এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

‘অসীমে অমিত’ : সাংবাদিক তৈরির কারিগর ছিলেন অমিত হাবিব

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশে সাংবাদিকতার নতুন ধারা যাদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল অমিত হাবিব ছিলেন তাদের অন্যতম। তিনি নির্মোহভাবে, সততার সঙ্গে সাংবাদিকতা করে গেছেন। অমিত হাবিব চলে গেলেও তার কর্মের মধ্যে দিয়ে তাকে সাংবাদিক সমাজ সব সময় স্মরণ করবে। তার মৃত্যু সৎ সাংবাদিকতার অপূরণীয় ক্ষতি।
বরেণ্য সাংবাদিক ও দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক অমিত হাবিব স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এভাবেই তাকে মূল্যায়ন করা হয়। গতকাল শনিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে দেশ রুপান্তর পত্রিকা আয়োজিত ‘অসীমে অমিত’ শীর্ষক এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এতে অমিত হাবিবকে কথামালায় স্মরণ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সুকান্ত গুপ্ত অলক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া, দেশ রূপান্তরের প্রকাশক মাহির আলী খাঁন রাতুল, সাংবাদিক গাজী নাসির উদ্দীন খোকন, লেখক কলামিস্ট ড. এমএ মোমেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী। পরিবারের পক্ষ থেকে কথা বলেন অমিত হাবিবের ছোট ভাই ফয়জুল হাবিব রাঙা।
সঞ্চালনা করেন আহমেদ মনিরুদ্দিন তপু। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাঁশিতে করুণ সুর পরিবেশন করেন সৌরভ সরকার। স্বাগত বক্তব্য দেন দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কথাসাহিত্যিক মোস্তফা মামুন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭৩ বছর। অমিত হাবিব সে হিসেবে অনেক আগেই চলে গেলেন। কিছু মানুষ মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করে যায়। অমিত হাবিব দেশের সাংবাদিকদের সমৃদ্ধ করে গেছেন। তিনি ছিলেন সাংবাদিক তৈরির কারিগর।
তিনি বলেন, অমিত হাবিবের সঙ্গে তার কাজের মধ্য দিয়ে আমার সঙ্গে পরিচয়। তিনি নিয়ম ভাঙার একজন মানুষ ছিলেন। খবরের পেছনের খবর, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে তিনি গুরুত্ব দিতেন। তিনি বেঁচে থাকলে সংবাদমাধ্যমকে আরও এগিয়ে নিতে পারতেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, তিনি চমৎকার মানুষ ছিলেন। যৌক্তিক কাজগুলো করতে পছন্দ করতেন। সমাজতন্ত্রের ভাবধারা ছিল তার আদর্শ। সমাজ পরিবর্তনের যে আকাক্সক্ষা নিয়ে তিনি কলম ধরেছিলেন তার অনেকটাই পূর্ণ হয়েছে। সাংবাদিকরা সরকারের ভুল ত্রæটি ধরে দেন। এই ভুল যদি ধরিয়ে দেয়া না হতো তাহলে সংশোধনের সুযোগ থাকত না।

অমিত হাবিবের ছোট ভাই ফয়জুল হাবিব রাঙা বলেন, আমাদের পরিবারের গর্ব করার মতো কয়েকটি বিষয় আছে। পরিবারের অনেকেই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। আমার বাবার যোগ্য উত্তরসূরী ছিলেন আমার বড় ভাই অমিত হাবিব। বাবার মৃত্যুর পর তিনিই ছিলেন আমাদের পরিবারের ছায়া।
সুকান্ত গুপ্ত অলক বলেন, কর্মসূত্রে আজকের কাগজ পত্রিকায় আমাদের পরিচয়। অমিত দা ছিলেন অত্যন্ত গুণী একজন সম্পাদক। তার পাণ্ডিত্য ছিল অসীম। পেশাগত জীবনে তার ব্যক্তিক পরিমণ্ডল ছিল অনেক অনন্য। অনেক সাংবাদিকের বিনির্মাণ তারই হাতে।
মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, অমিত হাবিবের মৃত্যু সাংবাদিকতার একটা বড় ক্ষতি। ভালো সাংবাদিক হয়ে ওঠা এখন অনেক কঠিন। সবমিলিয়ে একটি ভালো সংবাদপত্র প্রতিদিন উপহার দেয়া সহজ নয়। অমিত হাবিব তা পারতেন। অমিতের অনুপস্থিতিতে তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তার কাছে কাজ শেখা সাংবাদিকরা নিজেদের কাজ সৎভাবে করে যাবেন এই প্রত্যাশা আমাদের।
মামুনুর রশীদ বলেন, অমিত হাবিবের সঙ্গে আমার পরিচয় সংঘাত দিয়ে। তিনি একসময় নাটকের সমালোচনা লিখতেন। আমাদের একটি নাটকের সমালোচনা লিখেছিলেন। তারপর তার সঙ্গে আরও অনেকবার কথা হয়েছে। অমিত হাবিবের কর্মময়তাকে আমরা স্মরণ রাখব।
ড. এমএ মোমেন, অমিত হাবিব ছিলেন একজন অপূর্ব মানুষ। তার হাসিটা ছিল খুব সুন্দর। ছোট থেকে বড় সবার সঙ্গে খুব সুন্দর ব্যবহার করতেন। অমিত হাবিবের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা তিনি কোনো শত্রæ তৈরি করতে পারেননি।
সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, তিনি ছিলেন অসম্ভব বন্ধুবৎসল একজন মানুষ। মানুষকে তার কথা দিয়ে মাতিয়ে রাখতে পারতেন। যা প্রকাশ করতেন তারচে ভাবতেন বেশি।
মোস্তফা মামুন বলেন, অমিত হাবিব ছিলেন একজন আধুনিক সাংবাদিক। তার চিন্তার মধ্যে বৈচিত্র্য ছিল। চিত্রকলা, নাটক, ক্রিকেট নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলা যেত। এই সময়ের আধুনিক সাংবাদিক যারা আছেন তাদের অনেকেই অমিত হাবিবের সঙ্গে কাজ করেছেন। অমিত হাবিব তাদের অনেককেই তৈরি করেছেন। মানুষকে প্রভাবিত করার অসীম ক্ষমতা ছিল অমিত দা’র। তিনি শেষ পর্যন্ত হেরে যাননি, ভারসাম্য রক্ষা করে গেছেন।
তিনি বলেন, অমিতের প্রধান ব্যর্থতা তিনি শত্রæ তৈরি করতে পারেননি এবং কারো দালালি করেননি। এ দেশের মানুষের দালালি করে গেছে সারাজীবন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়