বাজারের ব্যাগে মিলল নবজাতকের লাশ

আগের সংবাদ

দেশীয় জ্বালানি উত্তোলনে গুরুত্ব : অনুসন্ধান ও উত্তোলনে মহাপরিকল্পনা > ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খনন করার উদ্যোগ পেট্রোবাংলার

পরের সংবাদ

মামলার এজাহারে দোষারোপ : বিএনপির ছোড়া ইট ও গুলিতেই শাওনের মৃত্যু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে যুবদলকর্মী শাওন প্রধান নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাত ৫ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার এজাহারে দোষারোপ করা হয়েছে বিএনপিকে। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ ও নেত্রকোনায় সংঘর্ষের ঘটনায়ও মামলা হয়েছে। আসামি যথাক্রমে ২ হাজার ৫০০ ও ৫০০। এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-
নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে যুবদল কর্মী শাওন প্রধান নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৫ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত দুটার দিকে শাওনের বড় ভাই মিলন প্রধান বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ছোড়া ইট ও আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে শাওন মারা যান। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে রাত সোয়া একটার দিকে কড়া পুলিশ পাহারায় নবীনগর কবরস্থানে শাওনের লাশ দাফন করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও

জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের উপস্থিতিতে নিহত শাওনের বড় ভাই মিলন প্রধান ও মামা মোতাহার হোসেনের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে পুলিশ ও জেলা ডিবি পুলিশের পাহারায় শাওনের লাশ বাড়িতে নেয়া হয়। লাশ হস্তান্তরের পৌনে এক ঘণ্টার মধ্যে তড়িঘড়ি করে সেটি দাফন করা হয়।
মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে বিএনপির ২ হাজার ৫০০ নেতাকর্মীর নামে মামলা করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে থানায় মামলাটি করেন মানিকগঞ্জ সদর থানার এস আই মো. আব্দুল লিটন।
এ মামলায় আসামি করা হয়েছে সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক, যুবদল নেতা সেলিম মোহাম্মদ, ছাত্রদল নেতা রুবেল মাহমুদ, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আজাদ হোসেন খান, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দীপু, সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, পৌর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাজিব হাসান খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আওলাদ হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম সজিব, সাধারণ সম্পাদক নুসরাতুল ইসলাম জ্যাকি, সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম সজীব, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাঈদ, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আরিফ হোসেন লিটন, আসাদুজ্জামান শিপু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, জেলা বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদ হারেজ, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল খালেক শুভ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভুইয়া হাবু, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম উজ্জ্বল ও শিহাব সুমন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন আহাম্মেদ কবীর, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব হাসান তপু, অলিদ, জেলা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক গোলাম রফি অপু, মাসুদুর রহমান মাসুদ (চরগড়পাড়া), জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক কসাই লিটন, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আসিফ ইকবাল রনি, জেলা বিএনপির সদস্য শরিফুল ইসলাম চাঁন, জেলা জাসাসের যুগ্ম আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম পালু, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা মাহফুজুর রহমান মাহফুজ, সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুর রহমান পণ্ডিত আনন্দ, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সত্যেনকান্ত পণ্ডিত ভজনসহ অজ্ঞাত ২৫০০ জন। প্রথম তিনজন ইতোমধ্যে পুলিশের হাতে আটক রয়েছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা জেলা শহরের সেওতা এলাকার শহীদ তজু সড়কে যান চলাচল বন্ধ রেখে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে রাস্তা বন্ধ না করতে অনুরোধ করলেও তারা এর কোনো তোয়াক্কা না করে রাস্তার ওপর অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে লিপ্ত হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে বাঁশি বাজিয়ে তাদের ওপর মৃদু লাঠিচার্জ করা হয়। এরপর আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সদর থানার ওসি আব্দুর রউফ সরকার ও কনস্টেবল শাহীনসহ ৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। তারা দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ ব্যাপক ক্ষতি করে। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে প্রথম তিনজনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান থানা ওসি আব্দুর রউফ সরকার।
নেত্রকোণা : বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনকে কেন্দ্র করে নেত্রকোণায় বৃহস্পতিবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ৫০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা যুবদলের সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন খানকে প্রধান আসামি করে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অন্য আসামিরা অজ্ঞাতনামা। গত বৃহস্পতিবার রাতে নেত্রকোনা মডেল থানার এসআই খন্দকার আল মামুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, সরকারি কাজে বাধাদান ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে এসআই খন্দকার আল মামুন মামলাটির বাদী হয়েছেন। মামলায় ৩৪ জনের নামসহ ৪০০ থেকে ৫০০ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ঘটনার পরপর যে ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে, তাদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের আজ দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হবে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়