ভূমির কুতুবকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আপিলে বাতিল

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সহিংসতা বাড়ছেই : দুই সপ্তাহে অন্তত ২০টি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে, দলগুলোকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

সারাদেশে খোলাবাজারে চাল ও আটা বিক্রি শুরু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এই প্রতিপাদ্যে সারাদেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং নি¤œআয়ের মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে খোলা বাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাজারে দাম সমন্বয় ও নি¤œ আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। গতকাল সকাল থেকেই ডিলারদের বিক্রয় কেন্দ্রগুলোয় ছিল মানুষের দীর্ঘ সারি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে খোলা বাজারে কমদামে চাল কিনতে পেরে খুশি সুবিধাভোগীরা।
ওএমএসের আওতায় নি¤œআয়ের মানুষেরা ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে আটা কিনতে পারছেন। এছাড়া টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীরাও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাল কিনতে পারবেন। একইসঙ্গে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেয়া হচ্ছে।
এদিকে, চাল বিতরণে কোনো অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। গতকাল রাজধানীর আজিমপুরে ছাপড়া মসজিদ প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করে তিনি বলেন, দেশে চালের কোনো সংকট এখন নেই।
বছরের শুরু থেকেই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা চলছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে সম্প্রতি জ¦ালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে বাজারে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা নি¤œআয়ের মানুষ। টিসিবির বাজার জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে বাজারে মোটা চালের দাম প্রতি কেজি ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। আর সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকায়। আটার কেজিও ৫০ টাকার ওপরে। মসুর ডাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে সরকার নি¤œআয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে এ কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ২২ দিন ওএমএসের ট্রাক বা দোকানে চাল বিক্রি করা হবে।
সারা দেশে মোট ২ হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্রের মধ্যে চাল বিতরণ করা হবে ১ হাজার ৯৬০টি কেন্দ্র থেকে; আটা বিতরণ করা হবে ৪০৩টি কেন্দ্র থেকে। আগে একজন ডিলার চালের বরাদ্দ যেখানে ১ লাখ টন পেতেন, এখন সেখানে ২ লাখ টন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর ও বিভাগীয় শহরে ৪০৩টি কেন্দ্রে দৈনিক ৫০০ কেজি আটার বরাদ্দ রয়েছে। সারাদেশে দিনে আটা বিতরণ করা হবে ২০১ দশমিক ৫০ টন।
ঢাকায় ৫০টি ‘ট্রাক সেল’ থাকবে। প্রতিটিতে বরাদ্দ সাড়ে ৩ লাখ টন করে। ঢাকার আরো ১৪৭টি দোকানে চাল বিক্রি করা হবে, সেগুলোয় দৈনিক বরাদ্দ ২ টন চাল। এ ছাড়া মহানগর ও শ্রমঘন এলাকায় ৯৯টি ট্রাকের প্রতিটিতে ২ লাখ টন চাল বরাদ্দ রেখে বিতরণ করা হবে। মোট ২ হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্রে দৈনিক বরাদ্দ ৪৮০১ টন খাদ্য।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং ওএমএসের আওতায় প্রতি মাসে ৩ লাখ টন চাল দেয়া হবে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ২০ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুত আছে। ভবিষ্যতে আরো গম এবং চাল আমদানি করা হবে।
দেশে পর্যাপ্ত চাল মজুত থাকার পরও কেন আমদানি করা হচ্ছে- জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর আবাদি জমির পরিমাণ কমছে, চাষিরা আম-আনারসসহ বিভিন্ন ফসলের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। এই কারণে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় চাল এবং গম আমদানি করা হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরু চাল আমদানি যেন অবাধ হয় সেজন্য সরকার ট্যাক্স কমিয়েছে। ওএমএসের মাধ্যমে জনপ্রতি ৫ কেজি চাল ও ২ কেজি আটা বিক্রি করা হচ্ছে।
বাজারে বিভিন্ন পর্যায়ে সিন্ডিকেটের অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, দেশের ৫০ লাখ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ১৫ টাকা কেজি ধরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল দেয়া হবে। টিসিবির মাধ্যমে ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল দেয়ার পাশাপাশি ৩০ টাকা কেজি দরে ১০ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন কার্ডধারীরা। আগামী সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এই তিন মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে চাল বিতরণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়