ভূমির কুতুবকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আপিলে বাতিল

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সহিংসতা বাড়ছেই : দুই সপ্তাহে অন্তত ২০টি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে, দলগুলোকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

চরম ব্যর্থ মদন খাদ্যগুদাম : ২৭৪৯ টন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংগ্রহ ৮০ টন ধান

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : চলতি বোরো মৌসুমের ধান সংগ্রহ অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে মদনের সরকারি খাদ্য গুদাম। ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৭৪৯ মেট্রিক টন। তবে নির্ধারিত সময় শেষ হলেও মাত্র ৮০ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা হয়। এ জন্য খাদ্যগুদামের কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শেষ হয় ৩১ আগস্ট। ২৮ এপ্রিল সারা দেশে এ অভিযান শুরু হয়। আর চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয় ৭ মে।
পৌরসভাসহ উপজেলার ৮ ইউনিয়নে খাদ্যগুদামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে প্রতি মণ ১ হাজার ৮০ টাকা দরে ধান সংগ্রহ করার কথা ছিল। ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৭৪৯ মেট্রিক টন। তবে নির্ধারিত সময় শেষ হলেও মাত্র ৮০ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করতে পেরেছেন বলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শহিদুল ইসলাম জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে মদন উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে মোটা জাতের ধান হিসেবে পরিচিত বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ১ হাজার ৩৫০ টাকা দরে। মৌসুমের শুরুতে বাজার দর ছিল প্রতি মণ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা।
অন্যদিকে একই সময়ে ১৪২ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৫ চালকলের মালিকের কাছ থেকে ১৪১ দশমি ৯৬০ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করেছে খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ। অথচ এসব চালকলের অধিকাংশ বন্ধ রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সরজমিনে গেলে জিতেশ চালকল, আফরোজ এন্ড সন্স, জাহাঙ্গীরপুর চালকল ও রওনক চালকল বন্ধ পাওয়া যায়। চালকল বন্ধ থাকার পরও কিভাবে খাদ্যগুদামে চাল দিয়েছেন জানতে চাইলে জিতেশ চালকলের মালিক জিতেশ বৈশ্যকে বলেন, আমার চালকল বন্ধ থাকলেও লাইসেন্স সচল রাখার জন্য অন্যত্র থেকে চাল কিনে খাদ্য গুদামে দিয়েছি।
স্থানীয় কৃষক শামছুল আলম, হাসান তালুকদার, আল্লাদ মিয়া, আব্দুল জব্বার বলেন, মৌসুমের শুরুতেই ধান ক্রয় শুরু না করায় এবং সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে অনেক হয়রানীর শিকার হতে হয়। আর্দ্রতার কথা বলে প্রতিমণে এক-দুই কেজি করে বেশি ধান নেয়া হয়। অনেক সময় ধান গুদামে নিয়ে আসলে তাদের চাহিদা পূরণ না হলে ফেরত নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এসব ঝামেলা নেই।
তিনি বলেন, বর্তমানে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে খোলাবাজারে মোটা চালের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকদের গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই।
মৌসুমের শুরুতে এ এলাকায় ধানের বাজার দর থাকে প্রতি মণ ৬ থেকে সাড়ে ৬শ টাকা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর উপজেলা মহাসচিব মোতাহার আলম চৌধুরী বলেন, এমনিতেই এ এলাকার কৃষকরা প্রাকৃতিক দূর্যোগে পড়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।
মৌসুমে তারা ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় না। জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন এ ব্যাপারে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিলে কৃষকরা ফসলের ন্যায্যমূল্য পেয়ে অনেক উপকৃত হবে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শহিদুল ইসলাম বলেন, ধান-চাল কেনার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে দাম বেশি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা এবার ধান শুকাতে না পারায় ধানের আর্দ্রতা বেশি। আর্দ্রতা ১৪ শতাংশের বেশি হলে সেই ধান গুদামে কেনা সম্ভব নয়। এ জন্য কৃষকরা গুদামে বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রæটি ছিল না।
বন্ধ চাল মিল থেকে চাল সংগ্রহের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের চালকলে যদি ভালো চাল না থাকে তাহলে বাইরে থেকে ভালো চাল সংগ্রহ করে দেয়। তবে চালকল বন্ধ থাকার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়