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। সপ্তাহখানেক আগে মোটা চাল প্রতি কেজি ৫৫ টাকায় বিক্রি হতো। এখন সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার আশপাশে। এছাড়া কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা কমেছে মাঝারি ও সরু চালের দাম। ফলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের দাম বাড়ার যে প্রবণতা চলছিল, তাতে আপাতত লাগাম পড়েছে।
এর আগে গত আগস্ট মাসের শুরুর দিকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহন খরচ বাড়ার অজুহাতে সব ধরনের চালের দাম মানভেদে ৫-৭ টাকা বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা।
তবে গত ৩০ আগস্ট চালের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার ও গরিব মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য গত বুধবার থেকে সরকার ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করায় চালের বাজার কমতে শুরু করেছে। মিলমালিক ও চালের আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চালের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকেই মিলে উৎপাদিত চালের ফরমাশ (অর্ডার) কমতে শুরু করেছে। অনেকে আগের দেয়া ফরমাশ বাতিল করেছেন।
এছাড়া গত বুধবার থেকে সারাদেশে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কার্যক্রম চালু হওয়ায় খুচরা বাজারে চালের চাহিদা কমে গেছে। এর ফলে খুচরা চাল বিক্রেতারাও মোকাম থেকে চাল কেনা কমে দিয়েছেন। আমদানি করা চাল ইতোমধ্যে খোলা বাজারে আসতে শুরু করেছে। এছাড়া বাজারে ওঠা নতুন ধানের (আউশ ধান) দাম থাকায় এই ধানের চাল উৎপাদিত হয়ে বাজারে উঠলে আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে চালের দাম আরো কমে যেতে পারে।
গতকাল শনিবার নওগাঁর মোকামে সরু চাল মিনিকেট (শর্টার জিরা) বিক্রি হয়েছে ৬৪ টাকায়। গত সপ্তাহে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৬৬ টাকায়। এছাড়া সরু চাল হিসেবে পরিচিত নন-শর্টার জিরা চালের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি দুই টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। কাটারি চালের দাম কেজিপ্রতি তিন টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৬৩ টাকায়। এছাড়া মোটা চাল বিআর-২৮ ও ব্রি-৪৯ চালের দাম কেজিতে ৪ টাকা কমে বর্তমানে ৪৯-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও নওগাঁ সদর উপজেলায় দুটি রাইস মিলের মালিক তৌফিকুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, সরকার চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিয়েছে। শুল্ক কমায় ইতোমধ্যে চাল আমদানি বেড়েছে। এছাড়া ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এসব কারণে স্বাভাবিক কারণেই চালের বাজারে প্রভাব পড়েছে। মোকামে চাল বিক্রি কমে যাওয়ায় মিলাররা বাজার থেকে ধান কেনা কমে দিয়েছে। ফলে বাজারে ধানের দাম প্রতি মণে ২০০ টাকা কমে গেছে। এছাড়া প্রতি লিটার তেলের দাম ৫ টাকা কমায় কিছুটা হলেও ধান-চালের পরিবহন খরচ কমেছে। এসব কারণে চালের দাম কেজিতে ২-৪ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
নওগাঁ শহরের আলুপট্টি মোকামে চালের আড়তদার মেসার্স ইরা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার ও সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালুর কারণে বাজারে চালের দাম আরো পড়ে যেতে পারে এমন ভয়ে ঢাকাসহ দেশের বড় বড় বাজারের মহাজনরা চাল কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। অনেকে আগে যেসব অর্ডার দিয়েছিলেন সেগুলো বাতিল করছেন। এ অবস্থায় মিলাররা বেশি লাভের আশা ত্যাগ করে দাম কমিয়ে উৎপাদন করা চাল বিক্রির চেষ্টা করছেন। কারণ আগামীতে চালের দাম আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন মিলাররা।
এ ব্যাপারে নওগাঁ চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার ভোরের কাগজকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে মোকামে ক্রেতা নেই বললেই চলে। দিনের পর দিন মোকাম ক্রেতাশূন্য থাকায় মিলাররা দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন। সব ধরনের চালের দাম মানভেদে প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। নতুন ধান পুরোদমে বাজারে উঠলে এবং আমদানি করা চাল আরো বেশি পরিমাণে স্থানীয় বাজারে এলে চালের দাম আরো কমে যাবে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়