ভূমির কুতুবকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আপিলে বাতিল

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সহিংসতা বাড়ছেই : দুই সপ্তাহে অন্তত ২০টি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে, দলগুলোকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি তেল সরবরাহ : বাংলাদেশ-ভারত পাইপলাইনে কমিশনিং দুমাসে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোস্তাফিজুর রহমান বকুল, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) থেকে : অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে ভারতের লুমালিগড় রিফাইনারি থেকে পার্বতীপুর রেলহেড অয়েল ডিপোতে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন দিয়ে পরীক্ষামূলক সরবরাহ (কমিশনিং) শুরু হবে। দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন জ¦ালানি তেল সরবরাহের লক্ষ্যে ভারতের লুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে রেলহেড অয়েল ডিপোতে পাইপলাইন দিয়ে সরাসরি ডিজেল আমদানির উদ্যোগ নেয় সরকার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিলিগুড়ি মার্কেটিং রেল টার্মিনালে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে শিলিগুড়ি রেল টার্মিনাল পর্যন্ত ৬৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন রয়েছে। শিলিগুড়ি রেল টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্দা সীমান্ত দিয়ে নীলফামারী হয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) রেলহেড অয়েল ডিপো পর্যন্ত ১৩১.৬৭ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। ১০ ইঞ্চি ব্যাসের এ পাইপলাইন ভারতীয় অংশে ৫ কিমি এবং বাংলাদেশ অংশে ১২৬.৬৭ কিমি পড়েছে। বাংলাদেশ অংশে পঞ্চগড়ে ৮২ দশমিক ১৭ কিমি, নীলফামারীতে ৯ কিমি এবং দিনাজপুরে ৩৫ দশমিক ৫ কিমি রয়েছে। ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডসশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকার দেবে ৩০৩ কোটি রুপি এবং বাংলাদেশ দেবে ১৫০ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে ৩০ মাস (জানুয়ারি-২০২০ থেকে জুন/২০২২ পর্যন্ত)।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৮০-৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় ৩০ কিমি পরপর ৫টি এসভি স্টেশন (সেকশনালাইজিং ভালভ স্টেশন) নির্মাণসহ ১৩১.৬৭ কিমি পাইপ বসানো প্রায় শেষ। পাইপে নদীপথের অংশ সংযোগ, পার্বতীপুর রেলহেড অয়েল ডিপোর পাশে রিসিপ্ট টার্মিনাল ও প্রায় ১৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার ৬টি তেল ট্যাংকার নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজ চলমান রয়েছে।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডসশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. টিপু সুলতান ভোরের কাগজকে জানান, পাইপে নদীপথের অংশ সংযোগ কাজ শেষে অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে লুমালিগড় রিফাইনারি থেকে পার্বতীপুরের রেলহেড অয়েল ডিপোতে পাইপলাইন দিয়ে কমিশনিং (পরীক্ষামূলক সরবরাহ) শুরু করার আশা করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈশ্বিক নানা কারণে নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়া এবং কোভিড-১৯ এর কারণে কয়েক মাস কাজ বন্ধ থাকায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। যৌক্তিক কারণে ২০২৩ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত এক বছর সময় বাড়ানো হলেও ঠিকাদারের চুক্তিমূল্য বাড়ানো হয়নি।
এ পাইপলাইন নির্মিত হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারত থেকে পার্বতীপুর ডিপোতে জ¦ালানি তেল চলে আসবে। আর এখান থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে তা সরবরাহ করা হবে। এ জন্য আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে এ অঞ্চলের মানুষকে। বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে পার্বতীপুরে প্রতি ব্যারেল ডিজেল আনতে পরিবহন খরচ পড়ে ৮ ডলার। কিন্তু ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আনতে খরচ পড়বে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৫ ডলার। এতে করে একদিকে সময় লাগবে কম, অন্যদিকে পরিবহন ব্যয় ও সিস্টেম লস অনেক কমে যাবে। বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় বিদেশ থেকে জ¦ালানি তেল আমদানি করা হয় এতে করে তা পার্বতীপুরে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় এক মাস। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে বিপিসির তিন কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ধারণক্ষমতা হবে প্রায় ৪৩ হাজার টন। এখানে আপদকালীন মজুতও (বাফার স্টক) গড়ে তোলা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়