সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : সৈয়দপুর উপজেলায় লাপাত্তা হয়েছে সংখ্যালঘু তিন ভাইয়ের ১৫ সদস্যের পরিবার। নিখোঁজের পর ৯ দিন পার হলেও তাদের হদিস মেলেনি। উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ভুজারীপাড়ায় তিন ভাইয়ের পরিবারে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থার ঋণের চাপে নিরুদ্দেশ হয়েছেন তারা।
এদিকে উধাও হওয়া তিন পরিবারের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলছে। কোলাহল মুখর বাড়িঘরে বিরাজ করছে শুনসান নিরবতা। পুলিশ বলছে নিখোঁজ তিন ভাইয়ের পরিবারের সন্ধানে তৎপরতা চলছে। অন্যদিকে পরিবারগুলোর তালাবদ্ধ বাড়িঘরের নিরাপত্তায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে রাতে গ্রাম পুলিশ দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন জানান, তার ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই ভুজারীপাড়া। এ পাড়ায় তিন ভাই কমল চন্দ্র সূত্রধর, পরিমল চন্দ্র সূত্রধর ও নির্মল চন্দ্র সূত্রধরের বসবাস। বড় ভাই কমল চন্দ্র পেশায় দিনমজুর। অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে পরিমল চন্দ্রের ইউনিয়নের পোড়ারহাটে রয়েছে মিষ্টির দোকান এবং ছোট ভাই নির্মল চন্দ্রেরও হাটেই রয়েছে মেসার্স শুভ ট্রেডার্স নামে ধান, চাল, গম, ভুট্টার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, এলাকায় বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া নির্মল চন্দ্র সূত্রধর ঋণদাতা সংস্থা ব্র্যাক, আশা, গাক, পল্লি দারিদ্র্য বিমোচন, টিএমএসএস নামক এনজিওসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করেছেন। এতে তার ঋণের বোঝা ভারি হয়ে যায়। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে তার ঋণের পরিমাণ প্রায় তিন কোটি টাকা। ঋণদাতা সংস্থা ঋণের কিস্তির টাকা আদায়ে চাপ দিলে গত ২৩ আগস্ট রাতের কোনো এক সময় ওই তিন ভাই পরিবার নিয়ে লাপাত্তা হন।
এ নিয়ে কথা হয় ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা পূর্ব হাজিপাড়ার পাওনাদার ধান ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন শাহর সঙ্গে। তিনি জানান, ধান চাল ব্যবসায়ী নির্মল চন্দ্রের কাছে তিনি ধান বিক্রির ৩০ লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু তাদের সন্ধান না পাওয়ায় পাওনা টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এছাড়াও এলাকার কয়েকজন ধান ব্যবসায়ী তার কাছে ৫১ লাখ টাকা পাবেন বলে জানান তিনি।
উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের নীলফামারী সদরের কাজিরহাট শাখার ম্যানেজার আইয়ুব আলী জানান, ব্যবসায়ী নির্মল চন্দ্র সূত্রধর তার শাখা থেকে ব্যবসার জন্য ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। যার মাসিক কিস্তি ৩৮ হাজার টাকা। কিন্তু কিস্তি আদায় করতে গিয়ে তাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এবং বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
সৈয়দপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম তিন পরিবারের উধাও হওয়ার সত্যতা জানিয়ে বলেন, নিখোঁজ হওয়া তিন পরিবারের সদস্যদের সন্ধানে পুলিশি তৎপরতা চলছে। আশা করি শিগগিরই তাদের সন্ধান পাওয়া যাবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।